আজ রবিবার | ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৯ মাঘ ১৪৩১ | ২ শাবান ১৪৪৬ | সকাল ৮:৪৬
শিরোনাম:
বিতর্কিত কর্মকাÐে গিয়াস বলয়ের পতন!    ♦     যুবদলের তৃনমুলে ক্ষোভ বাড়ছে    ♦     পুরনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দিয়ে দেশ চলতে পারে না : নুরুল হক নুর    ♦     হোসিয়ারী এসোসিয়েশন নির্বাচনে বদিউজ্জামান বদু প্যানেলের গণসংযোগ    ♦     শীতলক্ষ্যাপাড়ে ওয়াকওয়েতে বেড়েছে ছিনতাই    ♦     প্রকাশ্যে দাপুটে মহড়ায় শামীম ওসমানের বিশ্বস্ত দুই নৌকার চেয়ারম্যান!    ♦     সিদ্ধিরগঞ্জে একই মঞ্চে বিএনপি ও আ’লীগ নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে সমালোচনার ঝড়    ♦     আড়াইহাজারে জামায়াতের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত    ♦     দেশে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে-তারেক রহমান    ♦     আইসিইউ থেকে এইচডিইউতে সাবিনা ইয়াসমিন    ♦    

বিতর্কিত কর্মকাÐে গিয়াস বলয়ের পতন!

ডান্ডিবার্তা | ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৮:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দীনের অনুগামী নেতাকর্মীদের দখলবাজি, চাঁদাবাজি, ঝুট সন্ত্রাসী, সংঘর্ষ, নিরীহ মানুষকে হুমকি ধমকি, অহংকার, দাম্ভিকতায় পতন ঘটেছে বলে মনে করছেন গিয়াস বিরোধী নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, গত ৫ আগস্টের পর জালিম রুপে আভির্ভুত হয়েছিল গিয়াস বলয়ের লোকজন। যেখানে গিয়াসের সন্তানদের বিরুদ্ধেও দখলবাজি চাঁদাবাজির ব্যাপক অভিযোগের কারনে তাদের অধঃপতন ঘটে। বিএনপির তদন্ত কমিটির তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বাপ পুতের পতন ঘটেছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই। নির্বাচনী দৌড়ে গিয়াসের যাত্রা এখানেই শেষ। জানাগেছে, গিয়াস উদ্দীনের নেতৃত্বাধীন জেলা বিএনপির কমিটি গত ২৪ ডিসেম্বর বিলুপ্ত ঘোষণা করে দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। কেন্দ্রীয় বিএনপি জানায়, জেলা বিএনপির বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশে তাদের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এতটাই অপকর্মে জড়িত ছিল যে, জেলা বিএনপিকে নেতৃত্বশূণ্য রেখেই তাদের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে দেয় বিএনপি। ১ জানুয়ারী গিয়াসের ছেলে কাউসার রিফাতের জেলা কৃষকদলের কমিটিও বিলুপ্ত করে দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। ওই কমিটিতে রিফাত সদস্য সচিব ছিলেন। ২৯ জানুয়ারী রিফাতের দেয়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষকদলের কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। শুধু তাই নয়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষক দল এখন থেকে মহানগর কৃষকদলের আওতায় থাকবে বলেও জানায় কেন্দ্রীয় কমিটি। ঝুট ব্যবসা দখলবাজি নিয়ে রিফাতের পক্ষে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষকদলের সভাপতি তৈয়ম হোসেব বাদী হয়ে সেপ্টেম্বর মাসে সাংবাদিক শহিদুল্লাহ রাসেল, মহানগর মহিলা দলের সদস্য সচিব আয়েশা আক্তার দিনা, মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবুকে আসামী করে কোর্টে মামলা করে দেয়। দাম্ভিকতার এতটাই বেপরোয়া ছিল যে, খোদ গিয়াসউদ্দীন গত ৪ নভেম্বর ফতুল্লায় বিএনপির এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে লিখলে সাংবাদিকদের বাপ ডাকিয়ে দেয়া হবে।’ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবকে সোজা হয়ে যাওয়ার হুংকার দেন তিনি। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে তখন কঠোর সমালোচনাও হয়। যদিও তিনি নিজেই সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার এলাকার বদু মিয়াকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় গ্রেপ্তার করিয়ে তাকে জেলে ভরে তার ৩৫ বিঘা পুকুর দখল করে সেখানে বালু ভরাট করে মার্কেট করার উদ্যোগ নিয়েছে গিয়াস নিজেই। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর এক বাসের ড্রাইভারের সাথে কথা কাটাকাটি হওয়ার জের ধরে বাস ভাংচুর ও ড্রাইভারকে মারধর করেছিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গিয়াসপন্থী ইকবাল হোসেন। ওইদিন এক সাংবাদিক প্রতিবাদ করায় সেই সাংবাদিককেও লাঞ্ছিত করা হয়। ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে ইকবালকে দল থেকে বহিস্কার করে দেয় বিএনপি। গত ৭ সেপ্টেম্বর গিয়াসপন্থী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন ও তার দলবল নিয়ে সানারপাড় এলাকার ‍রুমা আক্তারের ৩০ শতাংশের বাড়ি দখল করতে যান। ৮০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে বাড়ি ছেড়ে দিতে হুমকি ধমকি ও ৫জনকে পিটিয়ে আহত করা হয় রুমা আক্তারের পরিবারের লোকজনকে। এ নিয়ে থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। ৬ সেপ্টেম্বর নাসিকের ৩নং ওয়ার্ডের সানারপাড় এলাকাবাসী আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে ওই এলাকায় মানববন্ধন করে। ৬ সেপ্টেম্বর নয়াআটি মুক্তিনগর এলাকার আছমা বেগমের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর লুটপাট ও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আকবর হোসেন। এ ঘটনায় আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন আছমা আক্তার। ৩ নভেম্বর আকবর হোসেনকে পিটিয়ে আহত করে দেয় স্থানীয়রা। গত ৬ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ নতুন কোর্ট সংলগ্ন এলাকার ফতুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কার্যালয় দখল করে বিএনপির কার্যালয় বানায় গিয়াসপন্থী ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভুঁইয়া ও তার সাঙ্গপাঙ্গ পলাশ ও আলমগীর হোসেন। ২৫ আগস্ট বারী ভুঁইয়ার নির্দেশে বিসিকের ফকির গ্রæপের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে সেখানে মহড়া দিতে যান এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, বিএনপি নেতা মইনুল হোসেন রতন, মহিলা দল নেত্রী রোজিনা মেম্বার, জসু প্রধান, মিজানুর রহমান। ফকির গ্রæপের সকল গার্মেন্টস থেকে ঝুট নামাচ্ছেন তারা। এখান থেকে মাসোহারা খাচ্ছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বারী ভুঁইয়া ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব টিপু। ১১ সেপ্টেম্বর ফতুল্লার বটতলা এলাকায় ঝুট ব্যবসা দখলে নিতে আব্দুল বারী ভুঁইয়ার নির্দেশে থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহŸায়ক জাকির হোসেন রবিনের মিছিলে হামলা চালায় পলাশ ও আলমগীর গংরা। সেদিন দখলবাজি ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মিছিল করায় জাকির হোসেন রবিন রক্তাক্ত জখম হয়। সেদিন ২০ জন নেতাকর্মী আহত হোন। ২৪ ডিসেম্বর শিবু মার্কেট এলাকায় শিক গার্মেন্টসের ঝুট নামানো নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় বারী ভুঁইয়ার লোকজন। দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়। ৮ সেপ্টেম্বর নাসিকের ৭নং ওয়ার্ডে গিয়াসপন্থী থানা বিএনপির সদস্য শামীম ঢালী ও তৎকালীন মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগরের বাহিনীর সঙ্গে ফুটপাত দখল, ইপিজেডের ঝুট দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ১০ সেপ্টেম্বর দুই গ্রæপ আবার পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করে একে অপরকে দোষারোপ করে। ১৭ সেপ্টেম্বর মহানগর ছাত্রদলের সকল কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ২৯ আগস্ট ফতুল্লার বিসিকে গিয়াসপন্থী ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ওরফে চাচীর জামাই রাসেল মাহামুদ ও বিসিক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে ঝুট নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ৫ আগস্টের পরই মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহŸায়ক আনোয়ার হোসেন আনু হত্যা মামলার আসামী হোন রাসেল মাহামুদ। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাসেল দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছেন। নিহত আনু রাসেল মাহামুদের চাচা। চাচা আনুর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে নেয় রাসেল। এদিকে ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জ কোর্টপাড়ায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন গিয়াসের নাম ভাঙ্গিয়ে আব্দুল বারী ভুঁইয়া ও কাউসার আলম চৌধুরী টুটুল নামে দুই আইনজীবী। প্রকাশ্যে যাকে তাকে হুমকি ধমকি গালিগালাজ করেছেন বারী ও টুটুল। আওয়ামীলীগের অনেক আইনজীবীকে হুমকি ধমকি ও গালিগালাজ সহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বারী ভুঁইয়া ও টুটুল চৌধুরী। তাদের হুমকি ধমকি ও গালিগালাজ এবং মারধর থেকে রক্ষা পায়নি আওয়ামীলীগের নারী আইনজীবীরাও। লোকলজ্জার ভয়ে আওয়ামীলীগের আইনজীবীরা তাদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েও চুপসে রয়েছেন। ফেসবুকে পোস্ট লিখে লিখে হুমকি ধমকির ঘোষণা দিয়ে এহেন কর্মকান্ড করেছেন বারী ও টুটুল। কোর্টপাড়ায় গিয়াসের নাম ডুবিয়েছেন এই দুজন। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পূর্বে জেলার ৭টি থানা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে নিহত ও আহতের ঘটনায় মামলা হয় ৮২টি। যার মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে ছিল ৪০টি ও ফতুল্লা থানায় ছিল ২১টি মামলা। যা গিয়াসের নির্বাচনী এলাকা। কোর্ট থেকে বহু মামলা বারী ভুঁইয়া এফআইআর এর আদেশ নিয়ে দুটি থানায় মামলা রুজু করিয়েছেন বারী ভুঁইয়া। শুধু আওয়ামীলীগই নয় বারী ভুঁইয়া নিজ দলের নেতা শহিদুল ইসলাম টিটু ও রিয়াদ চৌধুরীকে টোকাই আখ্যায়িত করেছেন। যে কারনে বিএনপি নেতারা আবার বারীকে পাগল আখ্যায়িত করেছেন, যা গণমাধ্যমে ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা