আজ বুধবার | ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ | ১ মাঘ ১৪৩১ | ১৪ রজব ১৪৪৬ | রাত ১১:০৭

মাসদাইর পৌর মহাশ্মশান কমিটি থেকে আ’লীগের দোসরদের অপসারণ দাবী!

ডান্ডিবার্তা | ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৯:১২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
“নাটের গুরু অসিত-শান্তি ঘোষালের নিয়ন্ত্রনে মাসদাইর পৌর মহাশ্মশান” শীর্ষক সংবাদটি গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় গনমাধ্যমে প্রকাশ করা হওয়ার সনাতন সম্প্রদায়ের সাধারন মানুষগুলো ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অত্র প্রতিবেদককে। তারা মুঠোফোনে জানান,এটা একটি সময়োপযোগী সংবাদ। সংবাদে উল্লেখিত বিষয়গুলো আরো আগেই সকলের কাছে উপস্থাপনের প্রয়োজন ছিলো। তারা ক্ষোভের সাথে বলেন, পুরোহিত শান্তি ঘোষাল, এনসিসি ১৫নং ওয়ার্ডের সদ্য অপসারনকৃত কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ^াস, শ্মশানের সাবেক সভাপতি ও সেক্রেটারী দাবীদার সুজন সাহা ও শংকর সাহা, শান্তি ঘোষালের ভাতিজা সবুজগংদের কাছেই জিম্মি হয়ে পড়েছে পৌর শ্মশানের যাবতীয় কার্যক্রম। তাদেরকে টাকা দিলে কাজ হয় নতুবা নয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রনাধীন মাসদাইর পৌর মহাশ্মশান। সনাতন ধর্মের মানুষগুলোর দাবী মৃত্যুর তাদের শেষকৃর্তানুষ্ঠানগুলো সম্পন্ন হয় এখানে। মাসদাইরে অবস্থিত এ মহাশ্মশানে যারা দ্বায়িত্বে রয়েছেন তারা প্রতিজন যেন একেকটি প্রভাবশালী ব্যক্তি। সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের আস্থাভাজনদের একটা আখড়া ছিলো এটি। এখানে এখনও বহাল রয়েছে সাংসদ শামীম ওসমানের বন্ধু অ্যাড.খোকন সাহার ধর্ম ছেলে শান্তি ঘোষাল,ধর্মভাই সুজন সাহা, নগরীর ডাইলপট্রি এলাকার সংকর সাহা, শান্তি ঘোষালের ভাতিজা সবুজ, টানবাজার এলাকার সুব্রত কুমার সাহা, শামীম ওসমানের আস্থাভাজন রনজিত মন্ডল, পুলিশ লাইন এলাকার কিশোর বাবু এবং ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ^াস। এদের মধ্যে শান্তি ঘোষাল (খোকন সাহার ধর্ম ছেলে) সিটি কর্পোরেশন অনুমোদিত শ্মশানের পুরোহিত। তার কাজ হলো লাশ আসলে পিন্ডদান করা,লাশের মুখে অগ্নিমন্ত্র পাঠ। তিনি সেটা না করে তা তার ভাতিজা সবুজকে দিয়ে সেগুলো করিয়ে থাকেন। অথচ সবুজ সেখানে সারাদিন গাজাখোরদের সাথে শ্মশানের বিভিন্ন চিপায় আড্ডাতে মশগুল থাকেন এবং গাজা খেয়ে টালমাতাল থাকেন। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় লাশ নিয়ে আগতদের সাথে জুলুম করা হয়। শ্মশানের সৎকারের জন্য আসা একটি লাশকে একটা চিতাপিন্ডতে দক্ষিনা হিসেবে কেউ ১শত আবার কেউবা ২শ টাকা দেয়। কিন্তু উক্ত কর্তাবাবুদের নির্দেশক্রমে সবুজ সেটা না করে দাবীকৃত ২ হাজার টাকার বিনিময়ে চিতাপিন্ড করে থাকেন। লাশের সাথে আসা মানুষগুলোর বসার জন্য চেয়ার চাইলে সেটার জন্য ২০০ টাকা ভাড়া দিতে হয় সবুজকে। অথচ ভক্তদের দেয়া উপহার চেয়ার টেবিলগুলো শুধুমাত্র লাশের সাথে আসা মানুষের ব্যবহারের জন্য। শ্মশানের ভেতরে মায়ের জন্য ভোগ বা প্রসাদ দেয় অনেক অর্থশালী ব্যক্তি। কিন্তু সেই প্রসাদের বিভিন্ন সামগ্রী চাইল-ডালসহ বিভিন্ন জিনিসগুলো লাশ সৎকারে আসা মানুষের কাছে খিচুরী তৈরী করে টাকার বিনিময়ে তা সরিয়ে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অথচ মায়ের প্রসাদের যে পরিমান টাকা ও জিনিসপত্র শ্মশানের দেয়া হয় সে সর্ম্পকে শান্তি ঘোষালগং ছাড়া কেউ জানেনা কিংবা কখনও জানতেও দেয়না। এছাড়াও একটি লাশের সাথে আসা ৫০/৬০ জনের তালিকা নিয়ে খিচুরী তৈরী করা হলেও সেটা ১৫/২০ কে দেয়ার পর তার সরিয়ে রাখা হয়। এবং পরবর্তীতে কোন লাশ আসলে সেই খিচুরীগুলোকে গরম করে তাদের মাঝে বিতরন করা হয় এবং খিচুরী তৈরীর জন্য প্রায় ৫-৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। এছাড়াও একটি লাশ সৎকারের প্রায় ৪ মন লাকড়ির প্রয়োজন হলেও সর্বসাকুল্যে তার খরচ বাবদ হাতিয়ে নিচ্ছে ১৫/১৮ হাজার টাকা। অথচ পুরো লাশটি সৎকারের জন্য সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। আর এ বর্ধিত টাকাগুলো উপরোক্ত কর্তারা সম্মিলিতভাবে ভাগাভাগি করে নিয়ে থাকেন। তাদের এরুপ অনৈতিক কর্মকান্ডের ফলে সনাতন ধর্মের সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভের দানা দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্মশানের আসা ভক্তরা জানান, পৌর শ্মশানের সাবেক সভাপতি টানবাজারের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন সাহা এবং সাধারন সম্পাদক নয়ামাটির এলাকার সুতা ব্যবসায়ী দিলীপ সাহা যখন দ্বায়িত্বে ছিলেন তখন কিন্তু শ্মশানের ভেতরে এত অনিয়ম ও বিশৃংখলা ছিলনা। তাদের উভয়ের প্রয়ানের পরই শ্মশানের সাবেক সভাপতি ও সেক্রেটারী দাবীদার সুজন সাহা ও শংকর সাহাগং শ্মশানের ভেতরে কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ^াস ও পুরোহিত শান্তি ঘোষালকে নিয়ে সেখানে সেবার পরিবর্তে ব্যবসা হিসেবে রুপান্তরিত করে তোলেন। এনসিসির সাবেক মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভীকে ভুলভাল বুঝিয়ে নিজেদের মত শ্মশান পরিচালনা করেন। এছাড়াও শান্তি ঘোষাল ও সুজন সাহা’রা নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বিশিষ্ট আইনজীবি অ্যাড.খোকন সাহার সাথে সর্ম্পক গড়ে তাকে সমালোচনায় ফেলতেই সকলের কাছে নিজেদেরকে তার কাছের লোক হিসেবে প্রচার করতো। অথচ বিজ্ঞ এ আইনজীবিও জানেনা যে,শ্মশানের ভেতরে লাশ সৎকার নিয়ে ফসিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাখধারন সনাতন ধর্মের মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো তারা। শ্মশানের লাশ সৎকারের সাথে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ভুক্তভোগী জানান, শ্মশানের ভেতরটা যেন এখন অনেকটাই ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন শান্তি ঘোষাল ও অসিত বরনরা। তারা বলেন,প্রতিদিন গড়ে ৫টি লাশ সৎকার করাতে এখানে আসেন সনাতন ধর্মের লোকজন। ১টি লাশ সৎকার বাবদ লাকড়ি-খিচুরীসহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ২০ হাজার টাকা নেন শান্তি ঘোষালগং। অথচ লাকড়ি ও খিচুরীর জন্য সবমিলিয়ে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বাকী থাকে প্রায় ১২ হাজার টাকা। তাহলে প্রতিদিন ৫টি লাশ হতে অতিরিক্ত ৬০ হাজার টাকা হলে মাসের শেষে তা গিয়ে দাড়ায় প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা। এ উদ্বৃত্ত টাকাগুলো ভাগাভাগি করে নেন শান্তি ঘোষাল-অসিত বরন বিশ^াসরা। ঠিক এমনই এক ঘটনা ঘটেছিলো গত মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে চারটায় কালিরবাজার স্বর্নপট্রি গোবিন্দ এর শাশুড়ির লাশ সৎকারের জন্য আনার পর এক অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দেন পুরোহিত শান্তি ঘোষাল। টাকা না দিলে লাশ সৎকার হবেনা এমন কথা বলার পরই শুরু হয় হট্রগোল। এ সময় শান্তি ঘোষাল,সুজন সাহা, ক্যাশিয়ার কিশোর, শান্তি ঘোষোলের ভাগিনা কৃষনার সাথে কালিরবাজার স্বর্নপট্রির মধুর সাথে কথা কাটাকাটি হয়।। মধু বিস্তারিত জানতে চাইলে তাকে মারতে উদ্যত হন শান্তি ঘোষালের রাইটার কার্তিক। সেখানে লাশের সাথে আগতদের বসার জন্য গোপালকে চেয়ার নামাতে ২০০, লাকড়ির নামানোর জন্য ২০০ টাকা দিতে হবে। আবার খিচুরী পাকানোর মজুরি ১৫০০ টাকা এবং তার তৈরীর সরঞ্জাম ১০ কেজি চাউল,৫ কেজি ডাউল,আলু অন্যান্য সামগ্রীর জন্য সর্বমোট ৬ হাজার টাকা দাবী করলেই এ হট্রগোলের সুত্রপাত হয় বলে জানান লাশ সৎকারে আসা কয়েকজন মানুষ। তারা আরও বলেন, শ্মশানের ভেতরে মহামায়া সেবাশ্রম প্রতিবছর কীর্তন ও দূর্গাপুজার আয়োজন করতো। শ্মশানের মৃত মানুষের আত্মার শান্তি কামনার জন্য সনাতন ধর্মীয় যত পুজা রয়েছে তা সবকিছুই উদযাপন করা হতো পৌর শ্মশানে। কিন্তু তারা ভাই-বোনের অনুসারীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সেটার আয়োজন পুরোটাই বন্ধ করে দিয়েছেন। যার আমরা সনাতন ধর্মের লোকজন এখন আর শ্মশানে কোন প্রকার পুজা উদযাপন করতে পারিনা। অথচ পৌর শ্মশানের সাবেক সভাপতি টানবাজারের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন সাহা এবং সাধারন সম্পাদক নয়ামাটির এলাকার সুতা ব্যবসায়ী দিলীপ সাহা যখন দ্বায়িত্বে ছিলেন তখন তারা টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিবর্তে উল্টো আর্থিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন লাশ সৎকার করতে আসা সনাতন ধর্মের মানুষগুলোকে। ব্যাপক তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় যে,পৌর শ্মশানে পুর্বে সভাপতি ও সেক্রেটারী দাবীদার সুজন সাহা ও শংকর সাহা,ক্যাশিয়ার দাবীদার পুলিশ লাইন এলাকার ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী কিশোর বাবু, মাসদাইর বাড়ৈভোগ এলাকার রনজিত মন্ডল,টানবাজার এলাকার রং ও কসমেটিকস ব্যবসায়ী সুব্রত কুমার সাহা, পুরোহিত শান্তি ঘোষাল ও তার ভাতিজা সবুজগংদের সাথে শ্মশানের বর্তমানে সভাপতি কাউন্সিলর অসিত বরন একত্রিত হয়েই শ্মশানের ভেতরে নানা প্রকার অনিয়মের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন। অভিযোগ রয়েছে যে,পুরোহিত শান্তি ঘোষালের আস্কারায় তার ভাতিজা সবুজ শ্মশানের ভেতরের ২য় তলায় মদ,গাজা ও নারী নিয়েও নাকি জম্পেস আড্ডা জমিয়ে থাকেন। ভক্তরা আরো জানান, শ্মশানের নতুন যে কমিটি মেয়র থাকাকালীন সময়ে গঠন করা হয়েছে সেখানে উপরোল্লোখিতরাই রয়েছেন। এখানে নতুন কোন সদস্যকে প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছেনা শ্মশানের নিয়ন্ত্রক অসিত ও শান্তি ঘোষালগং। কারন নতুন কোন সদস্য উক্ত কমিটিতে নেয়া হলে শ্মশানের ভেতরে তাদের ধারা যে অপকর্ম ও অনিয়ম হচ্ছে তা হয়তবা করতে পারবেনা। সেই জন্য কমিটিতে নতুন মুখের আগমনের সুযোগ হয়না। সনাতন ধর্মের সাধারন মানুষের দাবী,কাউন্সিলর অসিত বরন ও পুরোহিত শান্তি ঘোষালগংদের কবল থেকে পৌর মহা শ্মশানটি রক্ষা করাটা জরুরী হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই শ্মশানের অভ্যন্তরে লাশ সৎকারে আসা সনাতন ধর্মের লোকদের সাথে অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিচ্ছেন তারা। সনাতন ধর্মের মানুষের মতে,পুরো শ্মশানটিকে যেন শান্তি ঘোষাল ও অসিত বরন বিশ^াসগংরা একটি বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রুপ ধারন করে ফেলেছেন। এখানে লাশ সৎকার করতে আসা মানে কাড়ি কাড়ি টাকা গোনা। যাদের টাকা আছে তারা দিয়ে যান আর যাদের টাকা নেই তাদের যেন দূর্ভোগের শেষ নেই। তাই আমরা চাই মাসদাইর মহাশ্মশানটি শান্তি ঘোষাল ও সদ্য অপসারনকৃত কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ^াসগংদের কবল থেকে রক্ষা করা হোক। এ বিষয়ে আমরা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মহোদয়ের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি সনাতন ধর্মের সর্বস্তরের লোকজন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা