আজ মঙ্গলবার | ২১ জানুয়ারি ২০২৫ | ৭ মাঘ ১৪৩১ | ২০ রজব ১৪৪৬ | সকাল ১০:৪১

মর্গ্যান স্কুলের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ আজাদ!

ডান্ডিবার্তা | ২১ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ শহরের সুনাম ধন্য মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তারকে বহিস্কারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বেশ আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। অভিযোগ রয়েছে এর আগে জোরপূর্বক শিক্ষিকা লায়লা আক্তারকে পদত্যাগ করিয়ে এখন তাকে স্থায়ী বহিস্কারের জন্য স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ ছাত্রীদের দিয়ে মিথ্যাচার করছেন অধ্যক্ষ। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ স্থানীয় সরকার শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার তানিয়া আক্তারকে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক। গতকাল সোমবার সকাল ১১টার দিকে স্কুলের রুলস ভঙ্গ করে স্কুলের বেশীরভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তদন্ত কমিটির প্রধানের কাছে সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করতে যান। কিন্তু তদন্ত প্রধান তাদের কোন কিছুই শুনেন নাই। তদন্ত প্রধান প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে তাদেরকে চলে যেতে বলেন। তথ্য সূত্র জানা গেছে, মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব এবং মেয়র আইভির মামা মাসুদকে ব্যবহার করে স্কুলে আধিপত্য বিস্তার করেন। প্রিন্সিপাল কোচিং বাণিজ্য থেকে শুরু করে স্কুলের গাইড কিনাও নিয়েও তিনি বিভিন্ন অনিময়ের সাথে জড়িত। একটি নির্দিষ্ট লাইব্রেরীর মাধ্যমিক স্কুলের সকল বই কেনার হতো আর সেখান থেকে তিনি মোটা অংকের কমিশন নিতেন। শুধু তাই না আইভীর মামা স্কুলের দাতা সদস্য মাসুদ ভর্তি বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন তার মূল হোতা ছিলেন এই প্রধান শিক্ষক। নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে প্রিন্সিপাল সহকারী প্রধান শিক্ষক লায়লা আক্তার উপর সম্পূর্ণ দায়ভার চাপিয়ে দিয়ে গত ২১ আগস্ট জোরপূর্বক পদত্যাগ করাইয়া তাকে স্কুল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই সময়ে লায়লা আক্তার অসুস্থতার কারণে স্কুল থেকে ছুটি নেয়। আর এই সুযোগটাই কাছে লাগিয়ে প্রিন্সিপাল তার নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে মানসিকভাবে টর্চার করে এই পদত্যাগ করান। কিন্তু যে ছিল আওয়ামী লীগের দোষদের সহযোগী সেই প্রিন্সিপাল এখনো বহাল রয়েছে। আর যিনি স্কুলের জন্য এত কিছু করেছেন সেই সহকারী শিক্ষিকা লায়লা আক্তারকেই বের করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ লায়লা আক্তারের পদত্যাগ পত্র ডিসির কাছে দেন। পরে সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তারের বেতন ভাতা বন্ধ করে দেয়। আর সেই ধারাবাহিকতাই প্রিন্সিপাল সোমবার ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার নাম করে স্কুলে বেশিরভাগ শিক্ষকদেরকে নিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তারের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষককে দায়িত্বভার হস্তান্তর না করে তদন্ত কমিটির প্রধানের কাছে যান। আর এতে করে বিব্রত বোধ করেন তদন্ত কমিটির প্রধান। আরও জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি মর্গ্যান স্কুলের অধ্যক্ষ তদন্ত কমিটির কাছে জবাব দিতে ডাকা হয়। এসময় তিনি বিভিন্ন বিষয়ে জবাব দেন । এবং কিছু বিষয়ে আপত্তি জ্ঞাপন করেন। আর তদন্ত কবি তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ডকুমেন্ট চাইলে তিনি ২০ জানুয়ারি কাগজপত্র জমা দিবেন বলে জানান। আর আগেরদিন প্রিন্সিপাল তদন্ত কমিটিকে বলেন ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার দিন আমার সাথে দুই একজন শিক্ষককে নিয়ে আসবো। তখন তদন্ত কমিটির প্রধান ওনাকে উনার সাথে তিনজন শিক্ষককে নিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু সোমবার ২০শে জানুয়ারি প্রিন্সিপাল স্কুলের পায় বেশিরভাগ শিক্ষকদের নিয়ে গিয়ে তদন্ত কমিটির কার্যালয়ে হাজির হলে তদন্ত কর্মীতির প্রধান এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন এবং তিনি প্রধান শিক্ষককে বলেন যে আপনি বলেছিলেন দুইজন শিক্ষক নিয়ে আসবেন আপনি এতগুলো শিক্ষককে কেন নিয়ে এসেছেন। এসময় প্রধান শিক্ষক তদন্ত কমিটির প্রধানের জবাবের উত্তর দিতে না পেরে শিক্ষকদেরকে বাইরে অবস্থান করতে বলেন। তখন তদন্ত কমিটি বলেন যে আপনি আজকে ডকুমেন্ট জমা দিতে বলা হয়েছে আপনাকে তো বলা হয়নি স্কুলের সব শিক্ষকদের নিয়ে আসতে। আপনার রুলস ভঙ্গ করেছেন তার জন্য আপনাকে জবাব দিতে হবে।
এবিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান নারায়ণগঞ্জ স্থানীয় সরকার শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার তানিয়া আক্তার বলেন, ডিসি মহোদয় আমাকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে ২সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে, এবিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৪জানুয়ারি মর্গ্যান স্কুলের অধ্যক্ষ ডাকা হয়েছিল। আমরা সহকারী শিক্ষিকা লায়লা আক্তারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছি। আর কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আমরা ওনাকে দিতে বলেছি উনি ২০জানুয়ারি সময় নিয়েছে। সোমবার আজকে তিনি ডকুমেন্ট জমা দিতে এসেছিল। তিনি আরও বলেন, উনি আমাকে বলেছিল ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার সময় উনি তিনজন শিক্ষককে সাথে নিয়ে আসবেন। উনাকে আমি বলেছি ঠিক আছে আপনি নিয়ে আসেন। কিন্তু আজকে প্রিন্সিপাল সাহেব স্কুলের ক্লাস বন্ধ করে নাকি বেশিরভাগ শিক্ষকদেরকে নিয়ে এসেছে। আমি ওনাকে বলেছি যে আপনি রুলস ভঙ্গ করেছেন এটা ঠিক করেন নাই। তিনজনের জায়গায় আপনি এত বেশি শিক্ষক কেন নিয়ে আসবেন। আর আপনি ডকুমেন্ট জমা দিতে এসেছেন আপনি তো এখানে অন্য কোন কিছু বলার সুযোগ নেই। আমরা দ্রæত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট আগামী সপ্তাহের মধ্যে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট জমা দিব।
এদিকে স্কুলে আরেকটি অমার্জিনী ঘটনা ঘটে গেছে। আজকে এসএসসি ২০২৫এর টেস্ট পরীক্ষায় বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা ছিল কিন্তু প্রিন্সিপাল মহোদয দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র দিয়ে যান, তাই সমস্ত স্টুডেন্ট দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র দেখে ফেলেছে। এখন আগামীকাল কিভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে তাই দেখার বিষয়? তবে এবিষয়ে জানতে মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি মুঠোফোনটি রিসিভ করেনি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা