বক্তাবলীতে বাদল মিয়া-রশিদ মেম্বার বাহিনী মুখোমুখি

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার বক্তাবলীতে মামা বাদল মিয়া সহ স্থানীয় লোকজনের হাতে ভাগিনা রশিদ মেম্বার উত্তর মাধ্যম খাওয়ার পর দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দুই গ্রুপের লোকজন নিজ নিজ স্থানে অবস্থান করা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে প্রতিশোধ নিতে রশিদ মেম্বার বাহিনীর লোকজন বাদল মিয়ার তেলের পাম্পে হামলা করার পরিকল্পনা করছে। এতে করে আরো বেশি উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে যেকোন সময় আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে মামার হাতে উত্তম মাধ্যম খেয়ে ভাগিনা রশিদ মেম্বার অসুস্থ হয়ে বিছানায় এবং মামা বাদল মিয়া জেল হাজতে থাকলেও তাদের বাহিনীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিজ নিজ স্থানে অবস্থান নেয়। তারা একে অপরকে ঘায়েল করতে নানা ধরনের কুট-কৌশল চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তাদের দ্বন্দ্বের মধ্যে দলীয় কোন বিষয় নাই বলে স্পষ্ট ভাবে জানা গেছে। তারা একে অপরে আপন মামা-ভাগিনা হলেও বহু বছরের বিরোধে এবার বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মামা বাদল মিয়া ও ভাগিনা রশিদ মেম্বার এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। রশিদ মেম্বার আওয়ামী শাসন আমলে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে সখ্যতা রেখে মামা বাদল মিয়াকে কোনঠাসা করা সহ তেলের পাম্প দখল করার অপচেষ্টা চালিয়ে ছিল। রশিদ মেম্বার টাকার গরমে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে সখ্যতা রেখে আপন মামা বাদল মিয়াকে সায়েস্তা করতে বহু চেষ্টা চালায়। কিন্তু বাদল মিয়া তার নীতিতে অটল থাকায় কিছুই করতে পারেনি। আর ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর রশিদ মেম্বার নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে এলাকায় তান্ডবনীলা চালায়। বক্তাবলী ফেরী ঘাট থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ নেতাদের মাছের খামার, মার্কেট সহ ব্যবসা বানিজ্য দখল করে। এমনকি আওয়ামী লীগের অনেক লোক বাড়িতে হামলা, তালা মারা সহ লুটপাট করারও অভিযোগ রয়েছে রশিদ মেম্বার সহ তার বাহিনীর লোকজনের বিরুদ্ধে। এছাড়াও টাকার গরমে সাধারণ মেম্বার হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নিজের দখলে নিয়ে সরকারের নিয়ম বহির্ভূত ভাবে পূর্বের প্যানেল চেয়ারম্যান ভেঙ্গে নিজেকে এক নাম্বার প্যানেল চেয়ারম্যান দাবি করে নতুন প্যানেল চেয়ারম্যান তৈরি করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে অপচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। এছাড়াও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি হওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখতে থাকে। আর রোববার (৬ অক্টোবর) সকালে বক্তাবলী ঘাটে রশিদ মেম্বার ক্ষমতার দাপট দেখাতে গেলে তারই আপন মামা সহ তার লোকজন মিলে রশিদ মেম্বার সহ কয়েকজনকে উত্তম মাধ্যম দেয়। ঐ সময় বাদল মিয়া দাবি করেন রশিদ মেম্বার তার বাহিনী নিয়ে বাদল মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত টাকার টাকা না দেয়ায় বাদল মিয়া সহ তার স্টাফদের মারধর করে। এতে বাদল মিয়া সহ তার লোকজন রশিদ মেম্বারকে গণধোলাই দেয়। এ ঘটনায় রশিদ মেম্বারের পক্ষে বাদল মিয়া সহ তার লোকজনের ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। আর বাদল মিয়া বাদী হয়ে রশিদ মেম্বার সহ তার লোকদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে। তবে রশিদ মেম্বার সহ তার লোকদের বিরুদ্ধে ছাত্র হত্যার মামলা থাকা সত্বেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। কিন্তু রশিদ মেম্বারকে মারধর করার মামলায় বাদল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে বাদল মিয়ায় জেল হাজতে এবং রশিদ মেম্বার আহত হয়ে বিছানায়। কিন্তু হামলার প্রতিশোধ নিতে বাদল মিয়ার পাম্পে হামলা করার পরিকল্পনা করছে রশিদ মেম্বার বাহিনী। তবে বাদল মিয়ার লোকজনও রশিদ মেম্বার বাহিনীকে প্রতিহত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে বক্তাবলী ঘাট এলাকায় থমথম অবস্থা বিরাজ করছে।