ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
তোফায়েল আহমেদ এখন কেমন আছেন? রাজনীতির সেই নায়ক কী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। অন্তহীন কৌতূহল নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে রাজনীতিকরা জানার চেষ্টা করছেন। আমাদের অতিথি প্রতিবেদক এস চৌধুরী গিয়েছিলেন সরজমিন দেখতে তোফায়েল আহমেদ কেমন আছেন, কী করছেন। তার ভাষ্য, রাজনীতির এই প্রাণপুরুষ এখন ভাবলেশহীন। দিন- রাতের অধিকাংশ সময় কাটে তার বনানীর বাড়িতে। যে বাড়িটি একসময় কোলাহলে গমগম করতো। সে বাড়িটি এখন প্রায় নিষ্প্রাণ। মানুষ থাকলেও বোঝার উপায় নেই কেউ বাড়িটিতে বসবাস করছেন। যে মানুষটি এ বাড়ির প্রাণ ছিলেন, সে মানুষটিকে ঘিরে বাড়ির সবাই অহরাত্রি ব্যতিব্যস্ত থাকতেন। তার অসুস্থতা পরিবারের সবাইকে এখন প্রাণহীন করে দিয়েছে। সবার উদ্বেগ বটবৃক্ষসম সেই মানুষটিকে নিয়ে। সবাই তার আবেগ-অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে চান। দেখতে চান আগের মতো প্রাণোচ্ছল মানুষটির হাঁটাচলা, রাগ-অনুরাগ। কিন্তু সময় যেন সেদিকে যেতে রাজি নয়। বিধাতাও বোধ হয়, সে ডাক শুনছেন না। এক সময় এ বাড়িটি খুব ভোরে কোলাহলমুখর হয়ে উঠতো। গভীর রাত অব্দি মানুষের আনাগোনা ছিল সেখানে। যারা আসতেন তাদের লক্ষ্য ছিল প্রিয় নেতাকে দেখা অথবা নিজের কাজটি করিয়ে নেয়া। এক সময় সকাল-বিকাল বা রাতে পালা করে বাড়িটির নিচ তলায় বসতেন তিনি। সেখানে এক পাশে ছোট্ট স্টাডি রুম, যেখানে দেশি-বিদেশি হাজারো বই। কত্তো কি বিষয়ে লেখা বই সেসব। কখনো নিবিষ্ট মনে বই পড়তেন তিনি, কখনো বা টেলিফোনে প্রয়োজনীয় কথোপকথন সারতেন। যারা খুব ঘনিষ্ঠজন তাদের প্রায় সবাই এ কক্ষে যেতে পারতেন। পাশেই বিশাল এক ড্রয়িং রুম। সেখানে দেয়াল জুড়ে বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঐতিহাসিক নানা ছবি, মার্বেল পাথরের তৈরি বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টিনন্দন অ্যান্টিকস শোভা পাচ্ছে। এখানে দিনের প্রায় অধিকাংশ সময় নেতাকর্মী, সুহৃদসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে বসে তাদের সমস্যা-সংকট শুনতেন তিনি। প্রায় সবাই তার অকৃপণ সহযোগিতা নিয়ে আনন্দিত মনে ফিরতো। স্থানগুলো আগের মতো থাকলেও এর সঙ্গে মিতালী গড়া মানুষটি সেরকম নেই। তোফায়েল আহমেদ ইতিহাস জন্ম দিয়ে হয়ে আছেন ইতিহাসের বরপুত্র। বাঙালির মুক্তি আন্দোলন ও বাংলাদেশের জন্মসূত্রের সঙ্গে মিশে থাকবেন তিনি অনন্তকাল। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে যুক্ত থাকবেন আপন সৌকর্যে। নামের দিক থেকে তিনি স্বপ্নময়-সুন্দর-উদার। কর্মেও তার ছোঁয়া রেখেছেন বিভিন্ন সময়। কিন্তু হঠাৎ করে যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন দৈনন্দিন ব্যতিব্যস্ততা থেকে। এখন তিনি কোনো কিছু বোঝার মতো অবস্থায় নেই। প্রায় বিনষ্ট স্মৃতিশক্তি তাকে অনেকটাই অনুভূতিহীন করে দিয়েছে। আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের কেউ দেখতে এলে নির্বাক তাকিয়ে থাকেন। তোফায়েল আহমেদ তার পুরো জীবনের অধিকাংশ সময় আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। দেশের রাজনীতি ও আন্দোলন থেকে শুরু করে বিশ্বের তাবৎ রাজনীতি ও সেসব দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ছিল তার নখদর্পণে। শুধু কি ইতিহাস; বিভিন্ন দেশ ও জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি সম্পর্কেও ভালো জ্ঞান রাখতেন। খেলাধুলা, ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবন-যাপন সবকিছুতেই তার দখল ছিল। বাংলাদেশসহ বৃটিশ বা ভারত উপমহাদেশের রাজনীতির ঘটনা প্রবাহ তিনি এক পলকে তারিখ ধরে বলতে পারতেন। বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসও বলতে পারতেন অনর্গল। সে কারণে তাকে অনেকেই ‘ইতিহাসের জীবন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু আজ যেন তার কিছুই অবশিষ্ট নেই। স্মৃতিশক্তির অবনমন তাকে করে তুলেছে অসহায়। এই যে, ২০২৪-এর জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন বা চলমান অন্তর্র্বতী সরকারের কর্মকাÐ এর কোনো কিছুই তিনি আঁচ করতে পারছেন না। ভয়াবহ স্ট্রোকের কারণে শরীরের একাংশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে। এর ফলে স্মৃতিভ্রষ্টতা তাকে আড়ষ্ট করে ফেলায় তিনি চেনাজানা জগতের কিছুই ঠাওর করতে পারছেন না। বর্তমানে তার বাঁ হাত ও পা একেবারেই অবশ। চলাফেরায় অক্ষম। মাঝে-মধ্যে নিকটজনেরা বাড়ির চৌহদ্দীতে হুইলচেয়ারে বসিয়ে ঘুরিয়ে আনেন সতেজ বাতাসের সঙ্গে মেলবন্ধনের আশায়। কিন্তু তা তিনি অনুভব করতে পারেন না। পারেন না কথা বলতে। কমে গেছে খাওয়া-দাওয়াও। যার প্রভাব পড়েছে শরীরে। অনেকটাই শুকিয়ে গেছেন। অধিকাংশ সময় বিছানায় শুয়ে থাকতে হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার দিন-রাতের দুই- তৃতীয়াংশ সময়ই ঘুমিয়ে থাকেন। হাঁটতে পারেন না। শারীরিক জটিলতার কারণে প্রায়ই তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, চাইলেও চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তোফায়েল আহমেদের পরিবারের একাধিক সদস্য জানান, প্রায় তিন বছর আগে প্রথম দফায় স্ট্রোক করার পর তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঘটনা ঘটে। এরপর তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। সে সময় তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। কিছুটা ভুলোমনা হয়ে যান। এরপর ২য় দফা স্ট্রোকে আবারো মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ঘটলে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন দাপুটে এই নেতা। ফলে ২৪-এর ঘটনা প্রবাহের পর ভোলায় তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে হওয়া মামলা বা বিএফআইইউ কর্তৃক ব্যাংক হিসাব স্থগিতের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। পরিবারের কেউ এসব বিষয়ে তাকে কোনো কিছু অবহিত করেননি। স¤প্রতি তোফায়েল আহমেদের জামাতা ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্ট্রোকে আক্রান্ত তোফায়েল আহমেদ চলমান কোনো কিছুই বোঝার মতো পরিস্থিতিতে নেই। ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন ও তার স্ত্রী ডা. তসলিমা আহমেদ জামান মুন্নী (তোফায়েল আহমেদের মেয়ে) বাংলাদেশের এই অতিচেনা মানুষটির সার্বক্ষণিক দেখভাল করেন। তোফায়েল নামের আরবি অর্থ স্বপ্নময়, চিন্তামুক্ত, উদ্যমী। ইসলামিক স্কলাররা এ নামের অর্থ সুন্দর, দৃঢ়, সম্মানিত বলেও উল্লেখ করেছেন। বাংলায় আহমেদ নামের অর্থ হলো মহৎ, প্রশংসিত। সমগ্র জীবন পর্যালোচনা করলে এর সবগুলো অর্থই খুঁজে পাওয়া যাবে তোফায়েল আহমেদের ক্ষেত্রে। ’৬৯-এর গণ-আন্দোলনের অন্যতম নাম তোফায়েল আহমেদের সেই কোঁকড়ানো ঝাঁকড়া চুলের কথা আজও অনেকের মন ছুঁয়ে যায়। তার সেই পেটানো শরীরের ছন্দবদ্ধ হাঁটা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতো। আর টানা বক্তৃতা দেয়ার গুণটি রপ্ত করতে চাইতেন সতীর্থরাসহ উত্তরসূরি রাজনীতিবিদরা। অকুতোভয় তোফায়েল আহমেদের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২২শে অক্টোবর তৎকালীন বৃটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি এবং স্বাধীন বাংলাদেশের ভোলা জেলার কোড়ালিয়া গ্রামে। তার পিতা মৌলভী আজহার আলী, মা ফাতেমা বেগম। ১৯৬০ সালে ভোলা সরকারি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ থেকে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে এমএসসি পাস করেন। ১৯৬৪ সালে ভোলা শহর নিবাসী সম্ভ্রান্ত আলহাজ মফিজুল হক তালুকদারের জ্যেষ্ঠ কন্যা আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র কন্যা তসলিমা আহমেদ জামান (মুন্নী) পেশায় চিকিৎসক। বর্তমানে ৮২ বছর বয়সী তোফায়েল আহমেদ কলেজজীবন থেকেই সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ব্রজমোহন কলেজ ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক এবং অশ্বিনী কুমার হলের সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন ১৯৬২ সালে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ১৯৬৪ সালে তৎকালীন ইকবাল হল (বর্তমানে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক, ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহ-সভাপতি এবং ১৯৬৬-৬৭ সালে ইকবাল হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি থাকাকালে চারটি ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করেন। শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ৬ দফা কর্মসূচি হুবহু ১১ দফায় অন্তর্ভুক্ত করে ’৬৯-এর মহান গণ-আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন তোফায়েল আহমেদ। সে আন্দোলনের ফলশ্রæতিতে ১৯৬৯ সালের ২২শে ফেব্রæয়ারি শেখ মুজিবসহ সব রাজবন্দিকে মুক্তি দানে বাধ্য হয় তৎকালীন পাকিস্তানি স্বৈরশাসক। ২৩শে ফেব্রæয়ারি তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভার সভাপতি হিসেবে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের উপস্থিতিতে জাতির পক্ষ থেকে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেন তিনি। সে সময় স্বৈরশাসক আইয়ুব খানকে পদত্যাগে বাধ্য করতে ছাত্র সমাজের যে অবিস্মরণীয় ভূমিকা ছিল তার মূল নেতৃত্বে ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তৎকালীন তারুণ্যের অহংকার তোফায়েল আহমেদ। ১৯৭০ সালের ২রা জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন তরুণ এই নেতা। ’৭০-এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে ভোলার দৌলত খাঁ-তজুমদ্দিন-মনপুরা আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। তখন তার বয়স মাত্র ২৭ বছর। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ‘মুজিব বাহিনী’র অঞ্চলভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চার প্রধানের একজন ছিলেন টগবগে তরুণ তোফায়েল। বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া ও পাবনা সমন্বয়ে গঠিত মুজিব বাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ওই বছরের ১০ই এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিব নগরে ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ’ ও ১৭ই এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার প্রতিষ্ঠার তিনি অন্যতম সংগঠক। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত ও বলবৎকৃত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়ায়’ তার সক্রিয় অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য। ১৯৭২ সালের ১৪ই জানুয়ারি প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় তোফায়েল আহমেদকে নিজের রাজনৈতিক সচিব হিসেবে। নিয়োগ দেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৫ সালের ২৫শে জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল ছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি নিজ জেলা ভোলা থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালের ২৫শে জানুয়ারি দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ঘোষণার পর প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় ‘রাষ্ট্রপতির বিশেষ সহকারী’ নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালে বাকশালের যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবলীগ’-এর সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাÐের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তিনি দীর্ঘ ৩৩ মাস কারাগারে ছিলেন। ১৯৭৮ সালে কুষ্টিয়া কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ১৯৭০ থেকে ২০২৪- সর্বমোট ৯ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তোফায়েল আহমেদ। ১৯৯২ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য নির্বাচিত হন এবং দীর্ঘ ১৮ বছর এই পদে ছিলেন। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকারে’ তিনি শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোলা-২ আসন থেকে বিজয়ী তোফায়েল আহমেদ জাতীয় সংসদে শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনকালীন সরকারে তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৮ ও ২০২৪ নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরে তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০২৪ সালে নির্বাচনে জিতলেও মন্ত্রিত্ব পাননি, তবে জাতীয় সংসদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান। আজীবন রাজনীতিতে নিবেদিত ও বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের রাজনীতির ব্যাঘ্রশাবক তোফায়েল আহমেদ এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সময়ে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। সে সময় তাকে সংস্কারপন্থি বলে মনে করা হতো। এক পর্যায়ে তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক ভাবনা প্রকাশ করেছিলেন। এ ছাড়া বিয়োগান্তক ১৫ই আগস্ট উপলক্ষে শেখ হাসিনা তার লেখা ‘বেদনায় ভরা দিন’-এ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাÐের খুনিদের পাশাপাশি দলের যাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন তাদের মধ্যে তোফায়েল আহমেদের নামও এসেছে। এর আগেও ওই ঘটনার জন্য তাকে ঘিরে বিতর্ক ছিল। কিন্তু সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে নিজের দক্ষতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে আলো ছড়িয়েছেন এই আজন্ম রাজনীতিক। জীবন সায়াহ্নে এই অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে সেটা বোধহয় কখনো ভাবেননি জনতা ও নেতাদের নেতা তোফায়েল আহমেদ। কিন্তু প্রকৃতির খেয়াল বা বিধাতার ইচ্ছার বাইরে যাওয়ার সাধ্য প্রাণিকুলের নেই। হয়তো এ অবস্থায় নির্বাক তাকিয়ে থাকতে থাকতে রাজনীতির এই প্রবাদ পুরুষের মনে ঘুরে বেড়ায় কবিগুরুর সেই পংক্তিমালা- ‘অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেয়, তার বক্ষে বেদনা অপার…’।
ই-
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সাথে সাথে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তার দোসররা কেউবা পালিয়েছে আবার কেউ আত্মগোপনে রয়েছে। বিগত পতিত সরকারের আমলে পেশাদার সাংবাদিকরা সব কিছু দেখলেও কোন কিছুই লিখতে পারতনা। আকাঁরে ইঙ্গিতে কোন কিছু লিখলেই সেইসব সাংবাদিকের উপর খর্গ নেমে […]
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকারের অকল্পনীয় পতন ঘটে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগের দিনও ভাবেনি তার সরকারের শুধু পতনই ঘটবে না, বরং তাকে চুপিসারে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে। আওয়ামীলীগের পতন ও শেখ হাসিনার পলায়নের পর পরই আওয়ামীলীগের তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও আত্মগোপনে চলে যায়। এর […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯