
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে নির্যাতিত দল হিসেবে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের পক্ষে সাধারণ জনগণের একটা বড় ধরণের সহানুভূতি তৈরি হয়েছিল। তবে আওয়ামী লীগের পট পরিবর্তনের পর থেকেই সেই সহানুভূতিতে ভাটা পড়তে শুরু করেছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। অনেকেতো আবার আগেরটাই ভালো ছিল বলে মন্তব্য করতেও শুরু করে দিয়েছেন (যদিও এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বেশ কিছু কুচক্রীমহলের সদস্যও এখানে ছিল)। টাকার বিনিময়ে বা স্বার্থের কারণে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের নিজ দলে স্থান দেওয়া বা নাম ব্যবহার করতে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ারও অভিযোগ আছে। এমনকি এসব নৌকা ও লাঙ্গল মার্কা বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারী নেতারা আবার বিএনপিতে প্রবেশ করে বিএনপির প্রকৃত এবং ত্যাগী নেতা-কর্মীদেরই নাকি শায়েস্তা করছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেক বিএনপিকর্মী। যা দলীয়ভাবে বিএনপির জন্য একটি অশনী সংকেত। এক্ষুনি সতর্কতার সাথে হাল ধরতে না পারলে তা বিষ ফোঁড়ার রূপ নিবে বলে সাবধান করে দিচ্ছেন তারা। ৫ আগস্টের পর থেকেই শহরের বাস টার্মিনাল ও বিভিন্ন খেয়াঘাট দখলসহ বেশ কিছু সংস্থা ও স্থাপনা জবরদখলের অভিযোগ আসে দলটির কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগের তালিকায় রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের স্টাইলে মামলা বাণিজ্য করা, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের সাথে সখ্যতা করে তাদের বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে নেওয়ার জন্য একটি চুক্তির মাধ্যমে নিজেদের কাধে তুলে নেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। যদিও দলের বেশিরভাগ নীতিনির্ধারকগণই এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কিছু শীর্ষ পর্যায়ের নেতা আবার এসব কর্মকাÐকে একান্তই ব্যক্তিগত কর্মকাÐ বলে আখ্যা দিয়ে তাকে দলীয় কর্মকাÐ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নারাজ। আবার দলীয় অনেক নেতার মতে এ ধরণের কিছু ঘটনার সত্যতা তারাও পেয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে সংগঠন বা দল থেকে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। তবে সব কিছু মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সংগঠনগুলোকে আরও শক্তিশালী ও জনবান্ধব করার জন্য নেতৃত্বকে দুর্নীতিমুক্ত ও সংযমী করে তোলার আহবান তৃণমূল বিএনপিসহ সাধারণ সমর্থকদের। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সদ্য গঠিত নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির যুগ্ম আহŸায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব বলেন, আমাদের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা দীর্ঘ সময় ধরে স্বৈরাচার সরকারের লাঞ্চনা-বঞ্চনার শিকার হয়েছে। তাই এক ধরণের ক্ষোভ মানুষের মধ্যে কাজ করছে। সেই ক্ষোভটাকে পূজি করে সুবিধাবাদী কিছু মানুষ কিছু কর্মকাÐ যে করে নাই এটা বলা যাবে না। যেটা দলের বিরুদ্ধেও আসে, তারপরও মানুষ ব্যক্তির দায় বা অপরাধগুলো প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে কিন্তু দলের উপরই পড়ে। তবে ব্যক্তিগতভাবে কেউ অন্যায় করলে সেটা কিন্তু তার, দলের না। দেখার বিষয় হলো কেউ অন্যায় করার পরার দল তাকে স্বীকৃতি দেয় কি না। দল শাস্তি দেয়, নাকি সমর্থন করে ! দল সেসব অপরাধীকে শাস্তি দিলে বুঝা যাবে দল এসব কর্মকাÐকে সমর্থন দেয় না। যারা এধরণের কর্মকাÐ করছে বা করবে উপযুক্ত প্রমাণ পেলে তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ধরণের অভিযোগে দলের পক্ষ হতে সারা বাংলাদেশে প্রায় ১ হাজার নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাদেরকে শুধু বহিস্কার কিংবা সাংগঠনিক ব্যবস্থাই নয়, বরং এর পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া আছে। দল থেকে এ বিষয়ে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া আছে। তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নেতা (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান) কর্মীদের কর্মকাÐের বিষয়ে অবগত আছেন। ওনি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারেই বিষয়টিকে নিয়েছেন। ওনি বারেবারে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে, কোন ব্যক্তি, নেতা বা কর্মীর কোন কাজে যদি দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সাধারণ মানুষ সুন্দরভাবে গ্রহণ না করে তাহলে তাকে দলে রাখা যাবে না। ওনার মূল কথাই হলো, সবার আগে দেশ এবং দেশের মানুষ, তাই বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গলের স্বার্থে, তাদের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতেই বিএনপির রাজনীতি। তাই এখানে যদি বিএনপির কর্মকাÐের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের আশার প্রতিফলন না ঘটে, কারও জন্য ব্যঘাত সৃষ্টি হয় তাহলে তাকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে এবং তাকে শাস্তি পেতেই হবে। সে দল করতে পারবে না, সেটা গ্যারান্টি।
এই বিষয়ে সদ্য গঠিত জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির আহŸায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ যুগের চিন্তাকে বলেন, জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে কিনা জানি না, তবে দল সতর্ক এব সজাগ অবস্থায় আছে। আমাদের নেতা এই বিষয়ে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করেছেন। দলের ভাবমুতি যেন কোনভাবেই নষ্ট না হয়, সেদিকে ওনিও সজাগ আছেন আমরাও সজাগ আছি। যারা দলের ভাবমুর্তি নষ্ট করার সঙ্গে জড়িত, দল তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। কাজেই দলের ভাবমুর্তি কেউ নষ্ট করতে পারবে না। কেননা দলের ভাবমুর্তি আমাদের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি। আমরা সব সময়ই ব্যক্তির চেয়ে দলকে বড় মনে করি। ব্যক্তির দায় দল নেয়নি, নিবেও না। তাই ভাবমুর্তি নষ্ট হওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি কেউ ভাবমুর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা করে, তা থেকে দলকে পুনরুদ্ধারের জন্য দল ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এরই মধ্যে এসবের বিরুদ্ধে দল সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সাথে সাথে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তার দোসররা কেউবা পালিয়েছে আবার কেউ আত্মগোপনে রয়েছে। বিগত পতিত সরকারের আমলে পেশাদার সাংবাদিকরা সব কিছু দেখলেও কোন কিছুই লিখতে পারতনা। আকাঁরে ইঙ্গিতে কোন কিছু লিখলেই সেইসব সাংবাদিকের উপর খর্গ নেমে […]
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকারের অকল্পনীয় পতন ঘটে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগের দিনও ভাবেনি তার সরকারের শুধু পতনই ঘটবে না, বরং তাকে চুপিসারে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে। আওয়ামীলীগের পতন ও শেখ হাসিনার পলায়নের পর পরই আওয়ামীলীগের তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও আত্মগোপনে চলে যায়। এর […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯