ওয়ার্ড বিএনপি নেতার ভাইয়ের দাপট

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ইসদাইর-গাবতলী এলাকায় আতঙ্কের অপর নাম ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ নয়ন। মাদক বিক্রি করা, সেবন করা, বাহিনী নিয়ে ছিনতাই-চাঁদাবাজী করাসহ ব্যাপক অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে এই নয়নের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বিগত দিনে আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে গেলেও ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে চলে যায় এই অপরাধী। কিছুদিন গাঁ ঢাকা দেয়ার পর বর্তমানে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে, বিশেষ করে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের নাম ভাঙ্গিয়ে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে কুখ্যাত এই অপরাধী। ইসদাইর-গাবতলী ও আশেপাশের এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা আদায় করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সুত্রে আরও জানা গেছে, তার এক ভাই নাকি ওয়ার্ড বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। কথিত সেই বিএনপি নেতার ছত্রছায়ায় এলাকায় ব্যাপক অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এই নয়ন। বিএনপি নেতা ভাইয়ের দাপটে এলাকায় সকলের মাঝে ভীতি ছড়িয়ে রাখে সে। তার দাপটে এলাকায় তটস্থ থাকে এলাকাবাসী, এমনটাই জানিয়েছেন তারা। তবে, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি করলেও দিন শেষে সেই সকল টাকা জুয়া ও মাদকের আসরে উড়িয়ে দিয়ে আবারও চাঁদাবাজি করে সে। এমনকি মানুষকে দেখামাত্র ছুরি-চাকু বের করে তাদেরকে জিম্মি করে নেশার টাকা আদায় করে এই নয়ন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার রাতে নেশার টাকা না পেয়ে পঞ্চাশোর্ধ বৃদ্ধা আব্দুল আজিজ (৫২)কে মারধর করে কুখ্যাত ছিনতাইকারী নয়ন (৩৫)। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মারধরের শিকার ভুক্তভোগী বৃদ্ধা। বৃদ্ধার অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাতে আব্দুল আজিজ গাবতলী এলাকায় গেলে নয়ন তাকে দাড় করিয়ে ইয়াবা সেবনের এক হাজার টাকা চায়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নয়ন তাকে প্রচন্ড মারধর করে। নয়ন সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে স্বৈরাচারের দোসর শামীম ওসমানের সহায়তায় দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ সমবায় মার্কেট সমিতির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন কারী আবুল কাশেম এবং গাবতলী প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষিকা ইতির ছোট ভাই এই নয়ন। আবুল কাশেমের মৃত্যুর পর ও আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর গাঁ ঢাকা দেয় এই নয়ন। পরবর্তীতে তার আরেক ভাই নাকি ওয়ার্ড বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত হয়, সেই ভাইয়ের নাম বিক্রি করে পুনরায় মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি করে বেড়ায়, দাবি স্থানীয়দের। স্থানীয়রা জানায়, তার ভাই জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের অধীনে বিএনপির রাজনীতি করে বলে, নয়ন সকলকে জেলা বিএনপির এই সভাপতির নাম বিক্রি করে ভয় দেখাতে থাকে। তাই, নানা অপকর্ম করলেও ভয়ে এলাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। এছাড়া, নানা অপকর্ম করে বেড়ালেও নিজ ভাই-বোনদের কাকুতি-মিনতির কারণে বারবার ছাড়া পেয়ে যায় দুর্ধর্ষ এই ছিনতাইকারী। এলাকায় প্রায় সকল চুরি-ছিনতাই ও অপকর্মে নয়ন সরাসরি জড়িত উল্লেখ করে স্থানীয়রা জানায়, নয়নের মতো ছিনতাই কারী, চাঁদাবাজ, মাদক বিক্রেতা ও মাদকসেবী এলাকার বিষফোড়া। তার জ¦ালায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। নেশা করার জন্য টাকা চেয়ে প্রতিদিনই কাউকে না কাউকে আঘাত করে সে। সম্প্রতি দেওভোগ এলাকায় ছিনতাইকারীদের হাতে সীমান্ত হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে স্থানীয়রা বলেন, অনতিবিলম্বে এই নেশাখোর ও কুখ্যাত ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা না হলে গাবতলী ও আশেপাশের এলাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে সে। তাই এই অপরাধীকে গ্রেফতারে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।