আজ শনিবার | ১ মার্চ ২০২৫ | ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১ | ২৯ শাবান ১৪৪৬ | সকাল ৮:২৯

অতীতকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে বিএনপি

ডান্ডিবার্তা | ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৯:২৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির শীর্ষ দুই নেতা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও মামুন মাহমুদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। সদ্য গঠিত জেলার কমিটিতে আহŸায়ক পদে আছেন মামুন মাহমুদ, একই কমিটিতে একমাত্র সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। অতীতে নিজেদের মাঝে বিরোধ থাকলেও আগামী দিনে দলের স্বার্থে একসাথে কাজ করে দলকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেছেন জেলা বিএনপির এই শীর্ষ দুই নেতা। গত বুধবার সিদ্ধিরগঞ্জের একটি রেস্টুরেন্টে জেলা বিএনপির নবগঠিত আহŸায়ক কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মামুন মাহমুদ, গিয়াসউদ্দিনসহ জেলার শীর্ষ পাঁচ নেতাই উপস্থিত ছিলেন। একই বৈঠকে গিয়াসউদ্দিন ও মামুন মাহমুদকে পাশাপাশি দেখার পর দুই বলয়ের নেতাকর্মীদের মাঝেই ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা গেছে। জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটি ঘোষণার পর কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে নানাবিধ সংশয় থাকলেও এই এক বৈঠকেই তা অনেকটা কেটে গেছে। পাশাপাশি বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝেও এই বৈঠক ঐক্যের বার্তাই দিচ্ছে। এর আগে ২০২২ সালে তৈমূরকে আহŸায়ক ও মামুন মাহমুদকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তৈমূর দল থেকে বহিষ্কার হলে জেলার শীর্ষ নেতা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে মামুন মাহমুদের। সেসময় জেলার বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠন নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের সাথে মামুন মাহমুদের মতপার্থক্য দেখা যায়। এর আগে থেকেই মামুন মাহমুদের সাথে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের বিরোধ চলে আসছিল। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই নেতার মাঝে বিরোধ তুঙ্গে উঠে যায়। গিয়াসউদ্দিনের অনুসারীরা সেসময় অভিযোগ আনেন গিয়াসউদ্দিনের অনুসারীদের মাইনাস করে ও আওয়ামী লীগ ঘেঁষা নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর সিদ্ধিরগঞ্জে মামুন মাহমুদের অনুসারীরা থানা বিএনপির সম্মেলন করতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এতে সমাবেশ পন্ড হয়ে যায়। ২০২২ সালে ২৫ এপ্রিল ঢাকার কস্তুরি হোটেলের সামনে মামুন মাহমুদকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এঘটনায় গিয়াসউদ্দিন বলয়ের নেতাকর্মীদের জড়িয়ে সেসময় মামলা দায়ের করেছিলেন মামুন মাহমুদ। হামলার জন্য গিয়াসউদ্দিনেও দায়ী করেছিলেন মামুন। তার সাথে একই সুরে সেসময় কথা বলতো শোনা গেছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানকে। মামলায় আসামি ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর অনুসারীও। ২০২৩ সালে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। মূলত এর পর থেকেই ব্যাকফুটে চলে যান মামুন মাহমুদ। ২০২৩ সালের শেষদিকে হরতাল ও অবরোধের কর্মসূচিতে মামুন মাহমুদের অনুসারীদের দেখা গেলেও বাকি সময়টা নিষ্ক্রিয়ই থেকেছেন মামুন মাহমুদ ও তার অনুসারীরা। ২০২৪ সালের পাঁচ আগষ্ট আওয়ামী লীগের পতনের আগে পরে পুনরায় সক্রিয় হন মামুন মাহমুদ। ২০২৪ সালের শেষে এসে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিলুপ্ত হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি। ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আহŸায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আহŸায়ক কমিটি ঘোষণা পরে একই কমিটিতে মামুন মাহমুদ ও মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে দেখে দলের নেতাকর্মীরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়েন। ভবিষ্যতে জেলা বিএনপির কমিটির কার্যকারিতা থাকবে কীনা তা নিয়েও ছিল সন্দেহ। তবে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে একসাথে বসেছেন গিয়াসউদ্দিন ও মামুন মাহমুদ। নিজেদের অতীত বিরোধকে ভুলে গিয়ে দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসাথে কাজ করবেন বলে নেতাকর্মীদের বার্তা দিয়েছেন তারা। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ১০টি ইউনিট কমিটি শিঘ্রই বিলুপ্ত করে নতুন কমিটির জন্য কাজ শুরু করা হবে বলে জানা গেছে। জেলা বিএনপির নবগঠিত আহŸায়ক কমিটির স¤প্রতি সভায় জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির শীর্ষ পাঁচ নেতা সম্মিলিত ভাবে এ সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানা গেছে। জেলা বিএনপির অধীনস্থ প্রায় সকল কমিটিগুলো ইতিমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। শিঘ্রই এসকল কমিটি বিলুপ্ত করে আহŸায়ক কমিটি ঘোষণা করবে জেলা বিএনপি। আহŸায়ক কমিটি ঘোষণার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই থানা ও পৌরসভাগুলোতে সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হবে। এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই গিয়াসউদ্দিন ও গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেসময় প্রথমে ইউনিটগুলোর আহŸায়ক কমিটি ঘোষণা এবং পরে সম্মেলনের মাধ্যমে জেলার দশটি ইউনিটে বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়েছিল। ইউনিট কমিটি গঠনের পর জাঁকজমকপূর্ণ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়। এবারও প্রথমে জেলার অধীনস্থ ইউনিটগুলোতে আহŸায়ক কমিটি গঠন ও সম্মেলন সম্পন্ন করার দিকে জোর দিচ্ছেন জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির নেতারা। ইউনিট কমিটির সম্মেলনের পর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে চলতি বছরের শেষে কিংবা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগে যেকোন মূল্যে জেলা বিএনপির সম্মেলন সম্পন্ন করতে চান জেলা বিএনপির নেতারা। জেলার সম্মেলনে আগে ও নির্বাচনী মাঠের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জেলার অধীনস্থ ইউনিট কমিটিগুলোতে সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারণ ও সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী করার দিকে মনোনিবেশ করছেন জেলার নেতারা। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে দু একদিনের মধ্যেই। দেশব্যাপী এ কার্যক্রম চললেও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি না থাকায় এখনও পুরেদমে এ কাজ শুরু করতে পারেনি বিএনপি। এদিকে নবগঠিত আহŸায়ক কমিটির প্রথম সভায়ই জেলাজুড়ে বিএনপির সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা। নারায়ণগঞ্জ জুড়ে লক্ষাধিক সদস্য সংগ্রহের টার্গেট নিয়ে বিএনপি মাঠে নামছে বলে জানা তারা। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির শীর্ষ এক নেতা জানান, শিঘ্রই জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সদস্য নবায়ন কার্যক্রম শুরু করবে বিএনপি। জেলাজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা আমাদের সদস্যদের নবায়নের আহŸান জানাবো। আমরা আশা করছি নারায়ণগঞ্জ থেকে এবার লক্ষাধিক সদস্য নবায়ন করতে পারবো আমরা।

 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা