আজ শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬ পৌষ ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ | রাত ৮:২৭

হাজার কোটি টাকার মালিক শামীম ওসমান!

ডান্ডিবার্তা | ০৯ অক্টোবর, ২০২৪ | ১০:০৯ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক সাংসদ একেএম শামীম ওসমান। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন ভোটের মাধ্যমে। এরপর ২০১৪ সালে বিনাভোটে এবং ২০১৮ ও ২০২৪ সালে দিবারাত্রি ম্যাচের মতই কারচুপির মাধ্যমে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৪ সময়ে প্রায় সাড়ে ১৫ বছর তিনি ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের সাংসদ ছিলেন। দীর্ঘ এ সময়ে তিনি কি পরিমান অর্থের মালিক হয়েছেন তা হয়তবা অনেকেই অজানা। কিন্তু দীর্ঘ এ সময়ে তিনি প্রায় হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে জানা যায় একাধিক সুত্রে। সুত্রগুলো জানায়,১৯৯৬ সালে শামীম ওসমান সাংসদ হওয়ার পর তেমন কোন উন্নয়ন না করলেও তার বিশাল বাহিনীর মাধ্যমে পুরো জেলাজুড়েই আতংকের জন্ম দেন। সে সময়ে তিনি ও তার বাহিনী অপকর্মের ফিরিস্তি গনমাধ্যমে প্রকাশ করা হলে উক্ত সংবাদকর্মী বিরুদ্ধে নেমে আসতো অমানবিক নির্যাতনের ষ্টীমরোলার। যদিও সে সময়ে স্থানীয় গনমাধ্যমের সংখ্যা খুবই কম ছিলো। ২০১৪ সালে বিনাভোটে এমপি হওয়ার পর তখন স্থানীয় গনমাধ্যমের পাশপাশি নারায়ণগঞ্জে কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালও তৈরী হয়। ২০১৪ থেকে ২০২৪ থেকে এমপি থাকাবস্থায় তার বিরুদ্ধে কোন সংবাদ প্রকাশ হলে তিনি তার চেলা-চামুন্ডা দিয়ে উক্ত গনমাধ্যমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করিয়ে সেই সকল সাংবাদিকদেরকে হেনস্তা করার পাশাপাশি স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকার পাশাপাশি অনলাইন নিউজ পোর্টালও বন্ধ করান এ সাংসদ। মুলকথা হচ্ছে দীর্ঘ এ সময়ে তিনি তার নির্বাচনী এলাকাতে কি পরিমানে উন্নয়ন করেছেন এবং কি পরিমানে অর্থের মালিক হয়েছেন। তবে সাধারন মানুষের মতে নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের চেয়ে তার ব্যক্তিগত উন্নয়নই বেশী হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রচারনায় তিনি তার স্ত্রীসহ চেলাচামুন্ডারা বলেছিলেন যে বিগত ৫ বছরে তিনি সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন করেছেন। তার নির্বাচনী এলাকা সিদ্ধিরগঞ্জটি সিটি কর্পোরেশনের অধীনস্থ হওয়ায় সেখানে তার কোন উন্নয়ন করতে হয়নি। শুধুমাত্র কুতুবপুর,এনায়েতনগর,ফতুল্লা,কাশিপুর এবং বক্তাবলী ইউনিয়নের উন্নয়নে ছিলো তার প্রকল্পসমুহ। অথচ এ ৫টি ইউনিয়নের যদি সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন হতো তাহলে উক্ত ইউনিয়নগুলো পাড়া-মহল্লাগুলো মাটি হতে অন্তত ১০ ফুট উচুতে থাকতো। তাহলে কি হলো উক্ত টাকাগুলো কোথায় গেলো? তবে সেই সময়ে সাংসদ শামীম ওসমানের মিথ্যাচারের উন্নয়ন নিয়ে একটি নিউজ পোর্টালসহ ৩টি স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ শুরু করলে তা নিয়ে রাইফেলস ক্লাবে ভেতরে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সেখানে শামীম ওসমান সিদ্ধান্ত নেন যে সাংবাদিক এ নিয়ে সংবাদ লিখছে এবং প্রকাশ করছে তাদেরকে আইসিটি আইনে মামলায় জর্জরিত করে হয়রানী করবে। মোট ৪টি গনমাধ্যমকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর জন্য সেখানে থাকা এমপির চেলাচামুন্ডারা পরামর্শ দেন। পরে শামীম ওসমানের এক ঘনিষ্ট চেয়ারম্যান উক্ত সংবাদ প্রতিবেদককে সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন। এ সময় উক্ত সাংবাদিক তার নিজের ও পরিবারের কথা বিবেচনা করে শামীম ওসমানের উন্নয়ন নিয়ে মিথ্যাচারের সংবাদ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকেন। সুত্রে জানা যায়, একজন জনপ্রতিনিধি তার এলাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ থেকে শতকরা ১০ ভাগ নিয়ে থাকেন। সেই সুত্রে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা থেকে সাড়ে ৭ শত কোটি টাকা নিয়েছেন ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। এরপর ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কি পরিমান অর্থ কামিয়েছেন তিনি। এরমধ্যে দুুটি প্রকল্প ছিলো বড় যার একটি হচ্ছে ডিএনডি প্রকল্প আর অপরটি হচ্ছে পঞ্চবটী-মুক্তারপুরের দ্বিতল সড়ক নির্মান কাজ। ডিএনডি প্রকল্পের জন্য দুইধাপে ১৩০০ কোটি টাকা। সেখান থেকে তিনি পেয়েছেন ১৩০ কোটি টাকা আর পঞ্চবটী-মুক্তারপুরের দ্বিতল সড়ক নির্মান কাজের জন্য এক হাজার ২০৬ কোটি টাকা। এ প্রকল্প থেকে পেয়েছেন ১২০ কোটি টাকা। অথ্যাৎ তিনটি কাজের জন্য তিনি এক হাজার কোটি পেয়েছেন। অথ্যাৎ শামীম ওসমান হাজার কোটি টাকার মালিক। এছাড়া ২০২৩ অর্থবছরে ৫টি ইউনিয়নের ড্রেনেজ প্রকল্পের জন্য ১৭৫ কোটি এনেছিলেন। সেই ১৭৫ কোটি টাকার কাজ তিনি করেছেন নাকি আত্মসাৎ করেছেন সেটা অনেকের কাছে অজানা। তাছাড়া পুরো জেলা জুড়েই তিনি তার ছেলে অয়ন ওসমান বিভিন্নভাবে সাধারন মানুষকে ভীতি দেখিয়ে কি পরিমান অর্থ কামিয়েছেন তা জানেনা অনেকে। ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জসহ কয়েকস্থানে জমি সংক্রান্ত বিষয়েও প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন শামীম ওসমান। আর তার একাজের অন্যতম দোসর ছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম। তিনি নম পার্কে বসে শহর ও শহরতলীর শীর্ষ ভুমিদস্যুদের নিয়ে এ অনৈতিক কার্য সম্পাদান করতেন। বিসিকের ঝুট সেক্টর থেকেও প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম.সাইফউল্লাহ বাদল ও ঝুট সন্ত্রাসী কাইল্লা রকমতের মাধ্যমে। অনৈতিকভাবে শামীম ওসমানের অর্থ উপার্জনের মুল একটি অংশ ছিলো নারায়ণগঞ্জের পরিবহন সেক্টর। নিজ বলয়ের বিভিন্ন লোকদের দিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে ঢাকাগামী বাস এবং আন্তজেলা বাস কাউন্টার থেকে টিকিট প্রতি গুনে গুনে টাকা নিতেন এ সাংসদ। কথিত রয়েছে যে,ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে চলাচলকারী প্রতিটি বাসযাত্রীর টিকিট হতে তিনি ৪ টাকা হারে নিতেন। এছাড়াও নিজে শীতল এসি বাস সার্ভিস চালু করে বিআরটিএ’র অনুমতি ব্যতিত। তবে বিগত ১৫ বছরে পরিবহর সেক্টর থেকে শামীম ওসমান অন্তত ৩শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নাম প্রকাশ না শর্তে অনেক সাধারন মানুষ জানান,সাংসদ শামীম ওসমান বিগত ১৫ বছর সাংসদ থাকার দরুন তিনি প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সুচতুর এ সংসদ বিগত সময়ে যা উপার্জন করেছেন সে অর্থ দিয়ে বিন্দুমাত্র সম্পদ দেশে করেননি। ঢাকায় যে বাড়িতে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন সেটা ছিলো একজন মহিলার। সেটা তিনি নিজে,সাবেক সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু এবং ফকির গ্রুপের এক ছেলে মিলে জোড়পুর্বক দখল করে সেখানে থাকতেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে উন্নয়নের টাকা দিয়ে সম্পদ করেছেন দুবাই ও আমেরিকাতে। এছাড়া এ সকল অর্থ দিয়ে তিনি বিলাশবহুল প্রমোদতরীও কিনেছেন পাশাপাশি কয়েকটি কার্গো জাহাজও নাকি রয়েছে শামীম ওসমানের। অথচ তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলেছিলেন যে,তাদের বাড়ি নাকি ব্যাংকের কাছে মর্টগেজ রক্ষায় আদমজী ঝুট মিলের শ্রমিকদের টাকায় রক্ষা পেয়েছে। আবার পরিক্ষার বেতনের টাকাও দিতে পারেনি। এত কষ্টে থাকা শামীম ওসমান কিভাবে হাজার কোটি টাকা মালিক হন তাও প্রশ্ন থেকে যায় সাধারন জনগনের মাঝে। তারা আরো বলেন,তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে মিথ্যাচার করতেন। যে কারনে তাকে তার দলের নেতাকর্মীরাও মিথ্যাবাদী হিসেবে জানতেন। তারা বলেন, ৫ আগষ্টের পর থেকেই শুনছি যে আওয়ামীলীগের অমুক নেতা তমুক নেতা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক,বিদেশে বিশাল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তাহলে শামীম ওসমানও তো আওয়ামীলীগ করেছেন তিনি কি কম কামিয়েছেন খোজ নিন আমরা যা বলেছি তার চেয়ে হয়তবা আরো বেশীই হবে।  তারা জোড় গলায় দাবী করে বলেন, বিগত ১৫ বছরে শুধুমাত্র শামীম ওসমান অন্তত ৪ হাজার কোটি টাকা মালিক হয়েছে তার স্ত্রী ও ছেলে বাদে। তবে তার স্ত্রী ও ছেলে কি পরিমানে অর্থ কামিয়েছেন তা নিয়ে অনুসন্ধান করুন অবশ্যই তা বের হয়ে আসবে। নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষের দাবী,উন্নয়নের টাকা আত্মসাৎকারী সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানকে দ্রুত দেশে এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান এবং দেশ থেকে বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনতে অন্তবর্তী সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:১৪
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৯
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১১
  • ১১:৫৯
  • ১৫:৪০
  • ১৭:১৯
  • ১৮:৩৮
  • ৬:৩৬
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা