আজ রবিবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ | সকাল ১১:২৯

মতির ছাত্রছায়ায় শাহ আলম মানিক শত কোটি টাকার মালিক

ডান্ডিবার্তা | ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:৩১ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

সিদ্ধিরগঞ্জে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের যে কয়েকজন আস্থাভাজন আওয়ামী লীগ নেতা ছিল তাদের মধ্যে থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি অন্যতম। সিদ্ধিরগঞ্জে এই মতির ছিল বিশাল এক বাহিনী। শামীম ওসমানের আস্থাভাজন হওয়ায় মতি বাহিনী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে। শামীম ওসমানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনে থানা যুবলীগের সভাপতি মতির ছায়াতলে থেকে অনেকেই ইপিজেড, ওষুধ কোম্পানি, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, বিদ্যুৎ, পাওয়ার প্লান্ট, জমি-জমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল কাজে ব্যস্ত ছিল। যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুমিলপাড়া আইল পাড়া এলাকার মৃত কাদির মেম্বারের ছেলে শাহ আলম মানিক। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মতির ছায়াতলে থেকে এই মানিক ও তার ভাই হানিফ ছিল আইলপাড়ার মতিউর রহমান মতির অন্যতম সহযোগী ও অঘোষিত যুবলীগ নেতা। মতির নাম ভাঙ্গিয়ে আইলপাড়া এলাকার বিভিন্ন মানুষের জমি দখল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলেও শাহ আলম মানিক ও হানিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি ও শামীম ওসমানের সমাবেশে মতির নেতৃত্বে বিশাল লোকবলও সরবরাহ করতেন শাহ আলম মানিক। স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০০২ সালের দিকে ব্যাংক লোন থাকায় নিলামে উঠে শাহ আলম মানিকের বসতবাড়ি। পরে মতির সুপারিশের মতির বাড়ির সামনে সাতঘোড়া সিমেন্ট কারখানায় শ্রমিক হিসেবে চাকরি পান শাহ আলম মানিক। কোম্পানির হিসাবে গড়মিল থাকার অপরাধে সাতঘোড়া থেকে চাকরি হারান শাহ আলম মানিক। পরে আর কোথাও  চাকরি না করে যোগ দেন মতির সাথে ব্যবসা বাণিজ্যে। বিগত ষোল বছর মতির শেল্টারে তেল সেক্টর, ঝুট সেক্টর, ভূমিদস্যুতা, দখল, চাঁদাবাজিসহ হেন কোনো কাজ নেই যেখানে পাওয়া যায়নি শাহ্ আলম মানিককে। এসব অবৈধ কারবারের মাধ্যমে অঢেল ধন সম্পদেরও মালিক বনেছেন তিনি।স্থানীয়রা আরও জানান, গত ষোল বছরে সিদ্ধিরগঞ্জে সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব গড়ে তুলেছিলেন শামীম ওসমানের দোসর সন্ত্রাসী মতি। কাউন্সিলর মতি এলাকায় না থাকায় বিএনপি নেতা সেজে বর্তমানে তার সেই সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রক শাহ আলম মানিক। মতির সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসীদের নিয়ে ইপিজেডে মহড়া থেকে শুরু করে তেল সেক্টর, ভূমিদস্যুতা, দখল ও চাঁদাবাজিতে এককচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে কিতর্কিত এই ব্যক্তি। বর্তমানে তিনি নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে বিভিন্ন সেক্টরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সূত্র বলছে, ৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসী মতি পালিয়ে গেলেও সিদ্ধিরগঞ্জে বিশেষ করে আদমজী ইপিজেডে তার প্রভাব এখনও রয়ে গেছে। বিশেষ করে বেপজার এক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে তার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। ফলে মতি বিভিন্ন ফ্যাক্টরীতে তার স্থালাভিষিক্ত করাচ্ছেন শাহ আলম মানিককে। এতে তাকে আরও সহযোগিতা করছেন বেপজার সেই শীর্ষ কর্মকর্তারা এমন অভিযোগ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, শাহ আলম মানিক ইতোমধ্যে ইপিজেডের বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টরীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছেন। মতির সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নিয়মিত মহড়াও দিচ্ছেন তিনি। নিজেকে তিনি দাবি করছেন বিএনপি নেতা। যদিও এই দলের সঙ্গে গত ষোল বছর তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। বর্তমানেও এই দলের কোথাও কোনো পদ নেই শাহ আলম মানিকের। তারপরও তিনি নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে দখল, চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছেন। এতে করে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিএনপির পরিচয়ে দিয়ে বেড়ানো শাহ আলম মানিক দলের কেউ নন বলে সম্প্রতি বিবৃতিতে  জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এতে জানানো হয়, বিগত ষোল বছরের সময়গুলোতে তিনি সন্ত্রাসী মতির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে নির্বিঘ্নে ব্যবসা বাণিজ্য, দখল, চাঁদাবাজি করে গেছেন। এসব অপকর্মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পাদও গড়েন তিনি। লেক্সাস ব্র্যান্ডের গাড়ী, ট্যাংকলরী, জাহাজ, একাধিক ফ্ল্যাট, কদমতলী ও আইলপাড়ার রেহান উদ্দিন রেহানের বাড়ির পেছনের জমিসহ প্রায় শতকোটি টাকার সম্পদের মালিক তিনি। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তার ছয়টি বাড়ি দখলে রয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, সিদ্ধিরগঞ্জের আইলপাড়া এলাকায় মতির শেল্টারে রেলওয়ের জমি দখল করে নিয়ে সেখানে অটো রিকশার গ্যারেজ করেন শাহ আলম মানিক। শীতলক্ষ্যা নদীর সীমানা পাড়ে জমি দখল করে শাহ সিমেন্ট রেডিমিক্স কারখানা, বিহারীদের জমি জাল দলিলের মাধ্যমে সৃজন করে, চরশিমুলপাড়া ডক ইয়ার্ডের সরকারি খাস জমি অরিয়ন, ডাচ বাংলা নামের গ্রুপ অব কোম্পানির কাছে বিক্রি অভিযোগ রয়েছে মতিসহ এই চক্রের সঙ্গে শাহ আলম মানিকও প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুসন্ধানের পর দুদকের মামলায় আসামী হয়েছেন কাউন্সিলর মতি। এবিষয়ে দুদক সে সময়ের তার ব্যাংক লেনদেনে শাহ আলম মানিক, তার ভাই হানিফ ও তার বোনের ব্যাংক একাউন্ট চেক করলে শাহ আলম মানিকের আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি বেরিয়ে আসবে। প্রসঙ্গত, একাধিক মামলার আসামি হয়েও বিগত ষোল বছর ধরে মতির শেল্টারের কারণে সুরক্ষিত ছিল শাহ্ আলম মানিক। ২০০৫ সালে বিস্ফোরক ও অস্ত্রসহ একাধিক মামলার এজাহারভূক্ত আসামি হওয়ার পরও মতির শেল্টার থাকায় গত ষোল বছর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারও করেনি। যার অস্ত্র ও বিস্ফোরক মামলার নং-১৫ এবং ১৬ তারিখ ১২-০৯-২০০৫। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালিয়ে হত্যার অভিযোগে শাহ আলম মানিকের বিরুদ্ধে ফতুল্লা সহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে শাহ আলম মানিকের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ভাই আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং আইনজীবি। বিএনপি করার অপরাধে বিগত আওয়ামীলীগের আমলে আমার বিরুদ্ধে প্রায় ২০টির অধিক মামলা হয়েছিলো। আমার বাবা যে সম্পত্তি রেখে গেছেন সেই সম্পদই আমার কাছে অনেক। তাহলে আমি কেন এ সকল কর্মকান্ডে জড়াবো। আওয়ামীলীগের আমলে আমি একজন বিএনপি নেতা কিভাবে তাদের সাথে থেকে কাজ করার সুযোগ পাবো। ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমানে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত। উপরোক্ত অভিযোগগুলো সত্য নয়।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:১৪
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৯
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১১
  • ১১:৫৯
  • ১৫:৪০
  • ১৭:১৯
  • ১৮:৩৮
  • ৬:৩৬
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা