আজ শুক্রবার | ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | ৩০ কার্তিক ১৪৩১ | ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ | রাত ৪:৩৩

ভয়ানক সন্ত্রাসীদের আতংকে রূপগঞ্জবাসী

ডান্ডিবার্তা | ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
রুবেল, আকবর বাদশা, কুত্তা মাসুদ, কুত্তা শ্রাবণ, রকি খান, আতিকুর ও সেকান্দার। ওরা ৭ জন ভয়ংকর দুর্ধষ সন্ত্রাসী, অস্ত্রবাজ। দিনকে দিন হয়ে উঠছে অপ্রতিরোধ্য। এদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ বা নির্যাতিত হয়ে মুখ খুললে বা আইনি সাহায্য নিলে ওই ভুক্তভোগিকে আরও বেশি নির্যাতনের শিকার হতে হয়। হত্যা, চাঁদাবাজী, ছিনতাই, ইভটিজিং, জমি দখল, মারামারি, লুটতরাজসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রয়েছে কমপক্ষে ডজন খানেক মামলা। হত্যা করে উল্লাস করারও ইতিহাস রয়েছে তাদের। এমনকি আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর হামলা করেতও পিছপা হয়নি তারা। এসব মামলায় তারা একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করলেও জামিনে বেরিয়ে এসে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জানাগেছে, তারাবো, তারাবো বিশ^রোড, সুলতানা কামাল সেতু, শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়, যাত্রামুড়া, হাটিপাড়া, বরাবো, দিঘী বরাবো এর আশপাশ এলাকায় রয়েছে এদের অবাধ বিচরন। বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক কারণে অপরাধ করে পার পেয়ে গেলেও সরকার পতনের পরও দমেনি তারা, দিন দিন আরও বেপরোয়া উঠছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও অবাদ বিচরণে এলাকায় বাড়ছে আতংক। তাদের দেখার যেনো কেউই নেই। একটি সূত্র জানায়, আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনীতিকদের সাথে সখ্যতা তৈরী করে নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছে অপরাধ কর্মকান্ড। ২০১২ সালে টাটকি এলাকায় ফয়সাল হত্যাকান্ড ঘটনোর পর অপরাধ সাম্রাজ্যে তাদের আর পিছপা হতে হয়নি। এরপর থেকে দল ভারিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড নির্বিঘেœ চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তুলে বাহিনী। বিশেষ করে কুত্তা শ্রাবণের কিশোর গ্যাং বাহিনীর দৌরাত্মে অতিষ্ঠ জনজীবন। অধিকাংশ সময়েই তারা একে অপরের পরিপূরক হয়ে কাজ করে থাকে। স্থানীয় সূত্র ও বিভিন্ন অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, তারাবো দক্ষিন পাড়া এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল ভুইয়া (৩৫) দুর্ধষ অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী। এমন কোনো অপরাধ কর্মকান্ড নেই যে তার দ্বারা সংগঠিত না হয়েছে। র‌্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছে একাধিক বার। অস্ত্র ও মাদক কেনাবেচা, ভুমিদস্যু, চাদাঁবাজি লুটতরাজে পারদর্শী সে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক আইনের মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে রয়েছে ১৬টি মামলা। রুবেল ভুইয়া তারাবোর টাটকি এলাকায় ২০১২ সালে সংগঠিত আলোচিক ফয়সাল হত্যা মামলার প্রধান আসামি। তার রয়েছে একটি বিশাল মাদকের সিন্ডিকেট এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- তারাব সুলতান মাদানী মসজিদ এলকায় রুবেলের শালা নুর আলমের মাদকের স্পট, নিশান জুট মিলের সামনের মাদকের স্পট, তারাবো হ্যান্ডকাফ মনিরের বাড়ির সামনে জায়েদ আলী এরশাদের মাদকের স্পট। রুবেল ভুইয়ার ভাই মাসুদ (৫১) এর অত্যাচার, নির্যাতনে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তার এসব কর্মকান্ডের জন্য স্থানীয়রা তাকে কুত্তা মাসুদ খেতাব দেয় এবং এই পরিচয়ে সে পরিচিত হয়ে উঠে। তার রয়েছে একটি বিশাল বাহিনী। এই বাহিনীর মাধ্যমে সে অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে গড়ে তুলেছে অপরাধের বিশাল সাম্রাজ্য। তার বিরুদ্ধে বিষ্ফোরক আইনের মামলাসহ চাঁদাবাজি মারামারি, লুটতরাজ ও ছিনতাই, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে প্রায় দুই ডজন মামলা দায়ের হয়েছে। সে শবনমের সামনে থেকে ট্রাক প্রতি ১শ’ টাকা চাঁদা আদায় করে। এদিকে পিতার অপরাধ সাম্রাজ্য ধরে রাখতে কুত্তা মাসুদের ছেলে শ্রাবন (২১) গড়ে তুলে একটি কিশোর গ্যাং। সে পিতার যোগ্য উত্তরসুরি হয়ে নির্বিঘেœ অপরাধ সাম্্রাজ্যের ডন হয়ে উঠায় তাকেও স্থানীয়রা কুত্তা শ্রাবন খেতাব দেয়। শ্রাবন নাম প্রায় বিলুপ্ত, কুত্তা শ্রাবন বললে সহজেই তাকে চিনতে পারে এলাকাবাসী। শ্রাবন ও তার কিশোর গ্যাংয়ের বাহিনীরা সন্ধ্যার পর শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় নিশান মিলে ওয়াকওয়ে ও সুলতানা কামাল সেতুতে ছিনতাই ডাকাতিতে লিপ্ত হয়। তার কিশোরগ্যাং এর সাথে চনপাড়ার কিছু ছেলে রয়েছে। তারা বিশেষ কোনো অপারেশন চালালে তারা যোগ দেয়। তার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজি ছিনতাই চুরিসহ মারামারির প্রায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে। আকবর বাদশা (৩৪) একই এলাকার বারেক ভুইয়ার ছেলে। নৌ পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে সে আলোচনায় আসে। তার বিরুদ্ধে ফয়সাল হত্যাসহ চাঁদাবাজি মারামারি, লুটতরাজ ও ভুমিদস্যুতার একাধিক অভিযোগে ডজনখানেক মামলা রয়েছে জানাগেলেও অনুসন্ধানে হত্যা, চাঁদাবাজি ও মারামারির ঘটনায় ৮টি মামলার সন্ধান পাওয়া গেছে। সে হাটিপাড়া এলাকায় উজ্জল, সাগর ও আরিফকে দিয়ে মাদকের স্পট চালায়। রূপগঞ্জ যাত্রামুড়া এলাকার নেছার খানের ছেলে মো. রকি খান (৩৮) সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজ হিসেবে পরিচিত। এ নামটি যেনো ওই এলাকার আতংক। সে হাসতে হাসতে যেকোনো অপরাধ কর্মকান্ড সংগঠিত করে থাকে। ফয়সাল হত্যা মামলার অন্যতম আসামিও সে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে হত্যা, দুটি অস্ত্র মামলাসহ চাঁদাবাজী, ছিনতাই, জমি দখল, মারামারি, লুটতরাজসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৪টি মামলার সন্ধান পাওয়া গেছে। দিঘী বরাবো এলাকায় বাবু, জুম্মন ও কয়েকজনকে দিয়ে মাদকের স্পট চালায়। সে মাঝে মাঝে বিভিন্ন ধরণের অবৈধ অস্ত্র প্রকাশ্যে সাথে নিয়ে মহড়া দিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে থাকে। তারাবো হাটিপাড়ার ফিরোজ ড্রাইভারের ছেলে আতিকুর (৩৪)। তার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজী, ছিনতাই, জমি দখল, মারামারি, লুটতরাজসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৪টি মামলার সন্ধান পাওয়া গেছে। একই এলাকার মোজার ছেলে সেকান্দার (৩৬)। সেও ফয়সাল হত্যা মামলা আসামি। হত্যা, বিষ্ফোরক মামলাসহ তার বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, চুরি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে ১০টি মামলার সন্ধান পাওযা গেছে। তবে অপর একটি সূত্র জানায় তার বিরুদ্ধে আরও ৪/৫টি মামলা রয়েছে। এদিকে আতিকুর ও সেকন্দারের নেতৃত্বে সাইফিন কারখানার সামনের সড়কে জ্যাম পড়লে পন্য বোঝাইকৃত ট্রাক থেকে ডাকাতি ছিনতাই করে থাকে তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী। স্থানীয়রা জানান, ওই সাত জনের অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকান্ডে এলাকাটি সন্ত্রাসী ও অপরাধের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। এদের অবাধ বিচরণ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে প্রত্যেককে অজানা এক ভয়ের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করতে হয়। গার্মেন্টস শ্রমিকরা ঠিক মতন বেতন নিয়ে বাসায় ফিরতে পারে না। একসাথে ছেলে-মেয়ে এমনকি ভাই-বোনও একসাথে রাস্তা দিয়ে চলতে পারে না। এদের পালিত সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংয়ের দৃস্টি গোচর হলে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে মারধর করে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সাথে থাকা অর্থকড়ি, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী। নির্জনে নিয়ে খারাপ অপবাদ দিয়ে টাকা দাবী করা হয়। মাদকের টাকা জোগাড় করতে এরা অনেক নিরীহ মানুষের পকেটে মাদক দিয়ে নির্যাতন করে এবং পরবর্তীতে গ্রামের আতœীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশ যোগে টাকা নিয়ে আসে। এলাকায় জমি বেচাকেনা, কলকারখানা গড়ে তুলতে হলে তাদেরকে খাওয়াতে হয় মিষ্টি, দিতে হয় বখড়া। ছিনতাই, মারামারি, চুরি ডাকাতি যেন নিত্যকর্ম তাদের। নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় একধিক বাসিন্দা জানান, ৫ আগষ্ট গণঅভুথ্যানে হাসিনা সরকারের পতন ও আইনশৃংখলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় ওই সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। বিভিন্ন কারখানাসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটতরাজ করেছে। ভুক্তভোগীরা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ভয়ে কারো কাছে কোনো অভিযোগও করেননি। এরা চিহ্নিত দাগি অপরাধি, অপ্রতিরোধ্য সন্ত্রাসী। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে থানায় অনেক মামলা রয়েছে। এদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। এদেরকে রুখতে না পারলে হত্যা, খুনসহ যে কোন বড় ধরণের নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে। সুষ্ঠ তদন্ত করলে এদের সব অপকর্মের সত্যতা মিলবে। তাই সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃংখলাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে স্থানীয়দের দাবি তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সব্বোর্চ শাস্তির নিশ্চিত করে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হউক যাতে আর কেউ কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার সাহস না পায়।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৫১
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৮
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৫৬
  • ১১:৪৬
  • ১৫:৩৯
  • ১৭:১৮
  • ১৮:৩৪
  • ৬:১০
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা