আজ শুক্রবার | ৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৯ পৌষ ১৪৩১ | ২ রজব ১৪৪৬ | ভোর ৫:১০

গণতান্ত্রিক শিক্ষার দাবিতে সমজিতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সেমিনার অনুষ্ঠিত

ডান্ডিবার্তা | ২৮ অক্টোবর, ২০২৪ | ৭:৪৬ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

সর্বজনীন ,বিজ্ঞাভিত্তিক , গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, সেক্যুলার একই পদ্ধতির গণতান্ত্রিক শিক্ষার দাবিতে সমজিতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে আজ আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগারে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়নগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক সাইফুল সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বী, সরকারি তোলাম কলেজের প্রফেসর বিমল চন্দ্র দাস, সাংবাদিক ও কলামিস্ট ৯০”এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাকসুদ ইবনে রহমান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার, সরকারী তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী তামিম আহাম্মেদ , নারায়ণগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থী শিফা, কদম রসুল ডিগ্্রী কলেজের শিক্ষার্থী আহাম্মেদ রবিন স্বপ্ন  । নেতৃবৃন্দ বলেন, জুলাই’ অভ্যুত্থানে আবারও অপরিসীম আত্মত্যাগ আর সংগ্রামের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল এদেশের ছাত্রসমাজ, যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এই অভ্যুত্থান ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হলেও আসলে বাংলাদেশের নানা শ্রেণী পেশার মানুষ বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষসহ সকল ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল স্তরের লোকজন অংশ গ্রহন করে । তৈরি হয়েছিল ছাত্র, শ্রমিক-জনতার এক অভূতর্পূব মেলবন্ধন। কিন্তু মানুষ যে আকাঙ্খা থেকে জীবন দিলো , ছাত্র- শ্রমিকরা বুকের তাজা রক্ত দিলো সেই শ্রমিকদের সন্তানের জন্য কি রাষ্ট্র শিক্ষার পরিপূর্ণ আয়োজন রেখেছে? নগরে আগুন লাগলে দেবালয় যেমন রক্ষা পায় না, তেমনি রক্ষা পাচ্ছেনা দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর দেশের শিক্ষার হালচিত্রটি কেমন? বর্তমান শিক্ষার প্রধান ধারা বেসরকারি ও বাণিজ্যিক ধারা। এক কথায় বলা যায় টাকা যার শিক্ষা তার এই নীতিতেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। সংবিধানের ১৭নং অনুচ্ছেদে একই পদ্ধতির শিক্ষার কথা থাকলেও এখানে চলছে সাধারণ, ইংরেজী মাধ্যমিক, কারিগরি, ক্যাডেট ও মাদ্রাসা শিক্ষা নামক বিভিন্ন ধারা। ইউনেস্কোর সুপারিশ মতে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৬ ভাগ বরাদ্দের কথা থাকলেও এবছর আমাদের বরাদ্দ মাত্র ১.৭৬ শতাংশ , যেটা গতবারের চেয়ে .০৭ শতাংশ কম এবং দক্ষিণ এশিয়ার সর্বনিম্ন। ব্যান বেইজ ২০১৯ এর রির্পোট অনুযায়ী সম্পূর্ণ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনির পূর্বে ১৮% শিক্ষার্থী, দশম শ্রেণী সমাপ্তের আগে মাধ্যমিক শিক্ষার্থী প্রায় ৩৮% এবং দ্বাদশ শ্রেণী সম্পূর্ণ করার পূর্বেই  ২০% উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ঝরে পড়ে অর্থাৎ গড়ে প্রায় ৭০% শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক সম্পূর্ণ করার পূর্বে বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে পড়ে। এই ঝড়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধান করলে দেখা যায় এর মূল কারণ হচ্ছে দারিদ্র, আর্থিক অস্বচ্ছলতা। তাহলে যুগে যুগে ছাত্র জনতা যে বৈষম্যহীন শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য লড়েছে অর্থাৎ একটা সর্বজনীন শিক্ষা নীতি যেন প্রণীত হয় যার মাধ্যমে দেশের সকল ছেলে মেয়ের শিক্ষা সুনিশ্চিত হয়। কিন্তু তা কি এই আর্থ-সামাজিক পুজিবাদী কাঠামোতে সম্ভব? কমরেড রাজকেুজ্জামান তিনি আরও বলেন, বৃটিশ উপনিবেশিক শাসন প্রতি¯ হয় পাকিাস্ত্নি প্রায় -উপনিবেশিক শাসন দ্বারা। শুরু থেকেই ভাষা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকি¯’ানের অন্যায় শাসন-শোষণকে পাকাপোক্ত করার পায়তারাকে প্রশ্ন করে রখে দাঁড়িয়েছিল ছাত্ররা। ভাষা আন্দোলন প্রগতির ছাত্র রাজনীতির অন্যন্য মাত্রা যুক্ত করে, বুনিয়াদ গড়ে দেয় ভবিষ্যৎ লড়াইয়ের। তার এক দশক পরেই স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার শিক্ষানীতিতে ব্যপক রদবদলের সিদ্ধান্ত নেয়। গঠিত হয় শরীফ কমিশন। কমিশনের রিপোর্টে বলা হয় শিক্ষা সস্তায় ও সহজলভ্য বিষয় বলে বিবেচিত হবে না। অর্থাৎ শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে মুষ্টিমেয় কিছু ধনীর সন্তানদের জন্য শিক্ষা পরিচালিত হবে। এই ঘৃণ্য শিক্ষা বাণিজিকীকরণ-সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মোস্তফা, বাবুল, ওয়াজীউল্লাহ সহ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় সাময়িক বিজয়। তা স্বত্তেও শাসকশ্রেণির নানান আক্রমণ বহাল থাকে, বিপরীতে চলমান থাকে ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-জনতার ঐক্যবদ্ধ লড়াই। ছাত্র সমাজের আকাঙ্খা ছিল একটি সর্বজনীন-বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা, শ্রমিক-কৃষকদের আকাঙ্খা ছিল শোষণ-নিপীড়ন থেকে মুক্তি। এই সমস্ত লড়াইয়ের ঐক্যতান সংঘটিত করে গণঅভ্যুত্থান ও তার ধারাবাহিকতায় এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। স্বাধীন দেশে গত ৫ বছরে শাসকশ্রেণি গণ আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে দেশকে পরিচালনা করছে। লোক দেখানো গণতন্ত্রের আড়ালে সামরিক-বেসামরিক স্বৈরতন্ত্র, ন্যুনতম গণতান্ত্রিক অধিকার পর্যন্ত ভূলণ্ঠিত করা, মানুষকে মৌল-মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সহ পরিসেবা খাতগুলির বেসরকারিকরণ করে ক্রমান্বয়ে ব্যক্তি পুঁজির হাতে ছেড়ে দেয়া, শোষণ-লুন্ঠনের মধ্য দিয়ে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার প্রক্রিয়ার কষাঘাতে জর্জরিত জনজীবন। সর্বশেষ স্বৈরাচারী হাসিনার শাসন এসবের সাক্ষ্য বহন করে। এই দীর্ঘ সময়ে শাসকশ্রেণির অন্যায় রাজনীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে দমন-পীড়নে যুক্ত হওয়া ছাত্রদের যেমন একটা অংশ রয়েছে তেমনি তার বিপরীতে এই অন্যায় রাজনীতির বিরদ্ধে সোচার থেকে অব্যাহত লড়াই-সংগ্রাম পরিচালনা করেছে ছাত্রদের আরেকটি অংশ। সম্প্রতি এক রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিদায় হয়েছে। রফিউর রাব্বী বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও এই রাষ্ট্র মুক্তিযুদ্ধে তার ঘোষিত অূঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। সবার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার বদলে এগুলোকে বাজারি পণ্যে পরিনত করেছে। শিক্ষাখাতে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ কমেছে। শিক্ষা লাগামহীনভাবে হয়ে পড়েছে ব্যয়বহুল। ক্রমাগত বাড়ছে বেতন-ফি, নামে বেনামে নানান খাতে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। বর্তমান সময়ে কাগজসহ শিক্ষা উপকরণের দাম আকাশচুম্বি। বই, খাতা, কলমসহ শিক্ষা উপকরণের অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধিতে হিমশিম খাচ্ছে ছাত্র সমাজ তথা দেশের মানুষ। দেশে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা বিরোধী সাম্প্রদায়িক শিক্ষার প্রসার ঘটেছে।শিক্ষার বিষয়বস্তুতে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে কূপমন্ডুক, অবৈজ্ঞানিক, সাম্প্রদায়িক বিষয়বস্তু।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:১৯
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:২৭
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:২৪
  • ১২:০৬
  • ১৫:৪৬
  • ১৭:২৭
  • ১৮:৪৫
  • ৬:৪১
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা