আজ মঙ্গলবার | ২২ অক্টোবর ২০২৪ | ৬ কার্তিক ১৪৩১ | ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬ | রাত ১১:৩২

গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য-এর দ্রোহ-দাহ স্বপ্নযাত্রা

ডান্ডিবার্তা | ১৯ অক্টোবর, ২০২৪ | ১০:৫৪ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

শোষণ-বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় নিয়ে ‘দ্রোহ-দাহ-স্বপ্নযাত্রা’ শিরোনামে সাংস্কৃতিক সমাবেশ আয়োজন করেছে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য। গতকাল ১৮ অক্টোবর শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত হয় নবগঠিত সংগঠনটির প্রথম সাংস্কৃতিক সমাবেশ। বৈরি আবহাওয়ার কারণে কিছুটা বিলম্বে শুরু হয় সমাবেশ। সাংস্কৃতিক সমাবেশ উদ্বোধন করেন ‘২৪ গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া এবং প্রবীণ কৃষকনেতা, যশোর ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক, প্রখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী রণজিৎ বাওয়ালী। উদ্বোধনী বক্তব্যে শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, “ছাত্ররা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই সংগ্রাম করতে গিয়ে আমার একমাত্র সন্তান নিহত হয়েছে। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের।  আপনারা তার স্বপ্নকে সার্থক করে তুলবেন সেটাই আমার প্রত্যাশা।” বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি জামসেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু। এতে মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে মানুষ হত্যা, পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত সহিংসতা ও প্রাণহানির মতো মর্মান্তিক ঘটনার নিন্দা জানানো হয়। ঘোষণাপত্রে আরো বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের নতজানু নীতির কারণে দেশে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী অপশক্তির আস্ফালন জনমনে ভীতি ও আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। দ্রুত শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয় সমাবেশের ঘোষণাপত্রে। এছাড়া, আলোচনায় অংশ নেন শহীদ আসাদ পরিষদের শামসুজ্জামান মিলন, গণসংস্কৃতি কেন্দ্রের জাকির হোসেন, প্রগতি লেখক সংঘের কোষাধ্যক্ষ দীনবন্ধু দাশ এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন খন্দকার শাহ্ আলম ও সুস্মিতা সুপ্তি। সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের সময় জুলাই-আগস্টে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। সেসব হত্যাকান্ডের বিচার কাজ শুরু হয়েছে, যা ইতিবাচক। তবে, বিচারকাজে যেন কোন অবহেলা না হয় এবং সত্যিকার অর্থে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয় সে দাবি জানান বক্তারা। তারা বলেন, অভ্যূত্থান পরবর্তী সময়ে অনেক কিছুই প্রায় স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এলেও এখন পর্যন্ত মুক্তভাবে সংস্কৃতি চর্চা করা যাচ্ছে না। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হলেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রই এখনও বন্ধ পড়ে আছে। সেগুলো অবিলম্বে মেরামত করে খুলে দেয়া এবং সংস্কৃতি চর্চার অবাধ ও মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান সমাবেশের বক্তারা। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রণীত সব ধরনের নিপীড়নমূলক আইন বাতিল এবং এসব আইনে গ্রেপ্তার সবাইকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার দাবি জানানো হয় সমাবেশে। এছাড়া, সব ধর্মীয় ও জাতিসত্ত্বার অধিকার নিশ্চিত করা এবং মাজার-মন্দির ও নারীর উপর আক্রমণ বন্ধ করার দাবিও জানান গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য-এর দ্রোহ-দাহ স্বপ্নযাত্রা কর্মসূচির বক্তারা। আলোচনা সভার পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্ব। এ পর্বে দেশবরেণ্য বেশ কয়েকটি সংগ্রামী সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিল্পীরা লাঠি খেলা, মূকাভিনয়, নৃত্য, আবৃত্তি, সংগীত ইত্যাদি পরিবেশন করে। এসব সংগঠন ও শিল্পীদের মধ্যে রয়েছে উদীচী, বিবর্তন, চারণ, প্রগতি লেখক সংঘ, গণসংস্কৃতি কেন্দ্র, সংহতি সংস্কৃতি পরিষদ, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্র, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্র, হাসান ফকরী, সমাজ চিন্তা ফোরাম, মাদল, সমগীত, গঞ্জে ফেরেশতা, ডিমোক্রেজি ক্লাউনস, সংজোয়ার, ঘওখ, টিম এজ অমিক্স, ভাটিয়াল শহুরে, দ্যা কমরেডস। নৃত্য পরিবেশন করে কথক নৃত্য সম্প্রদায়। মাইম শো করে ঢাকা ড্রামা এবং লাঠি খেলায় ছিল চারণ। দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে প্রতিবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ নাম নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন থেকে শুরু করে বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইন বাতিল, ভোটাধিকার ও জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রাম সংগঠিত করেছে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য। বিগত গণঅভ্যুত্থানে প্রথম কারফিউ ভঙ্গ, প্রতিবাদী গানের মিছিল ও দ্রোহযাত্রা আয়োজন ছিল ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে এই সংগঠনের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও সাহসী কর্মসূচি। গণঅভ্যুত্থানের পর মোর্চাটি ‘গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য’ নাম নিয়ে নব উদ্যমে কাজ শুরু করেছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৪১
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:৩২
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৪৬
  • ১১:৪৭
  • ১৫:৫১
  • ১৭:৩২
  • ১৮:৪৬
  • ৫:৫৮
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা