আজ শুক্রবার | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ | রাত ৪:১৩

না’গঞ্জ রাইফেল ক্লাবের লুণ্ঠিত ৮৩ অস্ত্রের ৬৮টি এখনো উদ্ধার হয়নি

ডান্ডিবার্তা | ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
চল্লিশ দিনেও উদ্ধার হয়নি নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাব থেকে লুণ্ঠিত ৮৩ অস্ত্রের মধ্যে ৬৮টি অস্ত্র। একইসঙ্গে হদিস নেই সাড়ে ১০ হাজার গুলির। যদিও লুটপাটের এক মাস পর অজ্ঞাত আড়াই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে ক্লাবের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ঠা আগস্ট শহরের চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে হামলা, ভাঙচুর ও ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়। এ সময় ক্লাবের ভল্ট ভেঙে এর ভেতরে থাকা ৮৩টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১০ হাজার ৫৯৪টি বিভিন্ন ধরনের গুলি লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ক্লাবটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঘটনার প্রায় এক মাস পর অজ্ঞাত পরিচয় ২ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করে গত ৭ই সেপ্টেম্বর ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন ক্লাবের শুটিং সম্পাদক কাজী ইমরুল কায়েস। তবে মামলাটির তদন্তে কোনো গতি দেখা যায়নি। এদিকে রাইফেল ক্লাবের ভল্ট ভেঙে অস্ত্র এবং গুলি লুট হওয়ার পর পরিত্যক্ত অবস্থায় মাত্র ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার সম্ভব হলেও কোনো গুলি উদ্ধার হয়নি। তবে সরকারের ঘোষণার পর নারায়ণগঞ্জ, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আরও ৭ থেকে ৮টি অস্ত্র জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী ইমরুল কায়েস। পদাধিকার বলে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের সভাপতি নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, সহ-সভাপতি পুলিশ সুপার এবং দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু খালেদ হায়দার খান কাজল। কিন্তু গত ১৫ বছরে একবার শুধু বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগ দিতেন জেলা প্রশাসক। ফলে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবটিকে সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান ও তার অনুসারীরা বেশি ব্যবহার করতেন। শামীম ওসমান এখান থেকে তার রাজনৈতিক কর্মকা-ও পরিচালনার পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মিটিং, প্রেস কনফারেন্স করতেন। এতে করে ক্লাবের নব্বইভাগ সদস্য ক্লাবে তেমন একটা যাতায়াত করতেন না। সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২৭শে জুলাই ও ৩০ জুলাই শামীম ওসমান তার অনুসারী দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মিটিং করেন। এর আগে ১৯শে জুলাই শামীম ওসমান তার ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়নের নেতৃত্বে তাদের অনুসারীরা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে প্রতিহত করতে মাঠে নামেন। ওইদিনই খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, ছাত্র-জনতাকে প্রতিহত করতে যেসব অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো রাইফেল ক্লাব থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। এরপর থেকেই রাইফেল ক্লাবের ওপর নজর পড়ে একটি পক্ষের। প্রথমে রাইফেল ক্লাব বাইরে থেকে ঢিল ছুড়ে এর কাঁচ ভাঙচুর করা হয়। কিন্তু গত ৪ঠা আগস্ট হামলাকারীরা রাইফেল ক্লাবে স্টিলের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর শেষে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই সময়ই ভল্ট ভেঙে লুট করে নেয়া হয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাইফেল ক্লাবের একাধিক সদস্য জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মূলত ১৯শে জুলাই রাইফেল ক্লাবের ভল্টে থাকা অস্ত্র তৎকালীন সরকার দলীয়দের হাতে তুলে দেয়া হয়। সেগুলো আর ফেরত নেয়া হয়নি। রাইফেল ক্লাব পরিচালনার সঙ্গে জড়িত একটি গ্রুপ চাইছিল যেন ক্লাবে হামলা হয় এবং ক্লাবের ভল্ট ভেঙে ফেলা হয়। এতে তারা প্রচার করতে পারবে যে অস্ত্র ও গুলি লুট হয়ে গেছে। ফলে ক্লাবের অস্ত্রগুলো গায়েব করে দেয়া সহজ হবে। বাস্তবে হয়েছেও তাই। ওই সূত্রটি আরও বলেন, গত ৪ ও ৫ আগস্ট দিনব্যাপী যারা রাইফেল ক্লাবে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে তারা কেউ ছাত্র নয়। তাদের বেশির ভাগই ছিল নগরের চানমারি ও এর আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। তারা এক আওয়ামী লীগ নেতার অনুসারী হিসেবেও পরিচিত। ঘটনার সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্লাব লুটপাটের সেই ঘটনার ভিডিও ও স্থির চিত্র ধারণ করে রেখেছে। ভবিষ্যতে সেগুলো প্রকাশ পাবে। তখনই পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, ক্লাবে হামলা ও লুটপাটের সঙ্গে কারা জড়িত ছিল। মামলার বাদী ইমরুল কায়েস জানান, ক্লাবের ভল্ট ভেঙে অস্ত্র লুটের পর অন্তর্র্বতীকালীন সরকার দায়িত্ব নিলে তারা থানাসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে লুট করা অস্ত্র ফেরত দিতে সময় বেঁধে দেন। ওই সময় নগরের নবীগঞ্জ খেয়াঘাটের পাশের ঝোঁপ থেকে পয়েন্ট ১৭৭ বোরের ২টি এয়ার পিস্তল এবং পয়েন্ট ২২ বোরের ২টি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এর কিছুদিন পর খানপুর এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে এলাকার কচুখেত থেকে পয়েন্ট ১৭৭ বোরের ৩টি এয়ার রাইফেল এবং পয়েন্ট ২২ বোরের একটি রাইফেল উদ্ধার করে সেনাবাহিনী এবং র?্যাবের হেফাজতে দিয়ে দেয়। পরবর্তীকালে নারায়ণগঞ্জ, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লুট হওয়া অস্ত্র জমা দিলে সেখানে রাইফেল ক্লাব থেকে লুট হওয়া আরও ৭-৮টি অস্ত্র দেখা যায়। তবে কোনো গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে তার জানা নেই। অর্থাৎ রাইফেল ক্লাব থেকে লুট হওয়া ৮৩টি অস্ত্রের মধ্যে মাত্র ১৫-১৬টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে ইমরুল জানান। এদিকে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে তদন্ত কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার এসআই কাজী আবদুর রহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শনিবার আমি মামলাটি হাতে পয়েছি। দ্রুত তদন্ত কাজ শুরু করবো।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:২৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৮:০৬
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৩২
  • ১১:৫৭
  • ১৬:১৯
  • ১৮:০৬
  • ১৯:২০
  • ৫:৪৪
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024