না’গঞ্জ বিএনপিতে ল্যাং মারার রাজনীতি

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে ল্যাং মারা ও মাইনাসের রাজনীতি শুরু হয়েছে। স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ বিদায় হওয়ার পর বিএনপির নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। কে কাকে মাইনাস করে পদ দখল করবে এ প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। আর এখন অনেক নতুন নেতা গজিয়েছে যারা বিগত ১৬ বছর রাজপথে নামেনি বা আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেয়নি। এখন নতুন নেতার কমতি নেই। বর্তমানে বাংলাদেশে অন্তর্বতিকালীন সরকার ক্ষমতায়। আর বিএনপির কিছু পাতি নেতা মনে করেন তারা ক্ষমতায় এসে গেছে। তাদের আচার আচরনে এমন ভাব প্রকাশ পাচ্ছে। বিএনপিতে হাইব্রিডরা ঢুকে দলের ১২টা বাজিয়ে দিচ্ছে। যা স্বৈারাচারী আওয়ামীলীগ নেতাকর্র্মীরা দখল আর লুটপাট করেছে তেমনই বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে সেই একই কায়দায় হাট, মাঠ, বিভিন্ন সেক্টর দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বার বার হুশিয়ারি দিলেও কে শুনে কার কথা। বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজির ভাগ, ঝুট সেক্টর দখল নিয়ে নিজেরাই নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনিরকে ঘিরে একটি পক্ষ ক্ষোভ প্রকাশ করে যাচ্ছে। তাদের অবিযোগ আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতাকর্মীদের পক্ষ নিয়ে মনিরের একের পর এক বক্তব্য এই ক্ষোভের কারণ। তারা বলেন, গত ২৬ আগষ্ট রূপগঞ্জে অবস্থিত গাজী টায়ার কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যান কাজী মনির। এসময় গাজী টায়াস ফ্যাক্টরি রক্ষার জন্য চেষ্টা করবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। যাছিল মানবিক একটি বক্তব্য। এসময় কাজী মনির বলেন, গাজী সাহেব অন্যায় করে থাকলে তার সাজা হবে, আইন তার বিচার করবে। কিন্তু তার কারখানা পুড়ে তো তাকে সাজা দেয়ার দরকার নেই। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই আমাদের পক্ষ থেকে এটা রক্ষার জন্য যা যা করা দরকার আমার করবো। এটা প্রায় কেন্দ্রীয় নেতাদের এমন বক্তব্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। এছাড়াও লুটপাটের ঘটনার জন্য চনপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দাদের দায়ী করেন কাজী মনির। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে চনপাড়ার মানুষ। মনিরের বিরুদ্ধে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল বের করেন স্থানীয়রা। এসময় তার কুশপুত্তলিকা দাহ্ করা হয়। এছাড়াও গত বুধবার রূপগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে কথা শুরু করেন কাজী মনির। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বলেন আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাকে পারিবারিক ভাবে ব্যাবহার করতে চেয়েছে। দলটির মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা জানান, দীর্ঘ ১৬ বছর আমরা অত্যাচার সহ্য করেছি। বাড়িতে থাকতে পারিনি। কাজী মনির সাহেব তো এত বছর বহাল তবিয়তে ছিলেন, ব্যাবসা করেছেন। রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। আজ আওয়ামী লীগ পতনের পর তিনি সক্রিয় হয়েছেন সেসকল পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসন করতে। রাজনীতিতে দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর ২০২২ সালে বিএনপির ব্যাপক উত্থান ঘটলে সুবিধাজনক অবস্থান নেন কাজী মনির। ঢাকার কিছু কর্মসূচিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেষ্টা করলেও নারায়ণগঞ্জ ও রূপগঞ্জের রাজনীতিতে ছিলে নিষ্ক্রিয়। দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীর সময় সময়ে গাজীর রোষানলে পড়লেও কাজী মনিরকে কোন দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাজনীতিতে কার্যত বিদায় জানান এই নেতা। তবে ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবার নিজেকে ব্যাবসায়ী নেতা হিসেবে মেলে ধরার চেষ্টা করছেন কাজী মনির। অপরদিকে হাইব্রিডরা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে অনেকেই এই পেতাত্মাদের সহযোগীতা করছে। মামলা দিবে না বলে টাকা নিচ্ছে শহরের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজী, দখলবাজী করে অবৈধ ভাবে অর্থ নিজেদের পকেটে ভরছে। আবার সেই অপকর্মের দোষ বিএনপির নেতাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এরা সবাই প্রকৃত বিএনপির নেতাদের কাছে পরিচিত। সব কিছুর হিসাব করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় নেতারা ঘুমিয়ে নেই অচিরেই আপনাদের অপরাধের শাস্তি পাবেন। এভাবেই চলছে বিএনপিতে ল্যাং মারার রাজনীতি।