আজ সোমবার | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৮ পৌষ ১৪৩১ | ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ | বিকাল ৩:১৮

পথহারা নারায়ণগঞ্জ জাতীয়পার্টি

ডান্ডিবার্তা | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিপদে পড়ে। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের উপর ভর দিয়ে চলা নারায়ণগঞ্জ জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাও পড়েন বেকায়দায়। তারা এখন পথহারা হয়ে পড়েছেন। বিগত স্বৈরশাসনের সময় আওয়ামীলীগের পাশাপাশি জাতীয়পার্টিও নারায়ণগঞ্জে দাপটে রাজনীতি করেছে। তারা আওয়ামীলীগের দোসর হয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটেছে। কিন্তু বর্তমানে দুই দলের নেতাকর্মীরাই রাজপথের চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেই বেশি সক্রিয় রয়েছেন। তারা এই মাধ্যম ব্যবহার করে বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি তাদের ভুল ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে দিন যতোই যাচ্ছে ততোই তাদের রাজপথে রাজনীতি করার সুযোগ সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। গত সাড়ে ৪ মাসেই তাদের রাজনৈতিক জৌলুস অনেকটাই হারিয়ে গেছে। জাতীয় পার্টি কোনোভাবে রাজনীতি করার চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুরোদমে রাজপথ ছেড়ে দিয়েছেন। মামলা, গ্রেফতার আতঙ্কে গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশে তারা রাজপথে নামছেন না। এর ফলে দুই দলের অনুপস্থিতে মাঠ গরম করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি জামায়াতের নেতাকর্মীরাও বসে নেই। তারা কৌশলী হয়ে নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া চরমোনাইর, হেফাজতে ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী শাসনতন্ত্র, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা নিয়মিত নারায়ণগঞ্জ সরগরম রাখছেন। এদিকে সাধারণ মানুষের কাছে আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাও শত্রæতে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি নিজ এলাকায় তাদের নেই কোনো গ্রহণ যোগ্যতা। এদিকে গত ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করা হলেও আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টিকে কোণঠাসা করে রেখে দেওয়া হয়। দেশের কোনো গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে তাদের এখন রাখা হয় না। এই অবস্থায় আগামী নির্বাচনকে ঘিরে মহাবিপদে পড়েছেন জাপা নেতারা। সেই সঙ্গে তাদের রাজনীতি নিয়েও ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি কাঁটিয়ে তোলার চেষ্টা করতে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। কিন্তু সরকার থেকে তাদের প্রতি কেনো নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে না। সেই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত নেতাকর্মীরা বরাবরের মতো জাতীয় পার্টিকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে অভিহিত করে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। এর আগে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে অগ্নিকাÐ লাগানো মধ্য দিয়ে জাপার প্রতি মানুষের ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটেছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে রাজনীতি করে আসছিল জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের সব অপকর্মে তাদের পরোক্ষ ভূমিকা ছিল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে ক্ষমতার স্বাদ নিতো জাতীয় পার্টি। তবে গত ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিপদে পড়েছে দলটির নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের মতোন জাতীয় পার্টির কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী দেশ ছেড়ে পালাতে সক্ষম হলেও অধিকাংশ নেতাকর্মীরা দেশের মধ্যেই রয়ে গেছেন। বিএনপির মতোন তারা কোথাও কোনো রাজনীতি করার সুযোগও পাচ্ছেন না। অন্যান্য জেলার মতোন নারায়ণগঞ্জের জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদেরও একই দশা। এখানকার সাবেক দ্ইু এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা এবং একেএম সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টির নেতা হলেও তারা পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের লোক ছিল। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মকাÐে তারা সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। এদের মধ্যে লিয়াকত হোসেন খোকাকে নিজ নির্বাচনী এলাকা সোনারগাঁয়ে প্রকাশ্যে দেখা গেলেও গত ৫ আগস্টের পর থেকে সেলিম ওসমানকে নারায়নগঞ্জে দেখা যাচ্ছে না। তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন, দেশে নাকি বিদেশে আছেন তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। সব মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জে আগামীতে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করা অনেক দু:সাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। সেই সঙ্গে ভোটারদের নিকট জাতীয় পার্টির গ্রহণযোগ্যতাও থাকবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জানা যায়, মহাজোট গঠন করার স্বার্থে আওয়ামী লীগ টানা দুইবার সোনারগাঁ আসনটি জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দেয়। এর ফলে দুইবারই বড় ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত হোন লিয়াকত হোসেন খোকা। তবে সর্বশেষ নির্বাচনে এই আসনটি জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে না দেওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের নিকট তার পরাজয় ঘটে। পরাজয়ের পর থেকে তখন সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে তিনি ঢাকার রাজনীতি সক্রিয় হোন। তবে গত দুই মাস ধরে ফের জেলার রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন তিনি। এর ফলে তাকে ঘিরে ফের আশার আলো দেখতে পারছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। কিন্তু আওয়ামী লীগের পতনের পর আবারও একই দশা হয় জাতীয় পার্টির এই প্রেসিডিয়াম সদস্যের। বর্তমানে তিনি বেকায়দায় রয়েছেন। যতোদিন নাগাদ আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে কামব্যাক করতে না পারছেন খোকাও ততোদিন রাজনীতিতে আর আসতে পারছেন না। সেই সঙ্গে আগামীতে তার রাজনীতি করার সুযোগ ক্ষীণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির অন্যতম প্রভাবশালী এমপি হিসেবে সারাদেশে পরিচিত ছিলেন একেএম সেলিম ওসমান। একাধিক নেতিবাচক কর্মকাÐে সংবাদমাধ্যমে বেশ আলোচনায় ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে বড় ভাই এ কে এম নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর আসনটিতে উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সেলিম ওসমান। এরপর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হন। ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিজয়ী হোন তিনি। দুইবারই এই আসনে মহাজোটের শরিক জাপাকে ছাড় দিয়ে কোনো প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এর ফলে প্রত্যেকবারই বড় ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত হোন তিনি। আওয়ামী লীগের সময়ে সমঝোতার মাধ্যমে টানা সাত বার গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ এর সভাপতি হয়েছিলেন তিনি। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনে সবকিছু হারিয়েছেন তিনি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:১৪
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৯
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১১
  • ১১:৫৯
  • ১৫:৪০
  • ১৭:১৯
  • ১৮:৩৮
  • ৬:৩৬
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা