আজ মঙ্গলবার | ২২ অক্টোবর ২০২৪ | ৬ কার্তিক ১৪৩১ | ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬ | রাত ১১:২৯

যৌতুকের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত পেতে চায় 

ডান্ডিবার্তা | ০৫ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:১৭ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপো্র্ট:

সিদ্ধিরগঞ্জে ধুমধাম করে আনন্দ উল্লাসের মধ্য দিয়েই পারিবাবিকভাবে বিয়ে হয় সেলিম খান ও জান্নাত মেরী ইতির। বিয়ের পরই অচেনা-অজানা এক পুরুষ সেলিম খানকে আপন করে নতুন জীবনের স্বপ্ন আঁকেন ইতি। স্বামী সেলিম খানকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে নিজের জীবনকে তার কাছে সপে দেন। আর নতুন ঘরকে ভালোবাসার রংয়ে সাজিয়ে তুলতে স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েন। ভালোবাসার চঞ্চলতায় তাদের দাম্পত্য জীবনের শুরুটা বেশ সূখকর হয়ে উঠলো। কিন্তু ইতির এ সূখ স্থায়ীত্ব হলনা। বিয়ের অল্পদিনের মধ্যেই তার সব স্বপ্নভঙ্গ হলো। সংসার জীবনের কয়েকটা মাস না যেতেই স্বামী সেলিম বদলে যেতো থাকলো। সে যেন অচেনা-অজানা অন্য এক মানুষ হয়ে উঠলো। আগের সেই সেলিমকে তিনি কিছুতেই শনাক্ত করতে পারছে না। স্বামী নামে ভালোবাসা ও তার স্বপ্নের লোকটাকে বড় অচেনা মনে হতে থাকলো। সেই স্বামী সেলিমকে দেখতে পান যৌতুক লোভী হীংস্র পুরুষ হিসেবে। যৌতুকের জন্য তার জীবনে নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। সূখকর দাম্পত্য জীবন হয়ে উঠে নরক-যন্ত্রণাময়। এরপরও স্বপ্নকে পুনরুদ্ধার করতে ভালোবাসার মহাপূরুষকে নিজের করতে জীবন যুদ্ধ করে সংসার জীবনে সব নির্যাতন নিরবে সহ্য করে দিনাতিপাত করছিলেন। এরমধ্যেই কন্যা শিশুর মা হয়ে উঠেন ইতি। এরপর নিজের সব সূখ বিসর্জন দিয়ে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সেলিম খানের সংসারেই নিজেকে বিকিয়ে দেন। এরপর এক পুত্র সন্তান আসে তাদের সংসারে। বর্তমানের মেয়ের বয়স (১২) ও ছেলের বয়স (৭)। অবশেষে ওই দুই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে নিরুপায় হয়ে অত্যাচার সহ্য করে স্বামীর সংসারে পার ক্ের দেন ১৩ বছর। এই সময়ের মধ্যে অনেকবার নির্যাতন সইতে না পেরে পিত্রালয়ে এস সংসার ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেও স্বজনদের চাপে আবার সেলিমের ঘরে ফিরে যান। এরমধ্যেও পাষন্ড স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে ইতি তার জীবনের ইতি টানতে তিন তিন বার আত্মহত্যা করতে গেলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফিরেন। সেলিমের এই অমানুষিক নির্যাতন ও অমানবিক কর্মকান্ড নিয়ে স্থানীয়ভাবে অনেকবার সালিশী বৈঠক হলেও নিজেকে পরিবর্তন করতে পারেনি সেলিম। ইতির শরীরের এমন একটু জায়গাও নেই যেখানে সেলিমের নির্যাতনের বিষাক্ত ছোয়া লাগেনি। সেই সাথে মানষিক নির্যাতন তো রয়েছেই অবিরাম। সর্বশেষ নিজেকে রক্ষা করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে মামলা করলে আরও অমানুষ হয়ে উঠে স্বামী নামে পাষন্ড সেই সেলিম। আরও ভয়ংকর হয়ে উঠে সেলিম। অবশেষে নিজেকে শেষ রক্ষা করতে বাধ্য হয়েই স্বামীর ঘর ছাড়তে হলো তাকে। এখন সে অসহ্যময় জ্¦ালাময় দাম্পত্য জীবন থেকে মুক্তি পেতে চান। নরকময় জীবন থেকে বাঁচতে চান ইতি। এভাবেই বাধ ভাঙ্গা অশ্রুসজল চোখে বুকের ভীতর জমাট বাধা কষ্টের আর্ত চিৎকারকে স্থীর নিরবতায় নিয়ে এসে নিজের জীবনের কথা গুলো বলেন সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী কদমতলী কলেজ পাড়া এলাকার মো. ওয়াজ উদ্দিনের মেয়ে ভুক্তভোগী জান্নাত মেরী ইতি। অভিযুক্ত পাষন্ড স্বামী নির্যাতনকারী সেলিম খাঁন একই এলাকার সাঈদ খাঁনের ছেলে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সেলিম ও তার বাবা সাঈদ খাঁন একজন লোভী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির মানুষ। তাদের ভয়ে এই পরিবারের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার কোনো সাহস পায় না। এই বাড়ি নির্যাতিত ইতির আর্ত চিৎকারে কেঁপে উঠলেও কেউ এগিয়ে যেতে পারতোনা। তাদের এসব অনৈতিক ও অসামাজিক যৌতুক লোভী কর্মকান্ডে সেলিমের স্ত্রী ইতি সংসার না করার চুড়ান্ত  সিদ্বান্ত নেন চলে যান পিত্রালয়ে। এঘটনায় নাসিক ৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মিজানুর রহমান খাঁন রিপনের কার্যালয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সেলিম ও ইতির পরিবারের আত্মীয় স্বজনসহ স্থানীয়দের উপস্থিতে একটি সালিশ হয় ওই সালিশে সেলিম খান তার সমস্ত দোষ স্বীকার করেন। এ সময় সেলিম খান পূর্বের মত আর তার স্ত্রী উপর নির্যাতন ও তার শ^শুর বাড়ির লোকজনের সাথে অসাধাচরণ করবেন না বলে একটি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে মুচলেকা দেন। এরপর তারা জান্নাত মেরী ইতিকে তাদের ঘরে নিয়ে গেলেও কিছু দিন যেতে না যেতেই আবার পূর্বের মতো অমানুষিক নির্যাতন চালাতে শুরু করে। এরপর ইতি এ অত্যাচার সইতে না পেরে সেলিম ঘর ছেড়ে আবারও পিত্রালয়ে চলে যায়। এরপর যন্ত্রনাময় সংসার জীবনের অবসান ঘটাতে গত ৩১ আগষ্ট তালাক চেয়ে নোটিশ পাঠান। এতে সেলিম খান আরও ক্ষিপ্ত হয়ে শ^শুর বাড়িতে এসে ইতিকে মারধর করে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।  এ ঘটনায় শনিবার (৫ অক্টোবর) সিদ্ধিরগঞ্জ একটি জিডি করেন জান্নাত মেরী ইতি। ভুক্তভোগীর বাবা মো. ওয়াজ উদ্দিন বলেন, বড় আশা নিয়ে মেয়েকে বড় পরিবারে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু সূখ পেলোনা মেয়েটা। তার মুখের দিকে তাকালে কষ্টে বুকটা ফেটে যায়। বিয়ের ৫/৬ মাস পর থেকেই যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হতে থাকে ইতি। এরপর তার স্বামী ও শ^শুরবাড়ির চাহিদানুযায়ী ৪ লাখ টাকার ফার্নিচার দিয়ে পুরো ঘর সাজিয়ে দিলেও তাদরে মন ভরেনি। এছাড়াও যখন যতটুকু সম্ভব মেয়ের সূখের জন্য দিয়েছি। আরও আরও যৌতুকের জন্য প্রায় সময়ই আমার মেয়ে ইতিকে নির্যাতন করে আসছে। এখন আমি কি করবো নিজেই জানিনা। আমার মেয়ের জীবন নিয়ে যারা ঝিনিমিনি খেলছে তাদের বিচাই চাওয়া যারা আর কিছুই করার নেই। ভুক্তভোগী দুই সন্তানের জননী জান্নাত মেরী ইতি বলেন, যৌতুকের জন্য আমি দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে স্বামী ও শ^শুর বাড়ির লোকজনের হাতে শারিরিক ও মানষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এখন আর আমি এ নির্যাতন সইতে পারছিনা। আমি এ জীবন থেকে মুক্তি চাই, স্বাভাবিক জীবন চাই। সমাজের সকল সচেতন মানুষ ও আইনশৃংখলাবাহিনীর কাছে আমার আকুল আবেদন যৌতুক লোভী পাষন্ড সেলিম খানের করাল গ্রাস থেকে আমাকে মুক্ত করে বাঁচান। আমিও বাঁচতে চাই। এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত সেলিম খানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগ তদন্তাকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই রনজিৎ সরকার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৪১
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:৩২
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৪৬
  • ১১:৪৭
  • ১৫:৫১
  • ১৭:৩২
  • ১৮:৪৬
  • ৫:৫৮
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা