আজ মঙ্গলবার | ২১ জানুয়ারি ২০২৫ | ৭ মাঘ ১৪৩১ | ২০ রজব ১৪৪৬ | সকাল ১০:৪১

সিদ্ধিরগঞ্জের অপরাধীরা এখনো অধরা

ডান্ডিবার্তা | ২১ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের শাসনামলে নারায়ণগঞ্জে অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। আর তার মাফিয়া রাজ্য কায়েম সহজ করতে অন্যান্য থানা এলাকার ন্যায় সিদ্ধিরগঞ্জেও নিযুক্ত ছিল কয়েকজন দোসর। যারা চাঁদাবাজি, দখলবাজি করে শামীম ওসমানের হাতকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি নিজেরা একেকজন টাকার কুমির হয়েছিল। এদের মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে উল্লেখযোগ্য তিনজন হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নুরউদ্দিন মিয়া এবং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক মতিউর রহমান মতি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা ছাত্র জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই তারা রয়েছেন আত্মগোপনে। তবে এদের মধ্যে অবশেষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। গত ১৩ জানুয়ারি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে মতিউর রহমান মতি ও তার ছেলে বাবুইকে গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানা পুলিশ। মতিউর রহমানের নামে বিভিন্ন থানায় ২৫টি ও তার ছেলের নামে ছয়টি মামলা রয়েছে। তিনি সেভেন মার্ডার মামলাও আসামি ছিলেন। মতির বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তবে এক দোসর গ্রেফতার হলেও বাকি দুই দোসর বাদল ও নুর উদ্দিন এখনো গ্রেফতার হয়নি। এক সূত্রে কাউন্সিলর নুর উদ্দিন বর্তমানে ঢাকাতেই অবস্থান করছেন। বিভিন্নসময় ঢাকাতে তাকে দেখা যায়। সর্বশেষ তাকে ঢাকার বিজয়নগরে অবস্থিত সাবেক পৌর প্রশাসক আব্দুল মতিন প্রধানের মালিকানাধীন হোটেল ৭১ এ দেখা যায় নুর উদ্দিনকে। তবে শাহজালাল বাদল বর্তমানে কই আছেন তা এখনো স্পষ্ট নয়। কেউ বলছেন তিনি শাহ নিজামের সঙ্গে দুবাইতে রয়েছেন। আবার কেউ বলছেন তিনি দেশেরই কোথাও হয়তো ঘাপটি মেরে আছেন। তবে তিনি যেখানেই থাকুক এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের দূর্বলতার কারণে অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর পরই অস্তিত্ব সংকটে পড়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অধিকাংশ নেতাকর্মী নারায়ণগঞ্জের বাহিরে রইলেও এখনো কিছুসংখ্যাক নেতাকর্মী জেলাতেই অবস্থান করছেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক কাজ করছে। মামলা, গ্রেফতার থেকে বাঁচতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এভাবে কতদিন পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে থাকতে হবে তা এই মুহুর্তে বলা অসম্ভব বিষয়। দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর পতনের সঙ্গে সঙ্গে তাদের এই দশা হবে তা কখনো আন্দাজ করতে পারেন নি নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে কাউন্সিলরাও। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপির দীর্ঘদিনের দাবি আদায় হয়েছে। এর ফলে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন। একই চিত্র লক্ষ্য করা যায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ক্ষেত্রেও। জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা বর্তমানে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। পাশাপাশি পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর ফলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সামনে নতুন বিজয় অপেক্ষা করছে। হাসিনাবিহীন আওয়ামী লীগের বর্তমানে যে অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করা হয়েছে। এর ফলে আগামীতে বিএনপির একক আধিপত্য থাকবে তা এখন থেকেই অনুমান করা যায়। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে কবে নাগাদ তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারবেন তা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে আগামীতে আওয়ামী ও জাতীয় পার্টির সাবেক এমপিদের লড়াই করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে তা বলাই যায়।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা