আজ বৃহস্পতিবার | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৬ মাঘ ১৪৩১ | ২৯ রজব ১৪৪৬ | সকাল ১১:৩৮

রূপগঞ্জে ছাত্রদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ ৪ জন গুলিবিদ্ধসহ ৩০জন আহত

ডান্ডিবার্তা | ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
রূপগঞ্জে প্রভাব বিস্তার ও আড়ৎ দখলকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিলে হামলা চালিয়েছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ক্যাসিনো স¤্রাট ডন সেলিম প্রধানের ভাড়া করা লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে স্বেচ্ছাসেবকদলের মিছিলে হামলা চালায়। এতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাওঘাট এলাকায় উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপুর সমর্থিত মিছিলকারীদের ফাঁসাতে হামলাকারীরা সেলিম প্রধানের একটি জিপ গাড়ি ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আগুন দেয়। একপর্যায়ে দিপু ভুঁইয়ার লোকজন জড়ো হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে সংঘর্ষে রূপ নেয়। তখন সেলিম প্রধান সমর্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন আহŸায়ক লিডার মাসুদ ও যুবদল নেতা আব্দুল কাইয়ুমের লোকজন স্বেচ্ছাসেবকদল নেতাকর্মীদের উপর গুলি বর্ষণ করে। এতে চার জন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ রাফি আহম্মেদ স্বপন ও রাজু ভুঁইয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত সেলিম, সিরাজ, বিনয় চন্দ্র ঘোষ, মিলন, শরীফকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ন আহŸায়ক রফিকুল ইসলাম জানান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ম্স্তুাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপুর নিদের্শনায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকায় স্বেচ্ছাসেবকদল একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করে। এ সময় হঠাৎ ডন সেলিমের নিয়োজিত গুন্ডাবাহিনীর প্রধান লিডার মাসুদ ও আব্দুল কাইয়ুমের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জনের একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিছিলে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা কুপিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদলের অন্তত ৩০জন নেতাকর্মীকে কুপিয়ে জখম করে। একপর্যায়ে লিডার মাসুদ ও তার লোকজন সেলিম প্রধানের চারতলা ভবনের ছাদ থেকে গুলি ছুড়তে থাকলে স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা রাফি আহম্মেদ স্বপন ও রাজু ভুঁইয়া গুলিবিদ্ধ হন। তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহসড়ক সংগলগ্ন সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়ৎ নিয়ে জাপান-বাংলাদেশ গ্রæপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধানের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী মজিবর রহমানের বিরোধ চলে আসছিল। ব্যবসায়ী মজিবর রহমানের দাবি, সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন জমি তিনি ১০ বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে ভাড়া নেন। পরে সেখানে বালু ভরাট ও সেড নির্মাণ করে কাচাঁবাজারের আড়ৎ গড়ে তোলেন। বর্তমানে পেশী শক্তি খাটিয়ে আড়ৎটি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন সেলিম প্রধান। তিনি লিডার মাসুদ ও কাইয়ুম প্রধানের ভাড়া লোকজন দিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদলের মিছিলে হামলা চালায়। এ ঘটনা ঘটিয়ে আড়ত দখলের শক্তি প্রদর্শণ করে। অপরদিকে সেলিম প্রধানের দাবি, ভূয়া চুক্তিনামা তৈরী করে জোরপূর্বক জমি দখল করে আড়ত গড়ে তোলেন আওয়ামী লীগ নেতা মজিবর রহমান। এদিকে, আড়তটি দখল করতে সেলিম প্রধানের পক্ষ নেয় জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন আহŸায়ক মাসুদুর রহমান ওরফে লিডার মাসুদ ও তার লোকজন। অন্যদিকে আড়তের ব্যবসায়ীদের পক্ষ নেয় জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে আড়তের পাশে সেলিম প্রধানের বাড়িতে মাসুদুর রহমানের লোকজন অবস্থান নেয়। এসময় আড়তের পাশের সড়ক দিয়ে রফিকুল ইসলাম তার নেতাকর্মীদের নিয়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল বের করে। এসময় সেলিম প্রধানের বাড়ির ভেতর থেকে ওই মিছিলে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পরে উভয়পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় লিডার মাসুদসহ কয়েকজনকে পিস্তল হাতে গুলি করতে দেখা গেছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতের মধ্যে রাজু ও স্বপনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময় সেলিম প্রধানের ব্যবহৃত একটি জিপ গাড়ি জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ১০ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এসময় গাউছিয়া মার্কেট, তাঁতবাজার, হাজী শপিং কমপ্লেক্সসহ আশপাশের মার্কেট ও হাঁটবাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। জনমনে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তখন সেলিম প্রধানের বাসা থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক রফিকুল ইসলাম আরো বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল বের করি। ওই মিছিলে অতর্কিতভাবে সন্ত্রাসীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ, গুলি ও হামলা চালায়। জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন আহŸায়ক মাসুদুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তবে শুনেছি আমার লোকজনের উপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ অনেকে আহত হয়েছে। এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গ সার্কেল মেহেদী ইসলাম বলেন, সেলিম প্রধানের সঙ্গে মজিবর রহমানের বিসমিল্লাহ আড়ত নিয়ে র্দীঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যেহেতু এখানে গুলিবষর্ণের ঘটনা ঘটেছে, আমরা অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালাবো। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা