আজ শুক্রবার | ১ নভেম্বর ২০২৪ | ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬ | রাত ১১:৩৬

না’গঞ্জে অস্তিত্ব সংকটে লঞ্চ পরিবহন

ডান্ডিবার্তা | ০১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:০৮ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জ লঞ্চঘাটে দুপুরে মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চ ‘ইরানী’ এসে ভিড়ে। একে একে নামলেন মাত্র ১৫ জন যাত্রী। অথচ লঞ্চটিতে ৬০ জন যাত্রীর বসার সিট রয়েছে। এত কম যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি তার তেল খরচ তুলতে পেরেছে কিনা জানতে চাওয়া হয় সারেংয়ের কাছে। লঞ্চের সারেং আব্দুল হামিদ বলেন, ‘প্রায় ১১০০ টাকার তেল খরচ হয়েছে ৪০ মিনিটের যাত্রায়। এই যাত্রীতে লঞ্চের তেল খরচও উঠে না। লঞ্চ মালিকের সম্পদ। এটা এখন গলার কাটা। লঞ্চ চালাইলে খরচ, বসায়া রাখলে নষ্ট হবে। মালিক আশায় চালায় যে সামনের দিনগুলো ভালো হবে। এভাবে মালিকের অনেক লোকসান হচ্ছে। এই লাইনে ২৮টা লঞ্চ ছিল। এখন মাত্র ৭টা লঞ্চ চলে। করোনার পর থেকে ব্যবসা মন্দা। লঞ্চ ভাঙারি হিসেবে বিক্রি করে ফেলেছে। ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালের এই চিত্র নিত্যদিনের। এককালে বরিশালসহ দূরপাল্লার লঞ্চ এই ঘাট থেকে ছেড়ে গেলেও বর্তমানে মাত্র পাচটি রুটে চলছে লঞ্চ। এর মধ্যে কেবল চাঁদপুর রুটে কিছুটা লাভের দেখা পেলেও বাকি চারটি রুট লাভজনক নয় বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ, মতলব, চাঁদপুর, নড়িয়া ও রামচন্দপুর রুটে লঞ্চ চলাচল চালু রয়েছে। লঞ্চের যাত্রীরা বলছেন, ‘দিন দিন লঞ্চে যাত্রীর সংখ্যা কমছে। এর কারণ একদিকে সড়কপথে যোগাযোগ উন্নত হয়েছে। অন্যদিকে ছোট লঞ্চে যাত্রীরা কিছুটা ভয় পায়। এই কারণে লঞ্চ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন অনেক যাত্রী।’ সাম্প্রতিক সময়ে দুটি লঞ্চ দুর্ঘটনার পর যাত্রীদের দাবি ছিল বড় লঞ্চ নিয়ে আসা। সেই দাবির প্রেক্ষিতে চাঁদপুর ও নড়িয়া রুটে যুক্ত হয়েছে চারটি বড় লঞ্চ। কিন্তু সেই লঞ্চগুলোও আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছে না বলে জানিয়েছেন খোদ লঞ্চের কর্মচারীরা। ৭৫টি লঞ্চ থেকে কমতে কমতে মাত্র ৩১টি লঞ্চ টিকে আছে। বাকিগুলো স্ক্র্যাব করে কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন মালিকরা। চাঁদপুরের রুটের লঞ্চ ব্যতীত বাকিগুলোও যেকোন সময় বিক্রি করে দেয়া হবে বলে জানাচ্ছেন তারা। নড়িয়া লঞ্চের সারেং এনামুল হক বলেন, ‘লোক এখন অনেক কম। পদ্মা সেতু হওয়ার পর লঞ্চের করুণ অবস্থা। অনেকে ছোট লঞ্চে ভয় পায়। কিন্তু আগে তো ছোট লঞ্চই চলেছে। মালিকরা আয় পাচ্ছে না, লঞ্চ শ্রমিকদের করুণ অবস্থা। কোনমতে জীবন যাপন করছি। আমাদের বড় লঞ্চ তুলনায় যাত্রী অনেক কম। মালিক লাভবান হতে পারছে না। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছি। নতুন সরকার যদি কোন ব্যবস্থা নেয় তাহলে উপকার হয়।’ লঞ্চ ব্যবসায় হতাশা প্রকাশ করে বাংলাদেশ নৌপরিবহন (যাত্রী) সংস্থার সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৭৫টা লঞ্চ চলতো। এখন মাত্র ৩১টা লঞ্চ চলে। সড়ক উন্নত হওয়ায় সবাই লঞ্চ বিমুখ হয়েছে। এই অবস্থায় কতদিন টিকে থাকতে পারবো জানি না। দিন দিন যাত্রীর সংখ্যা কমছে। আমার মতে, লঞ্চঘাটগুলো ইজারা দিয়ে ঘাটগুলো টর্চার সেল বানিয়ে ফেলেছে। যাত্রীদের হাতে চাল, ডাল, গম নিয়ে আসে। কিন্তু ঘাটের ইজারাদারের লোকজন জুলুম করে টাকা আদায় করে। এই কারণে অনেকেই লঞ্চে যেতে চায় না। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উপদেষ্টাকে বলেছিলাম, নদী বন্দরের ইজারাগুলো বাতিলের আবেদন করেছিলাম। এর মাধ্যমে ৮০ ভাগ গ্রামের মানুষ চলাচলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। পাশাপাশি সরকারকে জানিয়েছি ট্যাক্স ও সার্ভিস চার্জ যেন মওকুফ করে দেয়। নাহলে লঞ্চ বা মালবাহী জাহাজ টিকে থাকতে পারবে না।’ তবে ঘাটে বাড়তি টোল নেয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বাড়তি চার্জ নেয়ার সুযোগ নেই। আমাদের মূল্য তালিকা রয়েছে প্রবেশ পথে। কারও থেকে যদি বাড়তি অর্থ নেয় এবং এর প্রমাণ যদি আমাদের কাছে উত্থাপন করতে পারে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিব। প্রয়োজনে ইজারা বাতিল করে দেয়া হবে।’




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৪৬
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:২৩
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৫১
  • ১১:৪৫
  • ১৫:৪৩
  • ১৭:২৩
  • ১৮:৩৮
  • ৬:০৪
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা