না’গঞ্জ বিএনপির চেইন অব কমান্ড নেই

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতি যেন ছেলের হাতে মোয়া হিসেবে পরিণত হয়েছে। এখানে যে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছেন। কোনো সাংগঠনিক নিয়ম অনুসরণ করতে হয় না। সাংগঠনিক নিয়ম মানতে হয় না। ইখতিয়ারের বাইরে থেকেও যে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছেন। মনে চাইলো কমিটি বিলুপ্ত করে দিবো মনে চাইলো আবার কমিটি পুনর্বহাল করে দিলো। গত ৫ আগস্টের পর থেকে এমনটাই যেন পরিণত হয়েছে। জানা যায়, গত ২০ অক্টোবর ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি বাতিল করা হয়েছে। বর্তমান আহ্বায়ক সুমন আকবর ও সদস্য সচিব মো. হাসান আলী নেতৃত্বাধীন আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের মাঝে সমন্বয়হীনতা ও বিশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এই কমিটি বাতিলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সাংগঠনিক নিয়ম-নীতির অীনুসরণ করা হয়নি। ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়া চেয়েছেন আর কমিটি বাতিলের ঘোষণা করে দিয়েছেন। কিন্তু কমিটি বাতিলের কোনো রকম শোকজ করা হয়নি। সেইসাথে যেখানে সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু বহাল রয়েছেন সেখানে তার স্বাক্ষর ছাড়াই কমিটি বাতিল করে দিয়েছেন। সর্বোপরি কোনো থানা কমিটি ইউনিয়ন কমিটি বাতিল করতে পারে কিনা সেটারও কোনো বৈধতা জানার প্রয়োজন পড়েনি। কোনো রকমের সাংগঠনিক নিয়ম ছাড়াই মন চাইলো আর কমিটি বাতিল করে দিলো। এ বিষয়ে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সুমন আকবর বলেন, আমরা এই কমিটির বাতিলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি কেন্দ্রের কাছে। কেন্দ্রের কাছে আমরা এই বিষয়টি অবগত করবো আমাদের উপর অন্যায়ভাবে এই কাজটি করা হয়েছে। আমরা এটা মানি না জোরপূর্বকভাবে এই কাজটি করেছে। গায়ের জোরে এই কাজটি করেছে। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে সাংগঠনিকভাবে বিচার চাইবো। তিনি আরও বলেন, এই কমিটি বাতিল করা হয়েছে মূলত জেলা সভাপতি সভায় না যাওয়ার জন্য। জেলা সভাপতি এখানে আসবেন আমরা কেউ জানি না। আমার কমিটির কেউই জানে না। আমি সাংবাদিক সম্মেলন করে বিষয়টি সকলকে অবগত করেছি। আমাদের থানা সভাপতিও জানে না। আমরা সভাপতির অনুমতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলাম। এজন্যই কোনো রকমের নিয়ম নীতি না মেনেই আমাদের কমিটি বাতিল করা হয়েছে। সুমন আকবর বলেন, আমাদের সভাপতি যেখানে আছেন সেখানে তাকে বাদ দিয়ে কিভাবে কমিটি বাতিল করে? তাদের বাতিল করার কোনো বৈধতা নেই। এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য গিয়ে গত ৫ আগস্ট দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে অব্যাহতি দিয়ে দেন। কিন্তু একজন সভাপতি তার সাংগঠনিক সম্পাদককে অব্যাহতি দিতে পারেন কিনা সে বিষয়ে তার জানা নেই। মন চাইলো আর সাংগঠনিক সম্পাদককে অব্যাহতি দিয়ে দিলো। পরে আবার ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু এই অব্যাহতি স্থগিত করেন। সেইসাথে রিয়াদ চৌধুরী তার দায়িত্বে ফিরেন। কিন্তু কেনইবা বহিষ্কার আবার কেনইবা ফিরিয়ে নেয়া তা নিয়ে জেলা বিএনপির মধ্যে নানা গুঞ্জন চলে। এ বিষয়ে বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম প্রধান বলেন, ফতুল্লা থানা কমিটির সভাপতি ছুটিতে যায়নি কিংবা অবসরেও যায়নি। তিনি থাকাবস্থায় সহ সভাপতির স্বাক্ষরে কমিটি বাতিল করলে এটা কতটুকু বৈধ হবে? এটা গ্রহণযোগ্যই হয় না। তাদেরকে স্বাক্ষরের ক্ষমতাও দেয়া হয়নি। কোন ক্ষমতায় তারা কমিটি বিলুপ্ত করে? তাদের রাজনৈতিক ন্যূনতম জ্ঞান থাকলে এটা করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, হাসিনার পতনের পর বারী ভূঁইয়া হঠাৎ করে রিয়াদ চৌধুরীকে বরখাস্ত করে। থানার সেক্রেটারি থানার সাংগঠনিক সম্পাদককে বরখাস্ত করে কিভাবে? তার করার এখতিয়ার নাই। উনারা উন্মাদ হয়ে গেছে। আমরা কেন্দ্রে কথা বলছি। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে এভাবে একের পর এক ছেলের হাতের মোয়ার মতো ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। নেতারা কোনে সাংগঠনিক নিয়ম নীতি মানছেন না। যখন যা মনে চাচ্ছে তাই করে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় বিএনপিরও তোয়াক্কা করছে না তারা।