আজ বুধবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৭ কার্তিক ১৪৩১ | ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬ | রাত ৪:২৭

রাজনৈতিক অস্থিরতায় আইভীর ২১ বছর

ডান্ডিবার্তা | ০৯ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:৫৩ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

আওয়ামী লীগ নেত্রী এবং নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বেশী সময় দায়িত্ব পালন করা জনপ্রতিনিধি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। পরিচ্ছন্ন এবং সাহসী হিসেবে পরিচিত এই রাজনীতিবিদ তার জীবনে রাজনৈতিক সুসময় জোটাতে পারেননি। নিজের দল ক্ষমতায় থাকুক কিংবা না থাকুক, সর্বদাই তার উপর চাপ তৈরী করেছে প্রতিপক্ষরা। সহযোগীতা তো দূরের কথা, উল্টো জবাবদিহি করতে করতে কেটেছে তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন। সাধারণ রাজনীতিতে দল ক্ষমতায় থাকলে সেই দলের অনুসারীরা সুসময়ে থাকেন। প্রশাসন, পুলিশ থেকে শুরু করে সবকিছুই থাকে অনুকুলে ও নিয়ন্ত্রণে। দলের কর্মীরা নেতার কথা অনুসরন করেন, জনপ্রতিনিধি হলে সেই কর্মীদের সংখ্যা বাড়ে কয়েকগুন। কিন্তু এসবের কিছুই জোটেনি সিটি করপোরেশনের ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র আইভীর ভাগ্যে। অথচ প্রতিবারই ভোটের মাধ্যমে লড়াই করে জয় পেয়েছেন মেয়র পদে। লড়েছেন নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলের বিপক্ষে। মেয়র আইভীর জনপ্রতিনিধি হিসেবে যাত্রা শুরু বিএনপির ক্ষমতাকালে। সেসময় নিউজিল্যান্ড থেকে এসে পৌরসভার মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেন। পরিচয় ছিলো কেবল সাবেক পৌরপিতা আলী আহাম্মদ চুনকার মেয়ে। পেশায় একজন চিকিৎসক। বাবার পরিচয়, পারিবারিক ঐতিহ্য এবং নগরবাসীর আস্থার কারনে অতি সহজেই জয় পেয়ে যান পৌরসভা নির্বাচনে। এরপরে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আইভী। তবে প্রথম লড়াইটা করেন ক্ষমতাসীন দল বিএনপির নেতার বিপক্ষে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকায় প্রায় সবকিছুই ছিলো সেই প্রার্থীর অনুকুলে। কিন্তু জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে জিতে আসেন আইভী। জয়ের পরে যে খুব স্বস্থিতে ছিলেন তিনি এমন নয়। তার বিপক্ষে অবস্থান নেয় বিএনপি পন্থী বেশ কিছু কাউন্সিলর। ধারাবাহিক চাপের মুখেই রাখা হয় তাকে। তার উপর অনাস্থা আনা সহ নানান ভাবে হয়রানি করা হয়। এমনকি দুর্নীতির অভিযোগও আনা হয় বিএনপি নেতাদের মাধ্যমে। বিএনপির পালাবদলের পর আসে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সেখানেও স্বস্তি পাননি। সেসময় তাকে প্রয়াত নাসিম ওসমান এবং শামীম ওসমানকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। সিটি নির্বাচনে প্রবল বিরোধিতা ও দলীয় সমর্থন হারান আইভী। এরপরেও নগরবাসীকে সাথে নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ করে জয় ছিনিয়ে আনেন আইভী। দেশের প্রথম নারী সিটি মেয়র হবার পরেও স্বস্তি মিলেনি তার। নির্বাচিত হবার পরেও তার বিরুদ্ধে অব্যাহত বিষোদগার চালিয়ে যেতে থাকে শামীম ওসমান ও আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ। শামীম ওসমান এমপি নির্বাচিত হবার পরে এর মাত্রা বাড়ে আরও কয়েকগুন। দ্বিতীয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে আইভীকে জনতার মঞ্চে সাজা দেয়া, অশ্লীল পোস্টার ছড়িয়ে দেয়া সহ নানান বিষোদগার চলতেই থাকে। এরপরে নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খান বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে আসেন। অর্থ্যাৎ দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে গিয়েও অভ্যন্তরীন চাপে ছিলেন আইভী। তৃতীয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দিয়ে চাপে ফালানোর চেষ্টা, হকার বসিয়ে নগর অচল করে দেয়ার ঘটনা ঘটায় শামীম ওসমান ও আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ। দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। এরপরেও তৃতীয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তৈমূর আলম খন্দকারের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে জয়লাভ করেন। গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কিছুদিন পরেই অপসারন করা হয় দেশের সকল সিটি মেয়রকে। যার কারনে পদচ্যুত হন আইভী। ক্ষমতার পালাবদলের পর তার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হচ্ছে একের পর এক মামলা। অথচ পুরো আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকালে তাকে বানানো হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের ঘনিষ্ট সহচর ও সহযোগী। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘আইভী জনগণের মাধ্যমে মেয়র পদে নির্বাচিত হলেও রাজনৈতিক সুসময় বলতে যা বোঝায়, তা জোটেনি তার ভাগ্যে। তার অন্যতম কারন হচ্ছে তিনি জনগনের কথা ভেবেছেন, দলের নেতাকর্মীদের কথা ভাবেননি। তিনি যদি শামীম ওসমানের মত মানুষকে ভুলে গিয়ে শুধু নিজের আর দলের কথা ভাবতেন তাহলে আরামেই থাকতেন বিগত ২১ বছর। শুধুমাত্র মানুষের পক্ষে থাকার কারনেই রাজনৈতিক সুসময় থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বার বার।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৪১
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:৩২
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৪৬
  • ১১:৪৭
  • ১৫:৫১
  • ১৭:৩২
  • ১৮:৪৬
  • ৫:৫৮
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা