আজ বুধবার | ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ | সকাল ১১:৩১

ভয়ংকর সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি

ডান্ডিবার্তা | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:৫৫ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জের এক ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমান। তার নিয়ন্ত্রণে ছিল অবৈধ অস্রের ব্যবসা, ভ’মিদস্যুতা, একাধিক হত্যা ও চাঁদাবাজির জন্য বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। অভিযোগ রয়েছে, ২০০০ সালের ১৯ নভেম্বর নগরীর ইসদাইর ওসমানী স্টেডিয়ামের সামনে সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমান কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে খুন করে তারই এক সময়ের বন্ধু আলমগীরকে। এ ছাড়া ২০০৯ সালের এপ্রিলে শহরের আমলাপাড়ায় ১৪ টুকরা অজ্ঞাত লাশ পাওয়া যায়। মামলা হলেও পুলিশ এই খুনের রহস্য আজো উদঘাটন করতে পারেনি। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও আজমেরী ওসমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল গাজীপুরে শামীম ওসমানের শীর্ষ ক্যাডার নুরুল আমিন মাকসুদের লাশ পাওয়া যায়। তাকে আজমেরী ওসমান খুন করেছেন বলে নারায়ণগঞ্জে প্রচার রয়েছে। ২০১১ সালে শহরের প্রেসিডেন্ট রোডে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে গলা কেটে খুন করা হয় অটোচালক জামালকে। অবৈধ অস্ত্র ও মাদক পরিবহনে রাজি না হওয়ায় আজমেরী ওসমান বাহিনী তাকে খুন করে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হলেও তাকে মামলায় আসামি করা হয়নি। একই বছরের ১১ মে শীতলক্ষ্যা নদীতে ব্যবসায়ী আশিক ইসলামের লাশ পাওয়া যায়। তার মুখমন্ডল ঝলসানো এবং বিশেষ অঙ্গ ছিল থেঁতলানো। এই হত্যাকান্ডেও আজমেরী ওসমান জড়িত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। আশিক হত্যার পর ২০১১ সালের মে মাসের শেষ দিকে শীতলক্ষ্যা নদীতে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবকের লাশ পাওয়া যায়। সে সময় নারায়ণগঞ্জ শহরে প্রচার হয়, এই দুটি লাশ আশিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত ভাড়াটে খুনির। হত্যার আলামত মুছে ফেলতে তাদের খুন করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ২৯ জানুয়ারি তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর শীতলক্ষ্যা নদীতে টানবাজারের রং-সুতা ব্যবসায়ী গোবিন্দ সাহা ভুলুর লাশ পাওয়া যায়। চাঁদা না দেওয়ায় তাকে হত্যা করা হয় বলে তার ভাই চিত্তরঞ্জন সাহা সে সময় জানিয়েছিলেন। তাকে খুন করে আজমেরী ওসমান বাহিনী ২০১২ সালের ১৫ জুলাই গাবতলী এলাকার বাসিন্দা মিঠুকে শহরের জামতলা ধোপাপট্টি এলাকায় হিরা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে প্রকাশ্যে খুন করে আজমেরী ওসমান বাহিনী। তিনি গাবতলী এলাকায় আজমেরীর অনুগত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। মিঠুর বাবা খোরশেদ আলম তখন জানিয়েছিলেন, ফতুল্লা থানার ওসি তাকে দেখান আজমেরী ওসমানের নাম দিলে মামলাই নেয়া হবে না। মিঠুকে হত্যার পরদিনই সাংস্কৃতিক কর্মী দিদারুল আলম চঞ্চলকে খুন করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শামীম ওসমানের পক্ষে কাজ না করে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে কাজ করায় তাকে হত্যা করা হয়। চঞ্চলের ভাই জুবায়ের ইসলাম পমেল জানান, চঞ্চলের লাশ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বন্দর থানার ওসি অজ্ঞাত হিসেবে লাশ দাফন করে বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করেন। ২০১৩ সালের ৬ মার্চ চাষাঢ়ায় সুধীজন পাঠাগারে যাওয়ার পথে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে অপহরণ করা হয়। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী পোতাশ্রয় থেকে তার লাশ পাওয়া যায়। এ হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া আজমেরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এতে সে জানায়, শহরের কলেজ রোডের টর্চার সেলে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বেই ত্বকীকে খুন করা হয়। ২০১৩ সালের নভেম্বরে ১ নম্বর বাবুরাইল থেকে নিখোঁজ হন নাট্যকার মামুনুর রশীদের আত্মীয় আসিফ। আজমেরী ওসমান বাহিনী তাকে গুম করে বলে অভিযোগ রয়েছে। ত্বকী হত্যার ঘটনায় র‌্যাব আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে খসড়া চার্জশিটও দিয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার অলিখিত নিষেধাজ্ঞা থাকায় কখনও গ্রেফতার হননি আজমেরী ওসমান। এমনকি হত্যা মামলায় তার নাম দিতে চাইলে সেই মামলাও নেয়া হতো না। গত ৫ আগস্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আজমেরী ওসমান বর্তমানে পলাতক রয়েছে। এদিকে আজমেরী ওসমান পলাতক থাকলেও তার বাহিনীর অপর সন্ত্রাসী বন্দরের মদনপুর ফুলহরের ডন ভূমিদস্যু ও পরিবহন চাঁদাবাজ আমির হোসেন এখনো বহাল তবিয়তে। সে মদনপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর আজেমী ওসমানের অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায় সন্ত্রাসী আমির ও তার বাহিনী। তার কাছে আজমেরী ওসমানের অস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সন্ত্রাসী আমির হোসেন মদনপুর ফুলহর (নাসিক) ২৭নং ওয়ার্ডের মৃত সরাফত আলী মেম্বারের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, এক সময় হিমালয় ট্রান্সপোর্ট কোম্পানীর কাউন্টারে বসে টিকেট বিক্রি করতো। নারায়ণগঞ্জের ত্রাস আজমেরী ওসমানের সহযোগী হয়ে শুরু করে পরিবহন নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজি। কিছু দিনের মধ্যে সে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যায়। সে মদনপুর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। সে নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানের শেল্টারে গড়ে তুলতে শুরু করে অস্ত্রের মহড়্া ভূমিদস্যুতা ও চাঁদাবাজি। সে বিগত দিনে স্ট্যান্ড দখল নিয়া মদনপুর ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার খলিলকে কয়েকবার প্রকাশে হামলা করে এবং হত্যার চেষ্টা করে। মদনপুর স্ট্যান্ডের দোকানের চাঁদা ও সিএনজি অটো বাইকের চাঁদাবাজি নিয়ে প্রকাশ্যে খলিল মেম্বারকে এলোপাথারি কুপিয়ে জখম করে। সে আজমেরী ওসমানের নির্দেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসবাহিনী দিয়ে লোক ধরে এনে তার টর্চারশেলে নিয়ে মারধর করে হাতিয়ে নিত মোটা অংকের টাকা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনে আওয়ামী সরকার পতনের আগের দিন রাতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানের লালিত সন্ত্রাসবাহিনীর মাধ্যমে দেশী-বিদেশী অস্ত্র মদনপুর শীর্ষ ত্রাস উত্তরাঞ্চলের ডন আমিরের কাছে জমা রাখে। এ সন্ত্রাসী আমিরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। সে তার বাহিনী নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য নামধারী আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেন। এই সকল অস্ত্রগুলি নারায়ণঞ্জের সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানের বাহিনী সরবরাহ করে। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পরও মদনপুর, ফুলহর, মুরাদপুর, দেওয়ানবাগ, চেঙ্গাইন ও অলিপুরা কান্দাপাড়া গ্রামের মানুষের মধ্যে এখনো আতংক বিরাজ করছে। এবার আজমেরী ওসমানের অস্ত্র উদ্ধারে মাঠে নেমেছে যৌথ বাহিনী। এ ব্যপারে জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, স্বৈরশাসকের চারণভূমি ছিল নারায়ণগঞ্জ। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার সমর্থনেই শামীম ওসমান গডফাদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার বিশাল বাহিনী ছিল যারা অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত থাকতো। সে ও তার ভাতিজা আজমেরী ওসমান বাহিনীর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়েও তার অস্ত্রের শোডাউন নারায়ণগঞ্জাবাসী প্রত্যক্ষ করেছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:০০
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৪
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০৫
  • ১১:৪৯
  • ১৫:৩৫
  • ১৭:১৪
  • ১৮:৩১
  • ৬:২০
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা