
হাবিবুর রহমান বাদল
স্বৈরাচারী সরকারের পতনের চার মাস পূর্তি ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। জুলাই বিপ্লবের মুল আকাংখা ছিল পরিবর্তন। সাধারন মানুষের সামনে অন্তর্বর্তিকালিন সরকার তেমন সাফল্য তুলে ধরতে পারেনি। জুলাই বিপ্লবে রাজনৈতিক দলগুলির চাইতে ছাত্র-জনতার প্রত্যক্ষ অংশগ্রহ ছিল সব চেয়ে বেশী। তবে রাজনৈতিক দলগুলির অবদানকে অস্বীকার করার উপায় নেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জুলাই বিপ্লবকে সমর্থন জানিয়ে ছিল। জাতীয়পার্টি ছাড়া অন্য সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। পনের বছর রাজনৈতিক দলগুলো হামলা মামলার শিকার হয়েছে বারবার। বিশেষ করে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে হামলা মামলার শিকার হয়েছে। গুম খুন হয়েছে কয়েকশত নেতাকর্মী। জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার পাশে নেমে আছে দেশের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। সন্তানকে আন্দোলনে সাহস যোগিয়েছে পিতা-মাতা। এ যেন ভিন্ন ধরনের সংগ্রাম। সাধারণ মানুষ। ছাত্রদের কোটা বিরোধী আন্দোলনে শরীক হয়েছিল স্বৈরাচার আওয়ামী শাসনের দু:শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এমন পর্যায়ে পৌছে যে, খোদ শেখ হাসিনারও চাকর ৪শ’ কোটি টাকার মালিক বলে নিজেই স্বীকার করেন। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধগতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা প্রশসন দলীয় করণ, হাট-মাঠ-ঘাট আওয়ামীলী চেলা চামুন্ডাদের দখলে ছিল। এমতাবস্থায় দেশের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে সুবিধাভোগী কিছু আওয়ামী ঘরানার চাটুকার ছাড়া দেশবাসী অসহায় হয়ে বিকল্প খুজতে থাকে। পনের বছর বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলি বারবার আওয়ামী বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে সফলতা পায়নি। ঠিক এ সময়ে ছাত্ররা কোটা বিরোধী আন্দোলনে নামে। মধ্য জুলাই থেকে আওয়ামী পেটোয়া বাহিনী ও তাদের দলীয় সন্ত্রাসীদের ছাত্রদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিলে রংপুরে দেশ প্রেমিক আবু সাঈদসহ একাধিক ছাত্র নিহতের ঘটনা ঘটে। আবু সাঈদের এই নির্মম হত্যাকান্ডে দেশবাসী জেগে উঠে। ছাত্রদের সাথে অংশ নেয় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। এসময় বিএনপিসহ গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দলগুলিও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন জানায়। মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে দেড় সহ¯্রাধীক ছাত্র-জনতা নিহত হয় এবং আহত হয় ৩০ হাজারেরও বেশী। এসময় গণমাধ্যমে কতিপয় দলবাজ চাটুকার পুরো ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করলেও দেশবাসী আওয়ামী দু:শাসনের হাত থেকে বাঁচার জন্য রাজপথে নেমে আসে। স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় দেশে হঠাৎ করে কারফিউ জারি করে দেখামাত্র গুলি নির্দেশ দিয়ে সেনা বাহিনীকে মাঠে নামায়। সেনা বাহিনী স্পষ্ট জানিয়ে দেয় তারা জনগণের বিপক্ষে অবস্থা নেবে না। ৫ আগষ্ট ভোর থেকে লাখ লাখ আবার বৃদ্ধ বনিতা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সামিল হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে এমতাবস্থায় শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের এতিম করে কাউকে না জানিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করে। সাধারণ মানুষ শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর দু:শাসনের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে হাফ ছেড়ে বেঁচেছে মানে করে ধারণা করেছিল এবার পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রশাসনের অধিকাংশ পদেই এখনো সেই স্বৈরাচারের দোসররা ভোল পাল্টে থাকায় আগের মতই সর্বত্র ঘুষ, দুর্নীতি চলছে। পুলিশের আক্রমনাত্বক আচরনের কারণে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বেশ কয়েক মাস আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে কোন শৃঙ্খলা ছিল না। অন্তর্বতিকালীন সরকার যৌথ বাহিনী মাঠে নামানোর পর পুলিশ বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খরা ফিরে আসতে শুরু করেছে। দ্রব্যমূল্য এখনো নিয়ন্ত্রণহীন। সাধারণ মানুষের মধ্যে ত্রাহী অবস্থা। এক কথায় এত রক্তপাত যে কারণে সাধারণ মানুষ ঝড়ালো তার প্রতিফলন একেবারেই দেখা যাচ্ছে না। তার উপর আওয়ামীলীগের ষড়যন্ত্রের সাথে পার্শবর্তি রাষ্ট্র গভীর চক্রান্ত শুরু করেছে। অন্তর্বতিকালীন সরকারের অধিকাংশ উপদেষ্টার কাজ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকেই বলেছে, এত প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত জুলাই বিপ্লবের সাফল্য আসলেও আমরা কি পেলাম? সকলের একই কথা, হাট-মাঠ-ঘাট তথা বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনে পরিবর্তন আসলেও অবস্থার পরিবর্তন ঘটেনি। রাতারাতি আওয়ামীলীগের বিভিন্ন দোসর জাতীয়পার্টির দোসররা ভোল পাল্টে বিএনপি বনে গেছে। আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে দেখা যায়নি কিংবা আওয়ামীলীগের সাথে গোপন আঁতাতের মাধ্যমে বহাল তবিয়তে ছিল তারাই এখন বড় জাতীয়তাবাদী। মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী বিএনপি নেতাকর্মীরা আগের মতই চলছে। শুধু বলা চলে এখন তারা গোপনে না চলে প্রকাশ্যে চলছে। সাধারণ মানুষের কোন পরির্বতন ঘটেনি। অন্তর্বতিকালীন সরকারের কর্মকান্ড দেখে সাধারণ মানুষের মধ্যে দিন দিন হতাশা বাড়ছে। জুলাইতে যেছিল টোকাই অক্টোবরে সে কোটিপতি বনে গেছে। হঠাৎ বিত্তশালী হয়ে পড়া এসব রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে গোপন তদন্ত জরুরী বলে সাধারণ মানুষ মনে করছেন। রাজনৈতিক অবস্থাকে পূঁজি করে যে অবস্থা চলছে তা দেখে খোদ বিএনপির নেতৃত্ব চিন্তিত। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হয়তোবা এ কারণেই বলেছেন, কিছু নেতাকর্মীর আচরণ দেখে মনে হয় বিএনপি যেন ক্ষমতায় চলে এসেছে। রাজনৈতিক বাড়াবাড়ি বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে এমনটাই মনে করছে বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা। আর সাধারণ মানুষ বারবার বলছে, দেশের কল্যাণে অন্তর্বতিকালীন সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদের রদবদল করে হলেও দেশবাসীর প্রত্যাশা পুরনে সরকার ও সকল রাজনৈতিক দলগুলিকে এক যোগে কাজ করতে হবে।
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সাথে সাথে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তার দোসররা কেউবা পালিয়েছে আবার কেউ আত্মগোপনে রয়েছে। বিগত পতিত সরকারের আমলে পেশাদার সাংবাদিকরা সব কিছু দেখলেও কোন কিছুই লিখতে পারতনা। আকাঁরে ইঙ্গিতে কোন কিছু লিখলেই সেইসব সাংবাদিকের উপর খর্গ নেমে […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯