ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আওয়ামী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহম্মেদের ক্যাশিয়ার সৈয়দ আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মন মাত্র এক দশকে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। পুলিশের নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে, রাশিয়া থেকে গম ক্রয়, বিমান কেনাতেও ছিল তার হাত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে গত এক দশকে কয়েকশত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। গুলশান, উত্তরাতে আলিশান ফ্ল্যাট কেনার পাশাপাশি পাঁচ তারকা মানের দুটি হোটেলের শেয়ারও আছে তার। নিজ এলাকা ফতুল্লাতে গড়ে তুলেছেন আলিশান তিনটি ভবন। রয়েছে কয়েক বিঘা জমিও। তাছাড়া দুবাইতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন। যা দেখাশোনা করছেন সায়মনের ভাই আপন বড় ভাই সৈয়াদ আশরাফ উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম। আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মনর বড় ভাই সৈয়াদ আশরাফ উদ্দিন আহম্মেদ মাসুমের নামে বেনামে দেশ ও দেশের বাইরে রয়েছে অঢেল সম্পদ। সূত্রমতে, মাত্র এক দশক আগে ঢাকায় একটি মোটর সাইকেলের শো রুমে চাকরি নেন সৈয়দ আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মন। মাত্র ২০ হাজার টাকা বেতনে শুরু চাকরি জীবন। সেই সময় সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পিএস মনিরের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে চতুর সায়মনের। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে সম্পর্ক স্থায়ী করে ফেলেন সুদর্শন সায়মন। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মন্ত্রীর আস্থাভাজন হওয়ায় নির্বিঘেœ মন্ত্রণালয়ে আসা যাওয়া করতেন। পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তাদের বদলী বাণিজ্যের হাতেখড়ি তখনি শুরুা রাশিয়া থেকে গম ক্রয়ের কমিশন, বিমান কেনার কমশিন সহ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান ও বেনজিরের হয়ে বিভিন্ন সেক্টরের কমিশনের অর্থ এই সুচতুর সূদর্শন সৈয়দ আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মন সংগ্রহ করে নিজ হেফাজতে রেখে তার শ্যালক আসিফের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করতো বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া কক্সবাজারে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানের ৫ তারকা হোটেলের মালিকান সায়মনের নামেই রয়েছে। জানা যায়, ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান ও উত্তরাতে ফ্ল্যাট কেনার পাশাপাশি রেনেসা নামের একটি অভিজাত হোটেলের পার্টনারশিপও আছে তার। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে আত্মগোপনে চলে যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। আর দূর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সাবেক আইজিপি দেশ ছেড়েছেন আরো আগেই। এই দুই প্রভাবশালীর সম্পদ রক্ষায় এখন নয়া মিশনে নেমেছেন সায়মন। স্থানীয়রা জানান, এক যুগ আগে ফতুল্লার বটয়লা এলাকায় বাবার সিমেন্টের দোকানের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন সায়মন। কিন্তু ঢাকায় যাওয়ার পর তার পরিবর্তন হতে শুরু করে। এলাকায় দামি গাড়ি হাঁকিয়ে চলাফেরা করেন। তার গাড়ী সংগ্রহের তালিকায় রয়েছে কোটি টাকা মূল্যের মার্সিডিজ, রেঞ্জরোভারের মতো একাধিক দামী গাড়ী। অপর একটি সূত্র জানায়, আসাদুজ্জামান এবং বেনজিরের টাকা এবং সম্পদ সৈয়দ আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মন নিজের নামে রেখে এই সম্পদ রক্ষা করছেন। গুনশানে ফ্ল্যাট, বাড়ীসহ বিভিন্ন সম্পদ নিজের নামে রেখেছেন। মূলত এসব সম্পদের মূল মালিক হচ্ছেন আসাদুজ্জামান এবং বেনজির আহমেদ। গুলশান-১ এ রয়েছে একটি ফ্ল্যাট, উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে ২ টি বহুতল ভবন, দুবাই ও মালয়েশিয়াতে রিয়েল স্টেটের ব্যবসা, গুলশান ২ নাম্বারের সিক্স সিজন হোটেলের পাশ্বে ৫ হাজার স্কয়ার ফিটের রয়েছে ব্যক্তিগত অফিস। গুলশান ২ রোড নাম্বার ২ তে রয়েছে তার ব্যক্তিগত ফ্ল্যাট, স্যুট এ/১ ভ্যালেন্টাইন প্যালেসে রয়েছে ব্যক্তিগত একটি অফিস, রোড নাম্বার ৯৬, প্লট নাম্বার ৪/১ রয়েছে আরো একটি ব্যক্তিগত অফিস। বনানীর হাউস নং ৭৭-বি, রোড নাম্বার ১২ তেও রয়েছে তার আরো একটি অফিস। প্রতিটি অফিসেই রয়েছে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী, রয়েছে সুন্দরী নারীদের আনাগোনা। এছাড়া নামে-বেনামে ও বড় ভাই মাসুম সহ তার শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনের নামে দেশ এবং দেশের বাইরে রয়েছে অঢেল সম্পত্তি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বেনজিরের বিদেশে অর্থপাচারের অন্যতম হাতিয়ার ছিলো সৈয়দ আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মনের শ্যালক আসিফ। বর্তমানে উত্তরা ১১ নং সেক্টরে শ্যালক আসিফের সাথেই আত্মগোপনে থাকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানের কমিশন বানিজ্যের কোটি কোটি টাকা ও ডলার নিয়ে সৈয়দ আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মন আত্মগোপন করে আছে।
জানাযায়, ফতুল্লার লালপুর এলাকার সৈয়দ নরুদ্দিন খুশির দ্বিতীয় সন্তান সৈয়দ আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মনের সঙ্গে আসাদুজ্জামান কামাল এবং বেনজির আহমেদের সখ্যতা অনেক দিনের পুরনো। সম্পর্কের সূত্র ধরেই আসাদুজ্জামান, বেনজিরের বিভিন্ন সেক্টরের কমিশন বানিজ্য থেকে শুরু করে অবৈধ টাকা বিদেশে পাঠানোর দায়িত্ব পালন করতেন। বেনজিরের দেশত্যাগ এবং আসাদুজ্জামান কামালের গ্রেপ্তারের পর তাদের টাকা, ডলার, ইউরো নিয়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, যদিও তার বাবা নুরুদ্দিন খুশি নারায়নগঞ্জের ফতুল্লার জামায়াতের শ্রমিক সংগঠনের সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত। সূত্রটি জানায় সায়মনের বাবা জামায়েতের শ্রমিক সংগঠনের ফতুল্লা থানার সহ সভাপতি হিসেবপ অধিষ্ঠিত রয়েছেন। কিন্তু অর্থ পিপাসু ছেলের নৈতিক চরিত্রের কারনে অর্থ ও ক্ষমতার মোহে মুজিব কোর্ট পরতে ও দ্বিধাবোধ করেন নি। যে কোন পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে ও বাবা নুরুদ্দিন খুশি তার দুই পুত্র কে নিয়ে মুজিব কোর্ট পরে উপস্থিত হতেন। ঢাকার আভিজাত্য এলাকা গুলশান ও বনানীর অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে সরকারী রাষ্ট্রীয় অর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বেনজিরের অবৈধ বিদেশে পাচারকৃত অর্থের সকল তথ্য সায়মনপর নিকট রয়েছে। তাছাড়া জানা যায় যে, আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মনের শালির বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি আসাদুজ্জামান খান কামাল। তাছাড়া আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মনের পারিবারিক যেকোন অনুষ্ঠানে বেনজীর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি আসাদুজ্জামান উপস্থিত থাকতেন। সৈয়দ আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মনকে আইনের আওতায় আনা গেলে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এবং বেনজিরের অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া যাবে বিগত দেড় দশকে সৈয়দ আহসান উদ্দিন আহমেদ সায়মন এর ব্যাংক একাউন্ট হিসাব পর্যালোচনা করলেই সহজে বেরিয়ে আসবে কি পরিমান অর্থ্য লেনদেন হয়েছে ও বিদেশে অর্থ পাচার হয়েছে এবং অবৈধ উপায়ে কত কোটি টাকা উপর্জন করেছে তথ্য মতে সৈয়দ আহসান আহমেদ সায়মনের দৃশ্যমান নির্দিষ্ট কোন ব্যবসা বাস শিল্প প্রতিষ্ঠান নেই। অথচ রয়েছে গুলশান এবং বনানীতে তার দুইটি অফিস। তাই সহসাই স্থানীয়বাসীর মনে প্রশ্ন কি এমন আলাদিনের চেরাগ পেয়েছে যে রাতারাতি বনে যান কোটি কোটি টাকার মালিক।
হাবিবুর রহমান বাদল বাংলাদেশের স্বৈরশাসকের পতনের ৪০ দিন পার হলো। এ লেখা যখন লিখছি, তখন আওয়ামী শাসনের ৪০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটে। ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবিতে প্রথমে আন্দোলনে নামলেও পরবর্তিতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি, অনিয়ম আর লুটপাটের অবসান দাবি করে আন্দোলন বেগবান করে। এই আন্দোলনে এক সময় ছাত্রদের সাথে […]
হাবিবুর রহমান বাদল ঘুষ. দুর্নীতি, চাঁদাবাজি আর সন্ত্রাসের কারনে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও বিগত আওয়ামীলীগ শাসনামলে মুখ খুলতে পারেনি। জুলাই বিপ্লবের পর তাদের প্রত্যাশা ছিল সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর অন্তবর্তিকালিন সরকার গঠনের পরও চাঁদাবাজদের দৌরাত্বের অবসান হয়নি। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের ধাক্কায় কেবল চেহারা আর নামের বদল ঘটেছে, চাঁদাবাজি বন্ধ […]
হাবিবুর রহমান বাদল: সাংবাদিকতার নামে দলবাজি করলে শেষ পরিনতি কি হয় মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। মোজাম্মেল হক বাবুকে নিয়ে আলোচনা করার তেমন কিছু নেই। মাঠ পর্যায়ে কিংবা ডেক্সে সাংবাদিকতা করার অভিজ্ঞতা তার না থাকলেও একজন মেধাবী মানুষ হিসাবে তাকে বলা চলে। মোজাম্মেল বাবু কবে কোথায় সাংবাদিকতা করেছেন তা জানা না থাকলেও […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯