আজ বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ | বিকাল ৫:৪৯

সাড়ে তিন দশকে ফতুল্লা বিএনপির রাজনীতি

ডান্ডিবার্তা | ১১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:১৪ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্চ:

নব্বই দশক থেকে অদ্যাবধি ফতুল্লা থানা বিএনপির নেতৃত্বে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এই পরিবর্তনে দেশের বৃহত্তম এই দলটির এখানে সাংগঠনিক দুর্বলতা যেমন বেড়েছে তেমনিভাবে কমেছে নেতৃত্বের গুণগতমান। এর ফলে এখানে সর্বত্র বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে বলে দাবী করছেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, যোগ্য নেতৃত্বের কারণে যে কোনো দল সাংগঠনিকভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠে। কিন্তু ফতুল্লা বিএনপি বর্তমানে সাংগঠনিক অদক্ষতায় সর্বত্রই বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। দলকে সুশৃঙ্খল ও সাংগঠনিকভাবে তৎপর করতে হলে যোগ্য ও শিক্ষিত ব্যক্তির বিকল্প নেই বলেই তারা মনে করেন। সূত্র বলছে, নব্বই দশকের শুরুর দিকে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে আসেন আলীরটেকের বাসিন্দা খোরশেদ আলম। তিনি ছিলেন একজন সুশিক্ষিত ও সাংগঠনিকভাবে একজন দক্ষ ব্যক্তিত্ব। এমএ পাস খোরশেদ আলমের নেতৃত্বাধিন ফতুল্লা থানা বিএনপি এক দশক ছিল সুশৃঙ্খল। এরপর দলটির নেতৃত্বে আসেন অধ্যাপক খোন্দকার মনিরুল ইসলাম। অত্যন্ত নম্র ও ভদ্র হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত এই ব্যক্তি ছিলেন সাংগঠনিক দক্ষ একজন নেতা। অধ্যাপক মনিরুল ইসলামের পর ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি হয়েছিলেন শিল্পপতি শাহ আলম। তিনিও ছিলেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, ওই তিন নেতা অ্যাকাডেমিকভাবে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত থাকায় তাদের নেতৃত্বও ছিল ভিন্নধারার। তাদের আচার-আচরণও ছিলো সভ্যতা। অন্যের প্রতি ছিল তাদের সম্মান ও শ্রদ্ধা। তাদের ঘিরে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী, কালোবাজারি, ভূমিদস্যু কিংবা চাঁদাবাজ বা মাদক করবারিদের আনাগোণা ছিল না বললেই চলে। তবে এই তিনজনের পর যে দুজন ফতুল্লা থানা বিএনপির নেতৃত্বে এসেছেন তাদের কারোরই অ্যাকাডেমিক ব্যাগ্রাউন্ড নেই। তাদের আচার-আচরণও রূক্ষ্ম। শুধু তাই নয়, সাংগঠনিক দক্ষতা এই দু নেতার একদমই নেই যার কারণে পুরো ফতুল্লাজুড়ে বিএনপি এখন অত্যন্ত নাজুক পরিস্থিতির মুখোমুখি। সূত্র মতে, খোরশেদ আলম, অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম এবং শাহ আলমের পর ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছিল জাহিদ হাসান রোজেলকে। অ্যাকাডেমিকভাবে তিনি আন্ডারমেট্রিক। বর্তমানে এখানকার সভাপতি হিসেবে রয়েছেন শহীদুল ইসলাম টিটু। তিনিও আন্ডারমেট্রিক। জানা গেছে, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটুর রাজনৈতিক গুরু বিএনপি থেকে দলছুট দেওয়া মনিরুল আলম সেন্টু। স্থানীয় পর্যায়ে ‘নোয়াখাইল্লা টিটু’ হিসেবে পরিচিত তিনি। কুতুবপুরের নয়ামাটি এলাকার বাসিন্দা এই টিটুর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসারও অভিযোগ শোনা যায়। মনিরুল আলম সেন্টুর শেল্টারে নয়ামাটি এলাকার মাদক স্পট এই টিটু চালাতেন বলে আলোচনা রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগও শোনা যায়। ভূমিদস্যুতার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে বিস্তর। সম্প্রতি তার ভূমি সন্ত্রাসের কবলে পড়ে এক যুবক আত্মাহ্যতার চেষ্টাও করেছিলেন। সূত্র বলছে, ঢাকার হাতিরপুলে ইষ্টার্ন প্লাজায় শহীদুল ইসলাম টিটুর দোকান থাকার সুবাধে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের এক নেতার সঙ্গে তার সখ্যাতা গড়ে উঠে। সেই নেতাকে ম্যানেজ করে, অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির পদ বাগিয়ে আনেন বহু বিতর্কে বিতর্কিত শহীদুল ইসলাম টিটু। বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, টিটু ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি হয়ে আসার পর থেকেই থানা প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তিনি তার বল ভারী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে বিতর্কিতদেরকে পদায়ন করেন। যদিও এই পদায়নের পিছনেও অর্থ বাণিজ্যের যোগসূত্র রয়েছে। সব থেকে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে, বিএনপির মহাসচিবের বিরুদ্ধে মামলা করা নজরুল ইসলাম মাদবরকে নেতৃত্বে আনা। পুরো কুতুবপুরজুড়ে এই মাদবর একজন চিহ্নিত ভূমিদস্যু। তিনিও চেয়ারম্যান সেন্টুর আস্থাভাজন ব্যক্তি। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, শহীদুল ইসলাম টিটুর সাংগঠনিক দক্ষতা নেই বললেই চলে। অনেকের কাছে তিনি নীরব চাঁদাবাজ ও স্ট্যান্টবাজ হিসেবে পরিচিত। সিদ্ধিরগঞ্জের একটি কর্মসূচিতে তার চোখের পাশ ঘেঁষে ছড়া গুলি লাগাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঁদাবাজিও করেছিলেন তিনি। তার দাবি ছিল সেই গুলি তার চোখে বিদ্ধ হয়েছে। চোখ অপারেশনের কথা বলে দল এবং দলের বাইরে অনেকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন তিনি। যার পরিমাণ ন্যুনতম ৫০ লাখ টাকা। পরে তিনি চোখের অপারেশনের কথা বলে ভারত গমণ করেন। সেখানে তার চোখে অপারেশন করা হয় তবে গুলি নয় সেটি ছিল সানি অপারেশন। গুলি নাটকের পূর্বেই তার চোখের সানি অপারেশনের কথা ছিল। তার চিকিৎসা সক্রান্ত ব্যবস্থাপত্র যাচাই বাছাই করলে এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। সূত্র জানায়, জুলাই-আগস্টে যখন উত্তাল বাংলাদেশ এবং এর আগে থেকে চোখের দোহায় দিয়ে রাজনীতির মাঠে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান শহীদুল ইসলাম টিটু। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেন তিনি। এবং বিভিন্ন স্থানে দখল ও চাঁদাবাজি এবং ভূমিদস্যুতায়ে মেতে উঠেন তিনি। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দাবি করেন, বর্তমানে টিটুর কবলে পড়ে ফতুল্লা থানা বিএনপির নাজুক অবস্থা। সাংগঠনিকভাবে এখানে এই দলটির যাচ্ছেতাই পরিস্থিতি। টিটুও মানছেন না জেলা বিএনপির নেতৃত্ব। এতে করে দলের মধ্যে বাড়ছে বিশৃঙ্খলা। সুতরাং এখানে দ্রুত সময়ের মধ্যে নেতৃত্বের পরিবর্তন আনা অত্যাবশ্যক। তা না হলে ফতুল্লা বিএনপিতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৫৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৫
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০২
  • ১১:৪৭
  • ১৫:৩৬
  • ১৭:১৫
  • ১৮:৩১
  • ৬:১৬
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা