আজ শনিবার | ৯ নভেম্বর ২০২৪ | ২৪ কার্তিক ১৪৩১ | ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ | রাত ১০:৪৩

যাদের খুনী বলি তাদের সাথে মামলায় আমার নাম-তাই কষ্ট লাগে: আইভী

ডান্ডিবার্তা | ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১১:২২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগকে বিভক্ত ও দুর্বল করার জন্য এ গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে। এ অবস্থায় সেলিনা হায়াৎ আইভী জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার কোনো মানসিকতা তার নেই। নেতৃত্ব দেওয়ার মতো দলে যোগ্য অনেক নেতা আছেন। এছাড়া মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তিনি। রাজনীতি করতে আর ইচ্ছে করে না তার। টানা সাড়ে ১৫ বছর শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার পরও স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেননি আওয়ামী লীগের এই নেত্রী। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশে দলটির সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার বিভাগের জনপ্রতিনিধিরা পালিয়ে গেলে আইভী যাননি। নারায়ণগঞ্জের বাইরে নিজেকে ভাবতে পারেন না তিনি। মেয়র পদ হারানোর পর সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে সাক্ষাতকারে কথা বলেন আইভী। তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী দল। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দলটি কোনো একটা ভাবে আছে। তারা তাদের অবস্থান নিয়ে আছে। নেতৃত্ব নেবো, এ ধরনের কোনো মানসিকতা আমার নেই। আমি আওয়ামী লীগের একজন ছোট কর্মী ছিলাম, বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি। দীর্ঘ ২০-২২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি ছোট কর্মী হিসেবে থেকেছি। বড় কিছু হওয়ার খায়েশ আমার নেই। নারায়ণগঞ্জের বাইরে নিজেকে কখনো চিন্তা করিনি। ভবিষ্যতেও করবো না। যেখানে আছি, সেখানেই থাকবো। জনসেবা করতে পারলে করবো, না পারলে না করবো, এমন কিছুর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। দলের দায়িত্ব নেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। সম্ভাবনা থাকলেও কোনো দিনও পসিবল নয়। এখনও আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা। দলটিতে অনেক নেতা আছেন, যাদের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো প্রচ- যোগ্যতা আছে। আমি এখানে কিছু নই। এ নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমি মানুষের সেবা করি। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে দলবাজি করিনি। এটা আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য। এটা থেকে যেহেতু বের হতে পারবো না, সেহেতু আমি নারায়ণগঞ্জের বাইরে কোনো কিছুর সঙ্গে যুক্ত হতে চাই না। এখন আমার বিরুদ্ধে নতুন কোনো ষড়যন্ত্র কি না সেটাও বুঝতে পারছি না। আমি সব সময় কোনো না কোনো ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েছি। আমার দল যখন ক্ষমতায় ছিল, তখনও আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিরোধী দলে গেলেও মামলা হয়, এখন তো আমার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। সব সময় একটা ষড়যন্ত্রের মাঝখান দিয়ে যাচ্ছি। কারণ আমি সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলি। আমি সব আমলেই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ও আমার বিরুদ্ধে কত অভিযোগ ছিল। নারায়ণগঞ্জ শহরে আমার বিরুদ্ধে যত মিছিল-মিটিং হয়েছে, অন্য কোনো দলের বিরুদ্ধেও এত কিছু হয়নি। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাফেরা করেছে অন্যদের সঙ্গে। যেটা আমার ক্ষেত্রে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আমি যেন আরেকটি বিরোধী দলের কেউ। স্বাচ্ছন্দ্যে কোনো কাজ ঠিকমতো করতে পারিনি। দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসাটা স্বাভাবিক। যারা অভিযোগ করে তাদের টার্গেট ছিল আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। ২০১১, ২০১৫ ও ২০২২ সালে আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে গেছে। এমন কোনো পত্রিকা নেই যেটা আমার বিরুদ্ধে লিখেনি। এই অভিযোগগুলো শামীম ওসমানই করেছে। ২০১৬-১৭ সালে দুদক আমার বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে, আমাকে ক্লিনচিট দিয়েছে। শামীম ওসমানের নেতৃত্বে আমার বিরুদ্ধে অনেক মিছিল-মিটিং হয়েছে। ২০১৬ সালে শহরে আমার কুশপুতুলে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে নতুন কোনো অভিযোগ এলে সেগুলো তদন্ত করা হোক। কাজ করেছি, হয়তো ভুল-ত্রুটি হতে পারে। কিন্তু এক টাকার দুর্নীতির সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা কেউ দেখাতে পারবে না। আমি অনেক কাজ করেছি। কাজে ভুল-ত্রুটি হতে পারে। রাস্তাঘাট ভেঙেছি। সিটি করপোরেশনের প্রায় ৯৫ শতাংশ জায়গা উদ্ধার করেছি। এগুলো ভবিষ্যতে অথবা আগে কেউ করতে পারবে বা পেরেছে? আমার এখানে পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানোর কোনো সুযোগ নেই। এখন ই-টেন্ডার হয়। যাকে খুশি তাকে কাজ দেওয়া যায় না। শামীম ওসমান বলতেন আমি ঘুরে ফিরে চার-পাঁচজনকেই কাজ দেই। সিটি করপোরেশনে খোঁজ নিলে দেখতে পারবেন এখানে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার ঠিকাদাররা কাজ করেছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সবাই এখানে নির্দ্বিধায় নির্ভয়ে কাজ করেছেন। আমি পৌর মেয়র থাকার সময় থেকেই কোনো কিছুতে কম্প্রোমাইজ করতাম না। কারণ আমার শত্রু অনেক বড়। শামীম ওসমান যেভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আমার সঙ্গে শত্রুতা করেছে, একভাবে আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার কাজ সঠিকভাবে করার জন্য শামীম ওসমান আমাকে ব্যস্ত রেখেছে। তবে তার অনেক ভালো গুণ ছিল, সেগুলো যদি ভালো কাজে লাগাতেন তাহলে খুব ভালো হতো। তিনি নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষকে আপন করতে পারেননি। শামীম ওসমানকে ঘিরে কিছু লোকজন ছিল। তারা শামীম ওসমানকে কেন্দ্র করেই শক্তির মহড়া করেছেন। উনার ভালো গুণাবলি ছিল, তিনি পজিটিভলি কাজ লাগাননি। ১/১১ পর তার শোধরানোর প্রয়োজন ছিল। আমি জানি না কেন তার পরিবর্তন হয়নি। তাই এই শহরের মানুষ তার সাম্রাজ্য গুঁড়িয়ে দিয়েছে। মানুষ জেগে উঠেছে। আমি সাহসের সঙ্গে কথা বলেছি। শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ শহরে যে ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিলেন সেটা আমি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মানুষ আমার সঙ্গে ছিল। আমি আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কেউ না। আমাকে মেয়র হিসেবে দুবার মনোনয়ন দিয়েছে। আমি মানুষের সমর্থন নিয়ে কাজ করেছি। সিটি করপোরেশনে দলবাজি করিনি। ২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ড থেকে এসে পৌরসভা ভোট করেছি। আমি বাবার (স্বাধীনতার পর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মেয়র প্রয়াত আলী আহাম্মদ চুনকা) পদাঙ্ক অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি। আলী আহম্মদ চুনকা সর্বদলীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আমি সবার সঙ্গে মিলে কাজ করার চেষ্টা করেছি। অন্যরা পালিয়েছেন, আমি আছি। কারণ আমি বাবার মতাদর্শ ধারণ করার চেষ্টা করেছি। এজন্য আমার প্রতি সাধারণ মানুষের হিংসাত্মক মনোভাব নেই। আমি সব সময় খুনের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এই অপরাজনীতির কারণে আমার ছোট ভাই উজ্জ্বল যার কেবল পদবি আছে। সে কোনো দিন মানুষের ক্ষতি করেনি। তার বিরুদ্ধেও তিনটি মামলা হয়েছে। যাদের আমি খুনি বলে ডাকি, তাদের সঙ্গে একই কাতারে যখন আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়; তখন কষ্ট লাগে। মেয়র ভোট নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না। জনগণ যেটা সিদ্ধান্ত নেবে; সেটাই মাথা পেতে নেব।

 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৪৮
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:২১
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৫৩
  • ১১:৪৫
  • ১৫:৪১
  • ১৭:২১
  • ১৮:৩৬
  • ৬:০৬
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা