আজ মঙ্গলবার | ২১ জানুয়ারি ২০২৫ | ৭ মাঘ ১৪৩১ | ২০ রজব ১৪৪৬ | সকাল ১১:৫৫

যানজটের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছেনা রোগীবাহী এম্বুলেন্সও!

ডান্ডিবার্তা | ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারাযণগঞ্জ শহরে যানজট যেন নিত্য দিনের সঙ্গী। বর্তমান সময়ে নগীর তীব্র এই যানজটের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না সড়কে চলাচররত এম্বুলেন্স থেকে শুরু করে সাধারন যানবাহনগুলো। এই শহরটা কবে, কখন, কোনদিন থেকে রেহাই পাবে তা কারোরই জানা নেই। এই যানজটের কারনে নগরীতে চলাচলরত সাধারন পথচারীরা অনেকটা জিম্মি হয়ে পরেছেন। গতকাল শনিবার সরেজমিন ঘুরে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের নিতাইগঞ্জ, ২নং রেল গেইট, চাষাড়া মোড়, অপরদিকে ১নং রেল গেইট, কালির বাজার, মীর জুমলা সড়ক, সলিমুল্লাহ সড়ক ঘুরে যানজটের এই ভয়াবহ এই চিত্র দেখা গেছে। নগরীতে চলাচল করা জরুরী পরিবহন সেবা যেমন, এম্বুলেন্স, ফায়ার সার্বিসের গাড়ি, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় অফিসগামী বাসযাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের কর্মস্থলে ব্যাক্তিগত গাড়ি নিয়ে সময় মত যাতায়াত অতি গুরুত্বপূর্ণ হলেও জন সাধারনরা এই যানজটের কবলে পরার কারনে ঘন্টার পর ঘন্টা চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। এক কথায় বলা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরে যেন পথরারীদের চলাচলের কোন ধরনের অধিকার নেই, চলাচলের অধিকার শুধুই যান বাহনগুলোর। যানজটে আটকে থেকে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন মূল্যবান সময় অপচয় করতে বাধ্য হচ্ছে। বিশেষ করে কোন দিন নগরীর কোথাও যানজট দেখা না গেলেও নগরীর কেন্দ্রস্থল চাষাঢ়ার গোল চত্বরে যানজট লেগেই আছে। আবার নগরীর তিনটি রেলক্রসিং, বঙ্গবন্ধু সড়ক, টার্মিনাল সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। যানজটের কারণে দিন দিন ক্ষুব্ধ হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ। যানজটে অস্তির মানুষগুলো এই অভিশাপ থেকে মুক্তি চান। ঢাকা-পাগলা-নারায়ণগঞ্জ সড়ক, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-ডেমরা সড়ক এবং নগরীর প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাঢ়া থেকে নিতাইগঞ্জ পর্যন্ত অংশের মোহনা হিসেবে পরিচিত চাষাঢ়া গোল চত্বর। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ গোল চত্বরে অহরহ যানজট লেগেই আছে। ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে ঢুকতে কিংবা সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা, সোনারগাঁও, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও বন্দর থেকে শহরে ঢুকতেই চাষাঢ়া এসেই পড়তে হয় যানজটের কবলে। ফলে অনেকেই রিকশার পরিবর্তে হেঁটে নির্ধারিত গন্তেব্যে পৌঁছতে বাধ্য হন। এছাড়া ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, যানজটের কারণে রিকশার ভাড়াও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। যানজটের প্রধান স্পটগুলো হলো, শহরের চাষাঢ়া গোল চত্বর, রাইফেল ক্লাব, ১নং রেলগেট, ২নং রেল গেট, কালিরবাজার, নিতাইগঞ্জ ও উকিলপাড়া। সবচেয়ে তীব্র যানজট লক্ষ করা যায় বঙ্গবন্ধু সড়কে। বিশেষ করে চাষাঢ়া গোল চত্বর থেকে ২নং রেল গেট ও ডিআইটি পর্যন্ত প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে রয়েছে নগরীতে ৩টি রেল ক্রসিং। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে প্রতিদিন ১৩টি ট্রেন দুইবার করে আসা-যাওয়া করে। একদিনে ২৬ বার চলাচল করে। নগরীর কেন্দ্রীয় রেলস্টেশনটি হলো কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন। নগরীর কেন্দ্রীয় রেলস্টেশনে যেতে তিনটি রেল ক্রসিং অতিক্রম করতে হয়। এর মধ্যে চাষাঢ়া রেল ক্রসিং যেটা ঢাকা-পাগলা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে অবস্থিত, দ্বিতীয়টি বঙ্গবন্ধু সড়কের ২নং রেল গেট ও তৃতীয়টি বাস টার্মিনাল সংলগ্ন ১নং রেল গেট। ২৬ বার ট্রেন চলাচল করার কারণে ৫ মিনিট করে ক্রসিং হিসেব করলে ১৩০ মিনিট (২ ঘণ্টা ১৬ মিনিট) চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। আর এ ক্রসিংয়ের কারণে পুরো শহরে দেখা দেয় তীব্র যানজট। বাধ্য হয়ে চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। আর এ ক্রসিংয়ের কারণে পুরো শহরে দেখা দেয় যানজট। অপরদিকে নগরীর অধিকাংশ ফুটপাথ দখল করে অবৈধ দোকানপাট বসিয়েছে হকাররা। ফলে পথচারীরা বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে। এতেও সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। অনেকেই বলছেন, নগরীতে অবৈধ রিকশারও ছড়াছড়ি রয়েছে। অতিরিক্ত রিকশা রাস্তার অধিকাংশ অংশজুড়ে চলাচল করায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। আবারও প্রধান প্রধান সড়কের পাশের বিপণি বিতানের সামনে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসসহ নানা যানবাহন রাস্তায় পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে। এতেও সৃষ্টি হয় যানজট। পথচারীরাদের অভিযোগ, কোন কোন সড়কে ভ্যানগাড়িতে ফল, কাপড়, খাবার জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তায় দোকান খুলে বসেছে। এতেও সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। অন্যদিকে শহরের উকিলপাড়া এলাকাতে রয়েছে প্রচুর হোসিয়ারী কারখানা। এ কারণে ওই কারখানাগুলোর সামনে বঙ্গবন্ধু সড়কে মালামাল লোড-আনলোডের জন্য গাড়ি পার্কিং করে রাখার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অভিজ্ঞ সচেতন মহল মনে করছেন, নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি ও কেন্দ্রীয় রেলস্টেশনটি চাষাঢ়ার দিকে নিয়ে এলে শহরের যানজট অনেকাংশ কমে আসবে। তারা বলছেন, নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও তিনটি রেল ক্রসিংয়ের কারণেই মূলত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া বাসগুলো শহরের প্রধান প্রধান সড়ক দিয়ে যাতায়াতের কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয়। অপরদিকে বিআরটিএ যাকে-তাকে ফিটনেস সার্টিফিকেট দিয়ে দেয়। সিটি কর্পোরেশনের হাজার হাজারের অধিক সংখ্যক অবৈধ রিকশা রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট কোন স্ট্যান্ড নেই, যেখানে সেখানে যানবাহন থামানো, বাসস্ট্যান্ডটি (কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি) সেন্ট্রালে হওয়াতে উল্টাপাল্টা বাস আসা-যাওয়া করে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি অহরহ চলাচল করছে। সিটি কর্পোরেশন একা কিছু করতে পারে না। এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের কোন মাথা ব্যথা নেই। ট্রাফিক পুলিশও যানজট নিরসনে ঠিকমতো কাজ করে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগর বলেন, যানজট নিরসনে বর্তমানে প্রায় ১১০ জন কর্মকর্তা ফিল্ডে কাজ করছেন। সকাল থেকে দুপুর ও দুপুর থেকে রাত অবধি দুই শিফটে তারা কাজ করছে। শহর ছাড়াও হাইওয়ের দিকে আমাদের কাজ করতে হয়। সবমিলিয়ে আমাদের লোকবল সংকট। বেশিরভাগ ট্রাফিক পুলিশ সদস্য নতুন ভাবে যুক্ত হয়েছে। ফিল্ডে তাদের নিয়ে ভালোভাবে কাজ করা কঠিন হয়েছে, কিছুটা সময় লাগছে। সিটি কর্পোরেশন থেকে অভিযান চলছে, আমরাও বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালাচ্ছি। অবৈধভাবে পার্কিং করার কারণে ইজিবাইক আটক করেছি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা