বিএনপি নেতা পরিচয়ে ২ মাসে কোটিপতি

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ পন্থী নাসিক ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পরিচয়দানকারী আইলপাড়ার মৃত জাহের আলীর পুত্র মনির হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, লুটপাট, দখল বাণিজ্য, ডিশ-ইন্টারনেট ও ইপিজেডে খাবার, টিফিন, ঠিকাদারি ও ঝুঁট সেক্টরের দখল নিতে ব্যবসায়ীদের নানা হুমকি ধামকি দেয়াসহ একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এসব বিতর্কিত কর্মকান্ডে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লেই লুটতরাজসহ চাঁদাবাজি, দখল বানিজ্যে মগ্ন হয়ে উঠে মনির হোসেন। তিনি চাঁদাবাজি ও লুটপাট করে ইতোমধ্যেই কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ইপিজেডের কর্মকর্তাদের আর্থিক সুবিধা ও নানা ভয়-ভীতি দেখিয়ে আদমজী ইপিজেড, অরিয়ন ওষুধ কোম্পানি, ডিপোসহ এর বাহিরে থাকা আরো বেশ কয়েক গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরীর মালিকদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরর্পবূক মালামাল নামানো, আদমজী এলাকার দোকান থেকে ২০০/৩০০ টাকা করে চাঁদা, শীতলক্ষ্যা নদী ঘাটে চাঁদা, ময়লার গাড়ি থেকে চাঁদা, আওয়ামী লীগের নেতা বিতর্কিত মতির সাথে আতাঁত করে বিভিন্নভাবে ইপিজেডে ঠিকাদারী ব্যবসার এগ্রিমেন্ট করা, ইপিজেডে সাধারণ ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে নানা হয়রানি করা সহ তার বিরুদ্ধে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের এমন বহু অভিযোগ কেন্দ্রে জমা পড়ে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়। এদিকে সূত্র জানিয়েছে, সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে ঠিকাদারী অনেক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি ও ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির হাতে। পট পরিবর্তনে সাবেক এমপি শামীম ওসমানের অন্যতম সিদ্ধিরগঞ্জে সকল সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি আওয়ামী লীগ সরকার পল্টি দেয়ার পর গা-ঢাকা দেয় পুরো বাহিনী নিয়ে। পরবর্তীতে তার এই ঠিকাদারী ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন নাসিক ৬নং ওয়ার্ডে বিএনপি নেতা পরিচয়দানকারী মনির হোসেন,  ছাত্রদল নেতা রাকিবুর রহমান সাগর সহ আরো বেশ কয়েকজন। কিন্তু মনির কয়েকদিন যাবৎ তার লোকবল নিয়ে আদমজী ইপিজেডের বেশ কয়েকটি কারখানায় গিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে ওয়েস্টিজ মালামাল নামিয়ে আনতে চায়।  ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সাথে কথা বলে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে ইয়েস্টার, মারোশিয়া, সোয়াদ সহ কয়েকটি ফ্যাক্টরির ঝুঁট সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এগুলো তিনি বিএনপির কোন নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ না করে একাই হাতিয়ে নিয়েছে মনির। খাবার সাপ্লায়ার, ঝুট ব্যবসায়ী, টিফিন সরবরাহকারী ব্যবসায়ী, ঠিকাদার ব্যবসায়ী, এক্সেসরিজ ব্যবসায়ীদের নানা হুমকি ধামকি দিচ্ছেন ব্যবসা কেড়ে নিতে। লোকজন নিয়ে ব্যবসায়ীদের বাড়ি-ঘরে গিয়ে হামলা করছেন। তাছাড়া কয়েকটি ব্যবসায়ীর নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা এডভ্যান্স নেওয়ার অভিযোগ ও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কয়েক শত লোকজন নিয়ে ব্যবসা দখলে নিতে আদমজী ইপিজেডে বেশ কয়েকবার মহড়াও দিয়েছেন মনির। ইপিজেডের বৈধ ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে হলে চাঁদার দাবিতে নানা হুমকি ধামকি দিচ্ছেন লোকজন পাঠিয়ে। এছাড়াও আদমজীতে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে তিনি নিজে চাঁদা দাবি করেছেন অন্যথায় ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে তার এসব কর্মকান্ডের কারণে ক্ষুব্ধ বিএনপির ত্যাগী নেতা কর্মীরা তার বহিষ্কার এবং তার চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে দলীয় কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, মনির এলাকায় বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচিত থাকলেও গোপনে গোপনে যুবলীগ নেতা মতির হয়ে সে কাজ করতো। মতির থেকে ব্যবসা বাণিজ্য অর্থনৈতিক সহ নানাবিধ সুবিধা গ্রহণ করেছে। মতির পক্ষে কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট চেয়েছে। মনির দলের বিরুদ্ধে গিয়ে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা তৈমুর আলম খন্দকারের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে তার নির্বাচনে প্রচারণা করেছে। মনিরের মতো লোকের কর্মকান্ডের কারণে বিএনপির মত দলের সুনাম বারবার  ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যেখানে তারেক রহমান ও মামুন মাহমুদের নির্দেশ কোন ধরনের হামলা দখল বাণিজ্যে নিজেদের জড়ানো যাবে না সেখানে ৬নং ওয়ার্ডে মনির আরাম আয়েশে থাকার আশায় লোভ সামলাতে না পেরে নিজেকে দলীয় শৃঙ্খলা বহির্ভূত অপরাধে জড়িয়ে ফেলেছেন। বিএনপি নেতারা আরও জানান,” বিএনপি এখনও ক্ষমতায় আসেনি। একজন উপদেষ্টা নেতৃত্বে বর্তমানে দেশ চলছে। এমতাবস্থায় মনিরের বিতর্কিত কর্মকান্ডের ফলে সংগঠনের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ শুনেছি এবং আমরা তার এসব আচরণে বিরক্ত ও অতিষ্ঠ। তার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বিএনপির নেতাদের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি, এবং আশাকরি তারা দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবেন।”