আজ রবিবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ | দুপুর ১:০৬

না’গঞ্জে লাশ নিয়েও রাজনীতি

ডান্ডিবার্তা | ২৩ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:৪৯ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

বিগত ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় যুবদল কর্মী শাওন প্রধান। এই ঘটনার পর থানায় দায়ের করা মামলায় আসামী করা হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের। মামলার বাদী মিলন প্রধান দীর্ঘদিন চুপ করে থাকলেও নীরবে মামলার বিষয়ে আদালতে আপত্তি জানিয়েছেন। যার ফলে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। ক্ষমতার পালাবদলের পর ২১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় নতুন করে পুলিশ সহ আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। তবে শাওনের মৃত্যুর পর থেকে নানাভাবে নাটক সাজানোর চেষ্টা করছিলো আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। হত্যাকান্ডের পরপরেই আওয়ামী লীগের মন্ত্রী হাসান মাহমুদ গণমাধ্যমের সামনে দাবী করেন শাওন প্রধান যুবলীগ কর্মী। তার স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীর পারিবারিক সম্পর্ক। ভাতিজার লাশ নিয়েও রাজনীতি করতে দ্বিধাবোধ করেননি শওকত আলী। গণমাধ্যমকে দেয়া বক্তব্যে শওকত বলেন, ‘শাওন আমার ভাতিজা। ও যুবদল করতো না। শাওন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।’ ঘটনার দিন সন্ধ্যায় হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে আসেন তৎকালীন পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। তিনিও গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘শাওন যুবদল কর্মী নয়। সে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শওকত আলীর ভাতিজা এবং যুবলীগ কর্মী।’এখানেই শেষ নয়। মধ্যরাতে শাওনকে যুবলীগ কর্মী দাবী করে মিছিল বের করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাতে ফতুল্লার নবীনগর এলাকায় নিহত শাওনের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিলে অংশ নেন। ওই বিক্ষোভ মিছিলে আরও অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাক ট্যাংকলরি কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা আলীম শেখ, বক্তাবলী ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ফকির চাঁন বেপারী, এনায়েতনগর ইউপির ৩নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল জলিল, আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান শেখ, শাওনের মামা মীর হোসেন, শহিদ মোদিসহ শতাধিক নেতাকর্মী। মিছিলে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শাওন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীর চাচাতো ভাতিজা। শাওন যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। তবে নিহত শাওনের ভাই ফরহাদ প্রধান প্রথম থেকেই তার ভাই যুবদলের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে দাবী করে আসছিলেন। এছাড়া গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবিতেও দেখা যায় সাদেকুর রহমান সাদেকের সাথে মিছিল করছেন শাওন। এছাড়া পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতেও দেখা যায় তাকে। এরপরেও তাকে আওয়ামী লীগ বা যুবলীগ কর্মী প্রমাণ করতে একযোগে কাজ করে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। শাওন হত্যার ঘটনায় মামলা করতে বললে প্রথমে রাজি হয়নি শাওনের ভাই মিলন। তার ভাষ্যমতে থানায় আটকে রাখা হয় তাকে। লাশ নিতে হলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে হবে তাকে। ভাইয়ের লাশ নেয়ার জন্য তাদের কথামতো স্বাক্ষর করে চলে আসেন। এরপর সেই স্বাক্ষর ব্যবহার করে তাকে মামলার বাদী বানিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামী করে মামলা দায়ের করানো হয়। যেই বিষয়ে কিছুই জানতেন না মিলন। নিজের ভাইয়ের প্রসঙ্গে ফরহাদ প্রধান বলেন, ‘আমার ভাই শাওন যুবদলের রাজনীতি করতো। ওর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ থেকে অনেক অফার এসেছে আমাদেরকে তাদের পক্ষে নিতে। কিন্তু আমরা চাইনাই আগামী দিনের রাজাকার হতে। বিএনপির মিছিলে গিয়ে শাওন গুলি খেয়েছে এটাই সত্য। আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষে গেলে অনেক সুবিধা পাইতাম। আমাদের কাছে প্রস্তাব এসেছিলো পুরো ফ্যামিলি বিদেশে পাঠায়া দিব। দেশে ব্যবসা বাণিজ্য করতে চাইলে সব ধরনের সহায়তা করবো। কেঁউ যাতে বাঁধা না দেয় সেইটা তারা দেখবো। আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে রাখবে। কিন্তু আমি ভাইয়ের রক্তের সাথে বেঈমানি করতে পারবো না।’ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের মামলায় ৭১ জনের নাম উল্লেখ সহ আরো ৫ হাজার জনকে আসামী করা হয়েছে। পুলিশের এস আই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ওই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর সবুর খান সেন্টু, দুইজন সহ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান ও আতাউর রহমান মুকুল, যুগ্ম সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা বিএনপির সদস্য আহজারুল ইসলাম মান্নান, যুগ্ম আহবায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, মহানগর ছাত্রদলে সভাপতি শাহেদ আহমেদ, সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, কাশীপুরের বিএনপি নেতা ওমর আলী, বিএনপি নেতা একরামুল কবির মামুন, বিএনপি নেতা হাসান আহমেদ, যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা লিংরাজ খান, লিংকন খান, জিয়াউদ্দিন জিয়া, বিএনপি নেতা মাসুদ রানা, আমিনুল ইসলাম মিঠু, মাকিব মোস্তাকিম শিপলু, সাইফুল ইসলাম বিপ্লব, শরিফ হোসেন মানিক, নয়ন, রুবেল, সোহেল, মন্টু মেম্বার, জুয়েল আরমান, মুরাদ হাসান, স্বপন চৌধুরী, আনিছ, জামাল কাজী, মো. সালু বেল্ট সালু, ইকবাল খেপা ইকবাল, রতন, সোহাগ, জাহাঙ্গীর, আরিফ, ওমর আলী, রাজ্জাক, সালাহউদ্দিন, রাজু আহম্মেদ রমজান, মোস্তফা কামাল, জুয়েল রানা, আকবর, আবুল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, জাকির, রাসেল ভাগিনা রাসেল, মাহমুদ হোসেন কাজল, কানা আক্তার, আবুল সর্দার, সাজু, সনেট, রয়েল, মো. ফয়জুল্লাহ সজল, মো. রশিদ, মুছা, ফারুক, রুবেল, শফিকুলকে আসামী করা হয়েছিল।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:১৪
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৯
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১১
  • ১১:৫৯
  • ১৫:৪০
  • ১৭:১৯
  • ১৮:৩৮
  • ৬:৩৬
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা