ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও ওসমান লীগ। ২০১৮ সালের পরে দুটো একাকার হয়ে গেলেও তার আগ পর্যন্ত স্পষ্ট পার্থক্য ছিলো নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে। ওসমান লীগের বিপরীতে আওয়ামী লীগের সুস্পষ্ট পার্থক্য ছিলো এবং বিভাজন ছিলো বেশ ভালোভাবেই। অব্যাহত প্রভাব বিস্তার, দমন পীড়ন এবং আওয়ামী লীগকে নিজেদের মনমতো ব্যবহার করে যা খুশী তা করার সুযোগ পেয়ে যান তারা। অথচ আওয়ামী লীগকে স্পষ্টতই অর্থ উপার্যনের একটি পথ হিসেবে ব্যবহার করতো ওসমানেরা। যার কারণে তুলনামূলক পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করতে চাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা ছিলেন অবমূল্যায়িত। ২০০১ সালের নির্বাচনে গিয়াসউদ্দিনের কাছে পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়ে পালায় শামীম ওসমান। সেই সাথে অন্তত ৭ বছরের জন্য ওসমান লীগ সাম্রাজ্যের পতন হয়। সেসময় আওয়ামী লীগের হাল ধরেন চুনকা কন্যা সেলিনা হায়াৎ আইভী সহ ওসমান পরিবারের অনুসারী নন এমন নেতাকর্মীরা। দেশ ছেড়ে পালাতে না পারা বহু আওয়ামী লীগ নেতা সেসময় আইভীর পাশে ভিড়ে নিজেদের পদ পদবী রক্ষা করেন। সুসময়ে দেশে থাকা আর দুঃসময়ে পালিয়ে বেড়ানো ওসমান পরিবার লাভ করে ওসমান লীগ নামে। শুধু আওয়ামী লীগকে নয়। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাতীয় পার্টিকে ব্যবহার করতে শুরু করে এই ওসমান পরিবার। প্রথমে নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টির সাথে ছিলেন, পরবর্তীতে নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর সেই স্থান দখল করেন সেলিম ওসমান। অর্থ্যাৎ যেকোন ছলে বলে ক্ষমতার সাথেই তাদের সম্পর্ক। ওসমানদের এমন ক্ষমতাচর্চার কারণে আওয়ামী লীগের বাইরে গড়ে উঠে “ওসমান লীগ”। মূলত অর্থের বিনিময়ে বিএনপি জামায়াতকে আওয়ামী লীগে স্থান দেয়া সহ সকল অপকর্মের সুযোগ করে দিয়ে তা থেকে মোটা অংকের অর্থ লাভ করাই ছিলো এই ওসমান লীগের প্রধান কাজ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শামীম ওসমান দেশে ফিরেন। কবরী এমপি থাকলেও তাকে নানাভাবে বিরক্ত করতে শুরু করে শামীম ওসমান ও তার বাহিনী। তার সাথে যুক্ত হয় পুরোনো সেই ওসমান লীগের কর্মীরা। একে একে দখল করা হয় পরিবহন সেক্টর, ভূমি দখল, বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডার। এর সাথে বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রæপের হয়ে জমি কিনে দেয়া সহ নানান কাজে নিজেদের যুক্ত করেন তারা। যার ফলে দ্রæত সময়েই পুরো নারায়ণগঞ্জে ছড়ি ঘুরাতে শুরু করে ওসমান লীগ। ২০১৪ সালে বিনাভোটে এমপি হবার পর ক্ষমতা বাড়ে আরও। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি হয়েও ফতুল্লা সিদ্ধিরগঞ্জ ছাড়িয়ে ক্ষমতা ডানা মেলে বন্দর, শহর, সোনারগাঁয় পর্যন্ত। তবে তখনও ওসমান লীগের বিপরীতে শক্ত অবস্থান ছিলো আইভী, কায়সার হাসনাত, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী, আনোয়ার হোসেন, আরাফাত সহ আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা ও তাদের অনুসারীদের। এমনকি বিপরীত অবস্থানে চলে এসেছিলো শামীম ওসমানের অনুসারী খোকন সাহা, মাহমুদা মালাও। তবে দিনে দিনে ত্বকী হত্যা, সাত খুনের ঘটনা আওয়ামী লীগ সরকারের সহায়তায় হজম করার পর নিজের প্রভাব বিস্তার করতে থাকে ওসমান লীগ। যা ২০১৮ সালের পরে পুরো আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ লাভ করে। ওসমান লীগ নারায়ণগঞ্জে তাদের অনুসারীদের বানিয়েছে নেতা, জনপ্রতিনিধি। তা সে যেই দলই করুক না কেন। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মধ্যে কুতুবপুরে সেন্টু, এনায়েতনগরে আসাদুজ্জামান, আলীরটেকে জাকির হোসেন, বন্দরে এহসান, মুছাপুরে মাকসুদকে জয়ী করানোর কাজ করতো ওসমান লীগ। এসব চেয়ারম্যানরা বিএনপি ও জামায়াতের হলেও তাদের দল বদল করিয়ে নিজেদের বশে নিয়ে আসেন। যার কারনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষুব্ধ ছিলো এবং কোন কোন স্থানে আওয়ামী লীগের লোকজন ছিলো নির্যাতিত। আওয়ামী লীগ পতনের পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে গেলেও এসব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা এখনও দাপটের সাথে এলাকায় প্রভাব ধরে রেখেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, ওসমান লীগের কর্মকা- নিয়ে দলে ক্ষোভ থাকলেও তা প্রকাশ করতে পেরেছেন খুব কম মানুষই। মূলত আইভী বা আনোয়ার হোসেনই মুখ ফুটে মাঝে মধ্যে কিছু বলতেন। তবে ওসমান লীগের এসব কর্মকান্ডের কারনে এত বছরেও শামীম ওসমান কোন মন্ত্রীসভায় স্থান পাননি বলে মনে করেন অনেকে। এদিক থেকে আইভীকে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা দিয়ে সম্মানিত করে রাখা হয়েছিলো। বঞ্চিত আওয়ামী লীগ কর্মীরা বলছেন, শামীম ওসমান তার বন্ধু, শালা, ছেলের শ্বশুর, ছেলের শ্যালক সহ নিজের ব্যক্তিগত ও পরিবারের সদস্যদের দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করতেন সবকিছু। এমনকি সোনারগাঁয়ে নিজের প্রভাব ধরে রাখতে লিয়াকত হোসেন খোকাকে এমপি বানানো হয়েছে। যে কিনা সোনারগাঁয়ে মেম্বার হবার মত যোগ্যতায় ছিলো না। এভাবে দল থেকে শুরু করে ক্লাব, ব্যবসা সংগঠন, বার সবকিছুতেই দখল ছিলো ওসমান লীগের। এভাবে সবকিছুতে দখলদারিত্ব চালানোর ফলে শুধু যে ওসমান লীগের উপর মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে এমন নয়। মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগের উপরে। আওয়ামী লীগকে মানুষের কাছে বিষময় করে তুলতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে এই ওসমান লীগ। এখন দেশ ছেড়ে পালালেও সেই বিষ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে বঞ্চিত ও অবহেলিতদের। আওয়ামী লীগের হাল ধরার মত এখন আর কেউই নারায়ণগঞ্জে নেই। ওসমান লীগের সাথে সাথে নেতৃত্বের পতন হয়েছে আওয়ামী লীগের।
হাবিবুর রহমান বাদল স্বৈরাচারী সরকারের পতনের চার মাস পূর্তি ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। জুলাই বিপ্লবের মুল আকাংখা ছিল পরিবর্তন। সাধারন মানুষের সামনে অন্তর্বর্তিকালিন সরকার তেমন সাফল্য তুলে ধরতে পারেনি। জুলাই বিপ্লবে রাজনৈতিক দলগুলির চাইতে ছাত্র-জনতার প্রত্যক্ষ অংশগ্রহ ছিল সব চেয়ে বেশী। তবে রাজনৈতিক দলগুলির অবদানকে অস্বীকার করার উপায় নেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জুলাই বিপ্লবকে সমর্থন জানিয়ে […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: বিকেএমইএ‘র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, ব্যাংক ইন্টারেস্টের কারণে আমাদের ক্যাপাসিটির বাইরে অনেক কিছু চলে যাচ্ছে। আগে ছিল, পর পর ছয়টা কিস্তিতে কেউ ব্যর্থ হলে সে ঋণখেলাপি হবে। বাংলাদেশ থেকে একটি সার্কুলার দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে ৩টা কিস্তিতে ব্যর্থ হলে ঋণখেলাপি হবে। আগামী মার্চ থেকে একটা কিস্তি ব্যর্থ হলেই ঋণখেলাপি হবে। বর্তমান […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯