ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাহিরে ছিল বিএনপি। স্বৈরাচারী সরকারের দেড়যুগের সময়কালে নির্যাতন নীপিড়ন সহ্য করে ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনের মুখে অবশেষে পতন ঘটে হাসিনা সরকারের। হাসিনা সরকারের পতনের পর পরই সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের বিএনপির নেতৃবৃন্দের মুখেও তৃপ্তির হাসি ভেঁসে উঠে। দীর্ঘ সময়ের আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বেরাচারী সরকারের পতনের পর পরই নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখে নেতৃবৃন্দ। তবে, স্বেরাচারী হাসিনা সরকার দীর্ঘদীন ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কোনঠাসা করে রাখা হয় নারায়ণগঞ্জের বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের নেতা কর্মীদের। একদিকে, সরকার দলীয় ক্যাডারদের হামলা অন্যদিকে পুলিশি গ্রেফতারের কারনে অনেকটাই কোনঠাসা হয়ে পড়ে বিএনপির রাজনীতি। এমনকি, পিতা বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় পুত্রকেও ছাড় দেয়নি সরকারদলীয় নেতৃবৃন্দ এবং পুলিশ। অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন অতিবাহিত করে আসছিল বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তবুও, কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় দলের জন্য রাজপথ থেকে সরাতে পারেনি বিএনপির নেতৃনৃন্দকে। সকল ধরনের বাধা বিপত্তিকে পেছনে ফেলে দলের জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছিল নেতৃবৃন্দ। নেতাকর্মীদের বিশ্বাস ছিল অন্ধকার কেটে গিয়ে নতুন সূর্য উদিত হবে। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর ঠিকি নতুন সূর্যধয়ের দেখা মিলেছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বেরাচারী সরকারের পতনের মধ্যদিয়ে। সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের সাথে একাগ্রতা প্রকাশ করে স্বেরাচারী সরকারের পতনের মাধ্যমে আবারো উজ্জীবিত উয়ে উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। দেশের গণতন্ত্র রক্ষার্থে এখনো ছাত্রদের সাথেই রাজপথে অবস্থান করে আসছিল দলটি। এখনো আওয়ামীলীগের বর্বরতার সেই বীভিষীকাময় দিনটিকে ভূলতে পারেনি বিএনপি। তবে, স্বেরাচারী আওয়ামী সরকারের মত নির্যাতন নয় গনতান্ত্রিক পন্থায় রাজপথে আওয়ামী নেতৃবৃন্দ থাকবে এমনটাই কাম্য নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতৃবৃন্দের। সূত্রমতে, প্রায় ১৬ বছর ধরে ক্ষমতার বাহিরে মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এসময় সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতা কর্মীরাও দমন নীপিড়ন-হামলা-মামলার স্বীকার হয়ে দুর্বিসহ জীবন অতিবাহিত করেছেন। বিশেষ করে বছরের পর বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে নানা সংকটে পড়ে কারও কারও মধ্যে ভর করেছে হতাশা। তাদের কেউ কেউ কিছুটা নিষ্ক্রিয়ও হয়ে পড়ছেন। দলের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে কিছু নেতা ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন, যা ভালোভাবে নেননি দলের নীতিনির্ধারকরা। এমন পরিস্থিতিতে নেতা-কর্মীদের আবার মাঠে ফেরাতে ও উজ্জীবিত করতে মনোযোগী নারায়ণগঞ্জ বিএনপির হাইকমান্ড। নেতা-কর্মীদের চাঙা করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিগত আন্দোলনে রাজপথের যোদ্ধাদের নেতৃত্বে আনা, দলের জন্য সর্বস্ব হারানোদের মনস্তাত্তি¡কভাবে চাঙা ও উদ্বুদ্ধ করতে কারামুক্তদের সংবর্ধনা, উপজেলা গুলোতে সফরের মধ্য দিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ নিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। লক্ষ্য দ্রæততম সময়ের মধ্যে সবাইকে নিয়ে আবার রাজপথে নামা। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের মনোবল ঠিকই আছে। তারা আবার মাঠে নামবে। সময় হলেই তারা সবাই একযোগে রাজপথে নিজেদের উজাড় করে দেবেন। বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন বলেন, আমাদের নানা ধরনের কর্মসূচি চলমান আছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরাও সক্রিয় আছেন। আবারও নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি। যদিও তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আক্ষেপ করে বলেন, টানা তিনবার সরকার পতনের আন্দোলনে বেশ সাড়া জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি দল। এ জন্য সরকারের কঠোর পদক্ষেপের পাশাপাশি নিজেদের সাংগঠনিক ব্যর্থতাকেও অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। তাদের মতে, আত্মগোপনে থেকে কর্মসূচি সফলের নামে গা না বাঁচিয়ে দলের সব নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকলে সরকারের পক্ষে নির্বাচন করা এত সহজ হতো না। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে হরতাল-অবরোধের সময় রাজপথে নামেননি অনেক বড় বড় পদধারী নেতা। যদিও বছরজুড়ে অসংখ্য সফল কর্মসূচি পালন করেছিল দলটি। সব ভুলভ্রান্তি আর ব্যর্থতা পেছনে ফেলে টার্গেটে পৌঁছাতে চান তারা। মহানগর বিএনপির আহŸায়ক সাখাওয়াত হোসেন খাঁন বলেন, ‘বহু বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছি। শুধু নিজে নই, পুরো পরিবার ভুক্তভোগী। সারা বছর মাঠে থাকি। সন্তানরা ভয়ে থাকে কখন বাবাকে হারায়, বিশেষ করে আন্দোলনের সময় খুব ভয় পায়। হাজারো নির্যাতনের পরও হাল ছেড়ে দেইনি। দলীয় স্বার্থে রাজপথে ছিলাম। দলের জন্য সব স্বার্থ ত্যাগ করেছি। অনিশ্চিত জীবন বেছে নিয়েছি। তার পরও সর্বশেষে বলব সামনে ভালো দিন আসছে। এখন হারানোর আর কিছু নেই। বরং রাজপথে থেকেই ভোটাধিকার, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। এ জন্য রক্ত দিতেও পিছপা হব না। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খাঁন টিপু বলেন, প্রকৃত কর্মী কারোরই মন ভাঙেনি। সবাই এখনো দলের কার্যক্রমে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যতই ঝড়-ঝাপটা, মামলা-হামলা আসুক আমাদের ভয় নেই। প্রতিনিয়ত এসব মোকাবিলা করেই চলছি। ভবিষ্যতেও তাই করব। যত দিন লাগবে আমরা মাঠে থেকেই এই সরকারের পতন ঘটাব। ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, আমাদের মনোবল শক্তই আছে। দেশের মানুষ আমাদের পক্ষে আছে, জনগণ এই সরকারকে ভোট দেয়নি। আমি মনে করি আমরা ব্যর্থ হইনি। সবাই যার যার জায়গা থেকে দল গোছাচ্ছে। আর শুধু ক্ষমতায় যাওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য নয়। আমরা আছি মানুষের ভালোবাসার দল হিসেবে।
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সাথে সাথে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তার দোসররা কেউবা পালিয়েছে আবার কেউ আত্মগোপনে রয়েছে। বিগত পতিত সরকারের আমলে পেশাদার সাংবাদিকরা সব কিছু দেখলেও কোন কিছুই লিখতে পারতনা। আকাঁরে ইঙ্গিতে কোন কিছু লিখলেই সেইসব সাংবাদিকের উপর খর্গ নেমে […]
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকারের অকল্পনীয় পতন ঘটে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগের দিনও ভাবেনি তার সরকারের শুধু পতনই ঘটবে না, বরং তাকে চুপিসারে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে। আওয়ামীলীগের পতন ও শেখ হাসিনার পলায়নের পর পরই আওয়ামীলীগের তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও আত্মগোপনে চলে যায়। এর […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯